Advertisement
E-Paper

পরনিন্দা-পরচর্চায় নেশা? এই বদভ্যাস কিন্তু ক্ষতি করছে আপনারই! বন্ধ করবেন কী ভাবে?

হালকা চালে কখনও-সখনও পরের বিষয়ে কথা বলা ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু নিন্দা বা চর্চার অভ্যাস যদি প্রাত্যহিক হয়? তা হলে সেটি ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে। নিজের জন্যেও, অন্যের জন্যেও।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:২১
Share
Save

পরনিন্দা-পরচর্চায় প্রাণের আরাম। তাই না? অফিসে ফিসফিসানি অথবা বন্ধুদের মধ্যে হইহুল্লোড়, যে কোনও পরিস্থিতিতেই অনুপস্থিত ব্যক্তিকে নিয়ে দু’-চার কথা না বললে দিন সম্পূর্ণ হয় না। ঠাট্টা, মশকরার মোড়কে হোক অথবা রাগের মাধ্যমে, অনেক ক্ষেত্রেই কিন্তু মন হালকা লাগে নিন্দামন্দের পর। সুতরাং ‘পরনিন্দা বেশ উপকারী’!

তাই কি?

ভেবে দেখুন তো, কোনও এক জন ব্যক্তির বিষয়ে গোপনে কথা বলার সময়ে আপনার মনে এ রকম কিছু চলে কি?

১. নিন্দা করলে অন্য বন্ধু বা সহকর্মীর কাছে আমার মূল্য বাড়বে। আমি সকলের মধ্যমণি হয়ে উঠব।

২. অন্যের বিষয়ে গোপন খবর দিতে পারলে, বাকিরা আমায় ভরসা করবে।

৩. নিন্দামন্দ করলে বাকিদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক দৃঢ় হবে।

৪. আমার রাগ হচ্ছে, তাই নিন্দা করে বাকিদের সামনেও তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে হবে।

অনেক সময়ে এমন হতেই পারে, কোনও বন্ধু বা সহপাঠী আপনার সঙ্গে খারাপ কিছু করেছেন, তাই সেটি বাকিদের কাছে বলে আপনি শান্তি পাচ্ছেন। কিন্তু তা ছাড়া যদি বাকি সম্ভাবনার সঙ্গে আপনার মনোভাব মিলে যায়, তা হলে কিন্তু সেটি আর স্বাস্থ্যকর নয়। হালকা চালে কখনও-সখনও পরের বিষয়ে কথা বলা ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু নিন্দা বা চর্চার অভ্যাস যদি প্রাত্যহিক হয়, তা হলে সেটি ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে। নিজের জন্যেও, অন্যের জন্যেও। আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করলেন কলকাতার মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়।

নিন্দার অভ্যাস কেন ক্ষতিকারক?

কারও অনুপস্থিতিতে এমন কিছু বলছেন কি, যাতে সেই ব্যক্তির ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে? এই অভ্যাস কিন্তু আদপেই ভাল নয়। নিয়মিত এক ঘটনা ঘটতে থাকলে, উল্টে আপনার নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে বাকি বন্ধুদের বা সহকর্মীদের কাছে। তা ছাড়া সম্পর্কগুলির মধ্যে ভরসা কমে যেতে থাকবে। মনোবিদ বলছেন, ‘‘বিশ্বাস ভেঙে গেলে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তা ছাড়া যে ব্যক্তির সম্পর্কে কথা বলা হচ্ছে, সেই ব্যক্তির বিষয়ে অন্যদের মনে খারাপ ধারণা তৈরি হয়ে যায়। ফলে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার দায় কিন্তু সেই ব্যক্তির, যিনি নিন্দা করছেন। তবে শুধু সম্পর্কের ক্ষেত্রে বা অন্যের ক্ষেত্রে নয়, নিজের জন্যও এই অভ্যাস অত্যন্ত ক্ষতিকারক। যিনি নিন্দা করতে ভালবাসেন, তাঁর মানসিক প্রশান্তির সুযোগই নেই। সর্ব ক্ষণের চিন্তা, যদি তাঁর বলা কথাগুলি অন্য কেউ জেনে যায়! ফলে সারা ক্ষণ উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটে তাঁদের। এর থেকে অ্যাংজ়াইটির সমস্যা তৈরি হতে পারে। তা ছাড়া তাঁর সম্মানহানি হওয়ার ঝুঁকি থাকে অনেক ক্ষেত্রেই।’’

কী ভাবে এই স্বভাব দূর করা যায়?

৫টি উপায়ে এই অভ্যাস কাটিয়ে বেরোনোর পরামর্শ দিচ্ছেন মনোবিদ।

১. ধারণা বা অনুমানের ভিত্তিতে কথা না বলে সত্যিটা জেনে নেওয়া উচিত। সত্যি জানার পর আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু অনুমানের ভিত্তিতে নিন্দা করা উচিত নয়।

২. অন্যের বিষয়ে কোনও কথা বলার সময়ে নিজেকে তাঁর জায়গায় বসিয়ে দেখবেন। প্রথমেই খারাপ না ভেবে, সমব্যথী হওয়ার চেষ্টা করুন।

৩. নিন্দা করার আগের মুহূর্তে মনে করবেন, যাঁকে নিয়ে বলছেন, সেই ব্যক্তি সামনেই আছেন। এর ফলে যা খুশি তা-ই বলা থেকে বিরত থাকবেন।

৪. নিন্দা করার সময়ে চেষ্টা করবেন, যাতে খুব ব্যক্তিগত কথা সবাইকে না বলেন। নয়তো আপনাকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করবে সকলে।

৫. সবশেষে বলা ভাল, কারও অনুপস্থিতিতে তাঁর ব্যাপারে প্রশংসা ছাড়া আর কিছু না বলাই উচিত।

Gossiping Nature quit gossiping Bad Habits better lifestyle tips

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}