বার্ধক্য, পরিশ্রম, সাংসারিক চাপ, ইত্যাদির কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বক তার ঔজ্জ্বল্য হারাতে থাকে। ক্লান্তির ছাপ পড়ে চেহারা। বয়সের সঙ্গে ত্বকের স্বাস্থ্যের ক্ষয় অতি সাধারণ একটি ঘটনা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এই প্রবণতা কেবল আর বয়স্কদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। খুব কম বয়স থেকেই ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ পড়ে যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি। বলিরেখাও দেখা দিচ্ছে অল্প বয়সে। এই বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন দিল্লির পুষ্টিবিদ শিল্পা অরোরা।
জীবনের উজ্জ্বলতম সময়, অর্থাৎ যৌবন থেকেই ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলছে ত্বক। তার মূল কারণ ত্বকের কোলাজেন সৃষ্টিতে বাধা পড়ছে। কোলাজেন নামক প্রোটিনই ত্বকের ঔজ্জ্বল্যের জন্য দায়ী। বয়স বৃদ্ধির সময় কোলাজেন উৎপন্ন হওয়ার পরিমাণ এমনিতেই কমতে শুরু করে। তাই ত্বকে ক্লান্তির ছাপ পড়ে যায়। কিন্তু কম বয়সেও যখন কোলাজেনের মাত্রা কমে যায়, তখন বুঝতে হবে, বাহ্যিক কোনও কারণ এই প্রোটিনের সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে বাধা দিচ্ছে।

কোলাজেন বৃদ্ধির জন্য খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনে বদল আনতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।
কোলাজেন সৃষ্টি বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণ
মূল তিনটি কারণে কোলাজেনের মাত্রা কমে যেতে পারে। ধূমপান, চিনি বা মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা এবং সূর্যালোক। অর্থাৎ জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে কোলাজেন উৎপাদন। খুব বেশি পরিমাণে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির সংস্পর্শে এলে ত্বকের তন্তুগুলি ছিঁড়ে যেতে থাকে। এ ছাড়া সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা রাসায়নিক পদার্থগুলির প্রভাবে মুখের ত্বক খুব তাড়াতাড়ি নরম হয়ে ঝুলে যেতে থাকে। চিনির কারণেও ত্বকের তন্তুগুলির অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে।
আরও পড়ুন:
প্রাকৃতিক উপায়ে কোলাজেন বৃদ্ধি
কোলাজেন বৃদ্ধির জন্য খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনে বদল আনতে হবে। খাবারের মধ্যে সেই সব বেশি করে খেতে হবে, যেগুলি শরীরে অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরিতে সাহায্য করতে পারে। এর ফলেই কোলাজেনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মুরগির মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত পণ্য, ইত্যাদি বেশি করে খেতে হবে। তা ছাড়া ভিটামিন সি ও জ়িঙ্ক কোলাজেন তৈরি করতে পারে। তাই বিভিন্ন সাইট্রাস যুক্ত ফল, শাকসব্জি খেতে হবে। পাশাপাশি মটরশুঁটি, বাদাম, গোটা শস্যেও উপকার পাওয়া যাবে। তবে কোন ধরনের খাবার আপনার জন্য উপযুক্ত, তার জন্য পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া দরকার।