বঙ্গ সফর সেরে বাঘিনী জ়িনাত ফিরে গিয়েছে নিজের এলাকায়। তা জানে না ‘প্রেমিক’। তার খোঁজেই হন্যে হয়ে বাংলার একাধিক জেলায় ঘুরছে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ‘প্রেমিক’ বাঘ। আর এই কারণেই রাজ্য ছাড়তে নারাজ সে! আবারও পায়ের ছাপকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়াল ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে।
এর আগে কখনও ঝাড়খণ্ড, কখনও আবার ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল পুরুষ বাঘের পায়ের ছাপ। কয়েক দিন আগে পুরুলিয়াতেও দেখা গিয়েছিল বাঘের পায়ের ছাপ। আবারও বেলপাহাড়ির ধরমপুরে এক আলু চাষের জমিতে পাওয়া গেল অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ। যাকে কেন্দ্র করে এলাকায় বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গ্রামবাসীদের অনুমান, পায়ের ছাপটি দেখে বাঘের বলেই মনে হচ্ছে। যদিও বনদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীক্ষা ছাড়া বলা যাবে না এই অজানা জন্তুর পায়ের ছাপটি আদৌ বাঘের কি না।
আরও পড়ুন:
সোমবার সকালে ধরমপুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় মুড়া চাষের কাজের জন্য আলুর ক্ষেতে গিয়েছিলেন। তাঁর চোখে পড়ে অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ। এর পরে বিষয়টি জানানো হয় বনদফতরকে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বনদফতরের শীর্ষ অধিকর্তা এসিএফ স্বর্ণদীপ্ত রক্ষিত ও বিশেষ দল। অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ গুলির মাপ নেওয়ার পাশাপাশি প্লাস্টার অফ প্যারিসের মাধ্যমে পায়ের ছাপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আধিকারিক বলেন, ‘‘পায়ের ছাপটি বাঘ, চিতা বাঘ না অন্য কোনও জন্তুর তা পরীক্ষা ছাড়া বলা যাবে না। দেখে যা মনে হচ্ছে জন্তুটি ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে গিয়েছে।’’

অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ। —নিজস্ব চিত্র।
ওড়িশার সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ থেকে বাঘিনী জ়িনাত ঝাড়খণ্ড হয়ে ঝাড়গ্রাম জেলার কটুচুয়া, কাঁকড়াঝোড়ের পথ ধরে চলে গিয়েছিল পুরুলিয়ায়। তারপর বাঁকুড়া। অবশেষে রানিবাঁধে কাছে ধরা পড়ে বাঘিনী। জ়িনাতকে নিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পরেই নতুন করে বাঘের আতঙ্ক চাউর হয় বেলপাহাড়িতে। প্রায় ১৭ দিন আগে বেলপাহাড়ির সিঙাডোবায় ছাগল চরাতে গিয়ে বাঘ দেখেছিল বলে দাবি করেছিলেন এক মহিলা। শুধু তাই নয় বাঘ একটি ছাগল খেয়ে ফেলেছিল বলেও দাবি করেন তিনি। কয়েকদিন পরে সেই বাঘটি পুরুলিয়ায় চলে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল।
প্রাণী বিশেষজ্ঞদের দাবি, স্ত্রী বাঘের মূত্রে থাকা ফরমিনের গন্ধের কারণেই পুরুষ বাঘ পৌঁছে যায় স্ত্রী বাঘের ঠিকানায়। যেহেতু জ়িনাত এই এলাকায় বেশ কিছু দিন কাটিয়েছে সেই কারণে তার খোঁজে ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছে ঝাড়খণ্ডের ওই পুরুষ বাঘটি।