বাংলা নববর্ষের উদ্যাপনের প্রস্তুতিতে দম লাগে দিন কয়েক আগে থেকে। যখন হাতে আর একটি সপ্তাহও নেই, অথচ আচমকাই সকলে নববর্ষের আড্ডা-খাওয়াদাওয়ার প্ল্যান ছকতে শুরু করেছে। দুপুরের খাওয়া বাড়িতে হবে, না রেস্তরাঁয়— এই আলোচনায় জেরবার হয়ে যদি বাড়িতেই গুছিয়ে খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে মেনু সাজিয়ে ফেলুন এখন থেকেই। বাংলার নববর্ষের উদ্যাপন যখন বাঙালি খাবার তো থাকবেই। কিন্তু সেটি দৈনন্দিন হলে চলবে না। বাড়ির সদস্য বা নববর্ষ উপলক্ষে বাড়িতে আমন্ত্রিত অতিথিদের চমকে দিতে মেনুতে থাক কিছু অন্য রকম মোচড়। এমন কিছু যা কিছুটা চেনা আর কিছুটা অচেনা। তেমনই এক খাবার এঁচোড়ের আম কাসুন্দি।
পয়লা বৈশাখের মধ্যাহ্নভোজ যখন, ভাত তো থাকবেই। তার সঙ্গে প্রথম পাতে কিছু নিরামিষ তরকারিও দরকার। ডাল আর ভাজার পরে যে তরকারিটি মাছ-মাংসের বাটির দিকে ধীরে ধীরে আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। জমাটি খাওয়াদাওয়ায় সাধারণ এই ভূমিকা পালন করার দায়িত্ব থাকে পটল, ফুলকপি কিংবা এঁচোড়ের উপরেই। কেউ রাঁধেন ফুলকপির রোস্ট, কেউ এঁচোড়ের কালিয়া বা এক ধাপ এগিয়ে এঁচোড় চিংড়ি বা পটলের দোলমাও বানান কেউ কেউ। কিন্তু সে সবই চেনা পদ। আপনার পয়লা বৈশাখের চেনা-অচেনা স্বাদের থালায় বরং এঁচোড়ে থাক গ্রীষ্মের কাঁচা আম এবং বাঙালির পছন্দের কাসুন্দির ছোঁয়া। যা খেয়ে অবাকই হবেন অতিথিরা। কারণ এমন রান্না নিশ্চিত ভাবেই তাঁরা আগে কখনও খাননি।

কী ভাবে বানাবেন?
এঁচোড়ের আম কাসুন্দির রেসিপিতে আলুর দরকার পড়ে না। তবে চাইলে আপনি আলু দিতে পারেন। নীচের রেসিপিটি আলু ছাড়াই লেখা হয়েছে।
উপকরণ:
৬০০ গ্রাম এঁচোড় খোসা ছাড়িয়ে মাঝারি মাপের টুকরোয় কেটে নেওয়া
১ টি মাঝারি মাপের পেঁয়াজ সরু করে কুচোনো
১ টি মাঝারি পেঁয়াজ বেটে অথবা কুরে নেওয়া
৮-১০ কোয়া রসুনবাটা
দেড় টেবিল চামচ আদাবাটা
১টি মাঝারি মাপের কাঁচা আম কোরানো
৪টি কাঁচালঙ্কা চেরা
১ টেবিল চামচ ধনেপাতা
১ চা চামচ গোটা গোলমরিচ
দেড় টেবিল চামচ জিরে বাটা
১ চা-চামচ গোটা জিরে
৪-৫ টি শুকনো লঙ্কা
৪-৫ টেবিল চামচ সর্ষের তেল
৪-৫ টেবিল চামচ কাসুন্দি
স্বাদমতো নুন

প্রণালী:
কড়াইয়ে জল দিয়ে নুন এবং হলুদ দিয়ে এঁচোড় ভাপিয়ে নিন। একটি পাত্রে ঈষদুষ্ণ গরম জলে ৩টি শুকনো লঙ্কা ভিজিয়ে রাখুন। মিক্সিতে ভেজানো শুকনো লঙ্কা এবং গোলমরিচ একসঙ্গে বেটে নিন।
এ বার কড়াইয়ে সর্ষের তেল দিয়ে তাতে একটি শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে কুচোনো পেঁয়াজ ভাজতে দিন। পেঁয়াজ ভাজা হলে তাতে দিয়ে দিন আদা, রসুন এবং পেঁয়াজবাটা। রসুনের কাঁচা গন্ধ চলে গেলে দিয়ে গোলমরিচ ও শুকনোলঙ্কা বাটা এবং জিরেবাটা। সামান্য নুন দিয়ে মশলা ভাল ভাবে কষিয়ে নিন। নুন দেওয়ার সময়ে খেয়াল রাখবেন, কাসুন্দিতেও নুন থাকবে। তাই সেই বুঝে নুন দেবেন।
মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে ওর মধ্যে দিয়ে দিন কাঁচালঙ্কা চেরা, নাড়াচাড়া করে দিয়ে দিন কেটে রাখা এঁচোড়ের টুকরো। ভাল করে কষিয়ে নিয়ে জল দিয়ে ফুটতে দিন।
মিনিট পাঁচেক পরে কোরানো আম এবং কাসুন্দি দিয়ে নাড়াচাড়া করে আবার রান্না হতে দিন। এই পর্যায়ে নুন পরখ করে নিতে পারেন।
এঁচোড় ভাল ভাবে সেদ্ধ হয়ে এলে উপরে সামান্য ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।
এঁচোড়ের আম কাসুন্দিতে কিন্তু এঁচোড়ের অন্য তরকারির মতো ঝোল থাকবে না। বরং একটু মাখামাখা দেখতে হবে।
- পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালির বাঙালিত্বের উদ্যাপন। সাদা-লাল শাড়ির ফ্যাশন, বাঙালি খাওয়া-দাওয়া, হালখাতা— এই সবই জাগিয়ে তোলে বাঙালির স্মৃতিমেদুরতাকে।
- বছর ঘুরে আবার আসছে বাংলার নববর্ষ। ১৪৩২ আরও অনেক নতুন কিছু নিয়ে আসবে। নববর্ষকে কী ভাবে স্বাগত জানাবে বাঙালি? তারই হাল হদিস।
-
মননে সাহিত্য-শিল্পের বাঙালিয়ানা, বল্লভপুরের রূপকথা শুনবে ক্যাম্পাস শহর
-
কেউ শাড়ি, কেউ সালোয়ার, সাবেক ও সাম্প্রতিকের যুগলবন্দি নববর্ষে, কেমন সাজলেন টলিসুন্দরীরা
-
কাঁধে এক কাঁদি কলা, চুলে হলুদ-বেগনি ফুল, সমুদ্রতটে আঁচল উড়িয়ে নতুন বছরকে স্বাগত স্বস্তিকার
-
বিশেষ দিনে ভিড় করে স্মৃতিমেদুরতা, বর্তমান প্রজন্মও অতীতে চোখ রাখে, নববর্ষে মনে করালেন সোহম
-
দিনের শেষে মেকআপ তুলে ফেলাও জরুরি, ফেসওয়াশ ফুরিয়ে গেলে কী করবেন?