বাইরের ধুলো, ধোঁয়া, দূষণ। তার উপর রোদের চোখরাঙানি। তার জেরেই জৌলুস হারিয়েছে ত্বক? এ দিকে আবার পয়লা বৈশাখও এসে পড়েছে। বাঙালির বর্ষবরণ বলে কথা। মনের মতো না সাজলে কি চলে!
কিন্তু মুখে মেকআপ করলেই তো হল না, ত্বক যে জেল্লা হারায় রূপটানেও তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। হাতে যখন একেবারেই সময় নেই তখন বরং ক্লিনজ়িং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজ়িং-এর পাশাপাশি এক বার ঝট করে মেখে ফেলুন মাস্ক।
দোকান থেকে দাম দিয়ে নামী-দামি প্যাক কিনতে হবে না। বরং ত্বকের পরিচর্যা হোক ঘরোয়া উপকরণেই।
কেশর এবং মাখানা মাস্ক: ত্বকের পরিচর্যায় জাফরানের ব্যবহার আজকের নয়। শোনা যায়, রাজকন্যারাও রূপচর্চায় দুধে ভেজানো জাফরান বা কেশর মাখতেন। কালচে ছোপ দূর করে, ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে জাফরান। অন্য দিকে, স্বাস্থ্যকর খাবার হিসাবে বিবেচিত মাখানা কিন্তু ত্বকের জন্যও ভাল। এতে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। অ্যামাইনো অ্যাসিড কোলাজেন উৎপাদনে সহায়ক। এর সঙ্গে যোগ করতে হবে কাঁচা দুধ। ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে দুধ।
কী ভাবে বানাবেন প্যাক?
অল্প একটু জাফরান দুধে ভিজিয়ে রাখুন। তার সঙ্গে যোগ করুন দু’চামচ মাখানা গুঁড়ো। তিনটি উপকরণ মিশিয়ে মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে মাখুন। হালকা হাতে মালিশ করে মিনিট দশেক রেখে ঘরের তাপমাত্রায় থাকা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এক বার মাখার পরেই তফাত বোঝা যাবে। সপ্তাহে এক বার করে প্যাকটি নিয়মিত মাখলেই মুখ থাকবে উজ্জ্বল।
আরও পড়ুন:
বেদানা এবং চালের গুঁড়ো: বেদানা শুধু শরীরের জন্য উপকারী নয়, ত্বকের পক্ষেও উপযোগী। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর বেদানা। এতে মেলে ট্যানিন এবং অ্যান্থোসায়ানিন। ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে এটি। ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে মুখের ত্বক টানটান রাখতেও সাহায্য করে। চালের গুঁড়ো ত্বক থেকে মৃত কোষ ঝরাতে সাহায্য করে। অনেক সময় ত্বকের উপর মৃত কোষের পরত জমতে থাকায় জেল্লা হারায় ত্বক।
কী ভাবে বানাবেন প্যাক?
আধখানা বেদানা ছাড়িয়ে রস বার করে নিন। তার সঙ্গে যোগ করুন ১ চা-চামচ চালের গুঁড়ো এবং কয়েক ফোঁটা মধু। সমস্ত উপকরণ খুব ভাল করে মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে মালিশ করুন। মিনিট ১০-১৫ রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের বদল দেখুন নিজের চোখেই। আর যদি চান, গালে বেদানার মতো গোলাপি আভা বছরভর থাকুক, তা হলে প্রতি সপ্তাহে এক বার মাখুন।
ওট্স, কাঠবাদাম, মধু: কাঠবাদামে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। ফলে ত্বকের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। ওট্স স্ক্রাবের কাজ করে। ত্বক থেকে মৃত কোষ ঝরায়। মধু ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক। কাঠবাদাম গরম জলে ভিজিয়ে বেটে নিন। তার সঙ্গে যোগ করুন ওট্স গুঁড়ো এবং দুধ। মিশিয়ে নিন কয়েক ফোঁটা মধু। সমস্ত উপকরণ মুখে মেখে মিনিট দশেক রেখে হালকা মালিশ করে ধুয়ে নিন।
মাস্ক সব সময় ক্লিনজ়ার দিয়ে মুখ ধোয়ার পরে ব্যবহার করা উচিত। মাস্ক তৈরির পর হাতের কোনও একটি অংশ খানিকটা লাগিয়ে দেখে নিন। যদি জ্বালা না হয় বা র্যাশ না বেরোয় তা হলে বুঝতে হবে, মুখে মাখায় কোনও সমস্যা নেই।