Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Lifestyle Section

করোনা থেকে বাঁচতে শুধু নিজের সুরক্ষাই নয়, নিশ্চিত করতে হবে আপনার বাড়ির পরিচ্ছন্নতাও

সারা দিনে একই জামা পড়ে থাকলে সেখান থেকেই সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়। তা ছাড়া বাড়িতেও বার বার দু’টি হাত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে ফেলা উচিত। না হলে দরজা, জানলা, টেবিল, চেয়ার ছোঁয়ার পর সেখান থেকেও গৃহবন্দি হওয়া সত্ত্বেও বাড়ির লোকজন সংক্রমিত হতে পারেন।

এই ভাবে বাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ছবি শাটারস্টকের সৌজন্যে।

এই ভাবে বাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ছবি শাটারস্টকের সৌজন্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ১৪:১৯
Share: Save:

করোনাভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ রুখতে ভারতে রাজ্যে রাজ্যে চলছে লকডাউন। চলবে আরও বেশ কিছু দিন। এর ফলে, বাধ্য হয়েই দিনভর, রাতভর আমাদের ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের কতটা পরিষ্কা-পরিচ্ছন্ন রাখছি? করোনার দ্রুত সংক্রমণ রুখতে কি আমরা আমাদের বাড়িকে নিয়মিত ভাবে পরিচ্ছন্ন রাখছি? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে গৃহবন্দি থেকে আমাদের নিজেদের ও গোটা বাড়িকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাটা একেবারেই বাধ্যতামূলক। এতে যদি কোনও ভুলভ্রান্তি থেকে যায়, তা হলে গৃহবন্দি থেকেও আমরা নিজেদের আর আমাদের বাড়িকে করোনা-সহ নানা ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে কিন্তু বাঁচাতে পারব না।

নিজেকে ও বাড়িকে পরিচ্ছন্ন রাখতে কী কী করতে হবে?

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস জানাচ্ছেন, বাড়িতে থাকলেও দিনে অন্তত বার দু’য়েক জামাকাপড় বদলাতে হবে আমাদের। কারণ, ব্যবহৃত পোশাকে সব সময়েই নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস এসে জমে। এই পরিস্থিতিতে যা খুবই বিপজ্জনক। সারা দিনে একই জামা পড়ে থাকলে সেখান থেকেই সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়। তা ছাড়া বাড়িতেও বার বার দু’টি হাত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে ফেলা উচিত। না হলে দরজা, জানলা, টেবিল, চেয়ার ছোঁয়ার পর সেখান থেকেও গৃহবন্দি হওয়া সত্ত্বেও বাড়ির লোকজন সংক্রমিত হতে পারেন।

যিনি ঘরে ঝাড়ু দিচ্ছেন, তাঁকেও পরতে হবে মাস্ক

ঘরের মেঝে বা দেওয়ালের নীচের দিকের অংশগুলি দিনে অন্তত দু’বার ভাল ভাবে ঝাড়ু দিতে হবে। তার পর ফিনাইলের মতো পদার্থ জলে মিশিয়ে সেই সব জায়গা ভাল ভাবে মুছে ফেলতে হবে। যিনি ঘর সাফাই করছেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁকে অবশ্যই মুখে মাস্ক পরে থাকতে হবে। না হলে তাঁর থেকেই ছড়াতে পারে সংক্রমণ। কারণ, ঘরের ধুলোবালিতে মিশে থাকা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ায় সবচেয়ে কাছে আসছেন তিনিই। ঘর সাফাই করার সময় হাতে গ্লাভস পরারও প্রয়োজন। আর ঘর সাফাই করার পর খুব ভাল ভাবে দু’টি হাত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, বাড়িতে যেন কোনও ভাবেই আবর্জনা না জমে থাকে। তার জন্য যাবতীয় আবর্জনা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে। যা সেখান থেকে অন্যত্র পরে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারেন সাফাইকর্মীরা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমিত সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘বাড়িতে যাতে পোকামাকড় বা মশার উপদ্রব না বেড়ে যায়, সেটাও এখন খেয়াল রাখতে হবে। তার জন্য বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ব্লিচিং পাউডার ছড়াতে হবে। কীটনাশক স্প্রে করতে হবে দিনে-রাতে বেশ কয়েক বার। মশা মারার ধূপ বা তেলের ব্যবহার করতে হবে।’’

যদিও অরিন্দমের বক্তব্য, যাঁরা ক্রনিক হাঁপানির রোগী, মশা মারার ধূপ বা তেলের ব্যবহারে তাঁদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তাই তাঁদের ঘরে মশা মারার ধূপ বা তেলের ব্যবহার না হলেই ভাল। তাঁদের মশারি টাঙিয়ে থাকা উচিত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়িতে রান্নাবান্না বা খাবার পরিবেশনের ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। হাতে গ্লাভস পরে নিলে ভাল হয়, না হলে রান্নাবান্না ও পরিবেশনের আগে দু’টি হাত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে খুব ভাল ভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।

আরও পড়ুন: করোনায় কাশ্মীরে প্রথম মৃত্যু, শ্রীনগরের হাসপাতালে মৃত ৬৫ বছরের বৃদ্ধ​

আরও পড়ুন: নেই বিদেশ সফরের ইতিহাস, রাজ্যে মিলল নতুন করোনা-আক্রান্তের খোঁজ​

যাঁদের বাড়িতে প্রচুর গাছ রয়েছে, তাঁদেরও গাছ পরিচর্যার সময় বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। হাতে পরে নিতে হবে গ্লাভস।

এসি চালাবেন না, ফ্রিজের জল খাবেন না

অরিন্দম এ-ও জানাচ্ছেন, বাড়িতে থাকলেই আমরা এয়ার কন্ডিশনার চালাই খুব। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সেটা উচিত হবে না। কারণ, এয়ার কন্ডিশনারের মধ্যে জমে থাকে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস। আর এয়ার কন্ডিশনার খুলে তার ভিতরটা কালেভদ্রে সাফাই করার সুযোগ মেলে। তাই এয়ার কন্ডিশনারের মাধ্যমে বাড়িতে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যায়। এখন না ঠান্ডা, না গরম। এই সময় সব সময় ফ্রিজের জল খেলে ঠান্ডা লাগতে পারে। সর্দি লাগতে পারে। তার থেকে হাঁচি, কাশি হতে পারে। তাই ফ্রিজের জল না খাওয়াই উচিত। আর যাঁরা বিভিন্ন রোগের জন্য নানা ধরনের ওষুধ খান, তাঁদের সেই নিয়মে কোনও ব্যাতিক্রম ঘটলে চলবে না।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE