Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

শো-কজ় পুরোহিতকে, মন্দিরে তৃতীয় মহিলা

অশান্তির মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ মন্দিরে পা দেন ৪৬ বছরের শশিকলা। ফলে কেরলে আর এক প্রস্ত চড়েছে উত্তেজনার পারদ।

শ্রীলঙ্কাবাসী শশীকলা। বিন্দু, কনকদুর্গার পর তিনি এ বার শবরীমালার মন্দিরে প্রবেশ করলেন।

শ্রীলঙ্কাবাসী শশীকলা। বিন্দু, কনকদুর্গার পর তিনি এ বার শবরীমালার মন্দিরে প্রবেশ করলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫১
Share: Save:

পথ দেখিয়েছিলেন কনকদুর্গা এবং বিন্দু। এ বার ৫০ বছরের নীচে তৃতীয় মহিলা হিসেবে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করলেন শ্রীলঙ্কার শশিকলা। কনকদুর্গা এবং বিন্দুর মন্দিরে প্রবেশ করার প্রতিবাদে বুধ ও বৃহস্পতিবার গোটা কেরল জুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন-বন্‌ধ চালিয়েছে বিজেপি, আরএসএস-সহ বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সেই অশান্তির মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ মন্দিরে পা দেন ৪৬ বছরের শশিকলা। ফলে কেরলে আর এক প্রস্ত চড়েছে উত্তেজনার পারদ।

তুলকালাম বিতর্কের মাঝেই শবরীমালা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত (তন্ত্রী) কান্ডারারু রাজীবারুকে শো-কজ়ের চিঠি পাঠিয়েছে ত্রাভাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ড (টিডিবি)। বিন্দু ও দুর্গার প্রবেশের পরে ‘শুদ্ধিক্রিয়া’র জন্য মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের জন্যই পুরোহিতের ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। মন্দির পরিচালনার ভার টিডিবি-র হাতেই। দেবস্বম কমিশনার এন বাসু বুধবার ভোরের ঘটনা নিয়ে টিডিবি-কে রিপোর্ট দেওয়ার পরেই শো-কজ়ের সিদ্ধান্ত। টিডিবি-র সভাপতি এ পদ্মকুমারের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট মহিলা ভক্তদের দর্শনের জন্য মন্দিরের দরজা খুলে দিতে বলেছিল। তার পরেও দুই মহিলার প্রবেশের জন্য মন্দির ‘শুদ্ধ’ করার প্রক্রিয়া ও দরজা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আদালত অবমাননারই সামিল। প্রধান পুরোহিত ওই কাজ করার আগে বোর্ডকে কিছু জানাননি বলেও সভাপতির বক্তব্য। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন আগের দিনই বলেছিলেন, আদালতের রায় পছন্দ না হলে পুরোহিত সরে দাঁড়াতে পারেন।

শশিকলার আয়াপ্পা দর্শন নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল এ দিন। শশিকলা দাবি করেন, তিনি মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেননি। মন্দিরের মূল ফটকের আগে ‘পবিত্র ১৮ ধাপ’ তাঁকে পেরোতে দেওয়া হয়নি বলে তাঁর দাবি। শশিকলা এ-ও দাবি করেছিলেন, আয়াপ্পা দর্শনের জন্য যা কিছু নিয়ম পালন করা প্রয়োজন, সবই তিনি করেছেন। উপবাস রেখেছেন ৪৮ দিন। নিজের সঙ্গে থাকা মেডিক্যাল সার্টিফিকেটও তিনি পুলিশকে দেখিয়েছিলেন। তিনি জানান, তাঁর জরায়ু বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে তিনি আর ঋতুযোগ্য নন। তবুও তাঁকে শবরীমালায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে গোড়ায় দাবি করেন শশিকলা।

কিন্তু কেরল পুলিশ জানায়, মন্দিরে ঢুকেছেন শশিকলা। নিজেদের দাবির সমর্থনে একটি সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করেছে তারা। সেখানে দেখা গিয়েছে, শবরীমালায় ঢুকছেন এক মহিলা। মাথায় পুজোর সামগ্রী। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রেও বলা হয়েছে, আয়াপ্পা দর্শন করেছেন শশিকলা।

তা হলে কেন শশিকলা মন্দিরে প্রবেশ করার কথা অস্বীকার করছেন? কেরল জুড়ে ছড়িয়ে পড়া হিংসার জন্য শ্রীলঙ্কার ওই মহিলা ভয় পেয়েছেন বলেই মনে করছেন অনেকে। তাঁদের ধারণা, নিরাপত্তার কথা ভেবেই শবরীমালায় প্রবেশের কথা শশিকলা স্বীকার করছেন না। অন্য দিকে, চলতি বিক্ষোভের জেরে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। এমনিতেই ‘জ়েড প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান মুখ্যমন্ত্রী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE