চুলের ডগা ফাটা রোধ করতে পারে সিরাম। ছবি: সংগৃহীত।
তেল, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার অতীত!
ভাল চুলের গোপন সূত্র এখন লুকিয়ে রয়েছে সিরামে। চুল পড়া বন্ধ হবে, নতুন চুলও গজাবে। আবার নিষ্প্রাণ চুলে জেল্লা ফেরাবে এই ‘জাদু’ প্রসাধনীটি।
সিরাম আসলে কী?
সিরাম তেলের মতো ঘন নয়, আবার জলের মতো পাতলাও নয়। গ্লিসারিন, এসেনশিয়াল অয়েলের পাশাপাশি সিলিকনও থাকে এই প্রসাধনীটিতে, যা রুক্ষশুষ্ক চুল বশে রাখে। চুল জটমুক্ত করতেও সিরাম দারুণ কাজের। এ প্রসঙ্গে চর্মরোগ চিকিৎসক রিঙ্কি কপূর বলেন, “দূষণ তো বটেই, সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে চুলের ক্ষতি রোধ করে হেয়ার সিরাম। চুলে কায়দা করতে গিয়ে অনেক সময়েই অতিরিক্ত তাপ দিতে হয়। সিরাম কিন্তু সেই ক্ষতিও রুখে দিতে পারে।” বাজারে নানা ধরনের সিরাম কিনতে পাওয়া যায়। তবে যে কোনও প্রকারের সিরাম কিন্তু যে কেউ চুলে মাখতে পারেন না। তার জন্য কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন।
হেয়ার সিরামে কী এমন থাকে?
১) কেরাটিন এবং হাইড্রোলাইজ়ড প্রোটিন:
কেরাটিন হল এক ধরনের প্রোটিন। শরীরে স্বাভাবিক ভাবে এই কেরাটিন তৈরি না হলে বা তার মাত্রা কমে গেলে চুল জেল্লা হারাতে পারে। ঝরে পড়া, চুলের ইলাস্টিসিটি নষ্ট হওয়ার নেপথ্যেও এই প্রোটিনের ভূমিকা রয়েছে। বাইরে থেকে প্রোটিন-যুক্ত সিরাম চুলে মাখলে এই ধরনের সমস্যা খানিকটা হলেও কমে।
২) বিভিন্ন ধরনের তেল:
হেয়ার সিরামের মধ্যে যেমন বিভিন্ন ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল থাকে, তেমনই নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েলও থাকতে পারে। এই সব উপাদান চুলের জেল্লা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। চুল মোলায়েম করতেও অয়েল-যুক্ত সিরামের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
৩) ভিটামিন:
রোদ, ধোঁয়া, ধুলোর কারণেও চুলের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়। ভিটামিন ই এবং সি-যুক্ত হেয়ার সিরাম ব্যবহার করলে সেই ক্ষতি খানিকটা হলেও প্রতিরোধ করা যায়।
৪) নানা ধরনের ভেষজ:
হেয়ার সিরামে কিন্তু নানা ধরনের ভেষজের নির্যাস থাকতে পারে। ক্যামোমাইল, রোজ়মেরি, অ্যালো ভেরা, ল্যাভেন্ডারের মতো ভেষজ চুল এবং মাথার ত্বক— দুইয়েরই যত্ন নেয়। প্রদাহজনিত সমস্যা রুখতে পারলে নতুন চুল গজানোর আশাও করা যেতে পারে।
৫) গ্লিসারিন:
চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এমন সিরাম ব্যবহার করা উচিত, যার মধ্যে গ্লিসারিন রয়েছে। এই উপাদানটি শুধু চুলের ময়েশ্চার ধরে রাখে না, কেশরাশির জেল্লাও বজায় রাখে।
চুলের জন্য কত ধরনের সিরাম পাওয়া যায়?
১) অ্যান্টি ফ্রিজ় সিরাম:
যাঁদের চুল খুব রুক্ষ, তাঁরা এই সিরাম ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পু করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই অনেকের চুল উস্কোখুস্কো হয়ে যায়। তা বশে রাখতে অ্যান্টি ফ্রিজ় সিরাম মাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। কোঁকড়ানো চুলের জন্যও অ্যান্টি ফ্রিজ় সিরাম ভাল।
২) হাইড্রেটিং সিরাম:
সময়ের অভাবে একেবারেই চুলের পরিচর্যা করতে পারেন না। এ দিকে বাইরের ধোঁয়া, ধুলো, দূষণের প্রভাবেও চুল নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ছে। কেশরাশি প্রাণবন্ত করে তুলতে ব্যবহার করুন হাইড্রেটিং সিরাম।
৩) হিট প্রোটেকশন সিরাম:
মাঝেমধ্যে চুলে কায়দা করার জন্য স্ট্রেটনার, কার্লার ব্যবহার করেন অনেকে। কিন্তু যাঁদের নিয়মিত ওই ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়, অতিরিক্ত তাপ লেগে তাঁদের চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় বইকি। তবে চুলে তাপ লাগার আগে যদি হিট প্রোটেকশন সিরাম ব্যবহার করা যায়, তা হলে ততটা ক্ষতি হয় না।
৪) ভলিউমাইজ়িং সিরাম:
চুল খুব পাতলা। শ্যাম্পু করার পরেও কেমন যেন মাথায় পেতে বসে থাকে। তবে চুলের ঘনত্ব কিন্তু সাময়িক ভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে ভলিউমাইজ়িং সিরাম।
৫) রিপেয়ারিং সিরাম:
প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর এই রিপেয়ারিং সিরাম সামগ্রিক ভাবে চুলের যত্ন নেয়। চুল পড়া, ডগা ফাটা কিংবা ঝরে পড়ার সমস্যাও দূর করে।
কী ভাবে চুলে সিরাম মাখবেন?
১) প্রথমে চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু করে নিন। তার পর তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন কিছু ক্ষণ।
২) আধ শুকনো অবস্থায় চুলে সিরাম মাখতে হয়। দু’হাতের তালুতে সিরাম নিয়ে চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত ভাল করে মেখে নিন।
৩) চুলের গোড়ায় সরাসরি সিরাম না লাগানোই ভাল। কারণ, এই সিরামের মধ্যে নানা ধরনের সক্রিয় উপাদান থাকে। সেখান থেকে মাথার ত্বকে অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy