Advertisement
E-Paper

‘সৌরভকে খুন করো, বার বার সঙ্কেত দিচ্ছে তোমার মায়ের আত্মা’! গল্প ফেঁদেই প্রেমিক সাহিলকে রাজি করান মুস্কান

সৌরভকে খুনের জন্য বাজার থেকে মাংস কাটার ছুরি কিনে নিয়ে আসেন মুস্কান এবং তাঁর প্রেমিক সাহিল। ঘুমের ওষুধও জোগাড় করেন। কিনে নিয়ে আসেন ২২০ লিটারের জলের ড্রাম, ৫০ কেজি সিমেন্ট।

(বাঁ দিকে) অভিযুক্ত সাহিল, (মাঝে) নিহত মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ, (ডান দিকে) সৌরভের স্ত্রী মুস্কান। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন

(বাঁ দিকে) অভিযুক্ত সাহিল, (মাঝে) নিহত মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ, (ডান দিকে) সৌরভের স্ত্রী মুস্কান। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫ ১৮:০৪
Share
Save

মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে নভেম্বর থেকে খুনের চেষ্টা করছিলেন তাঁর স্ত্রী মুস্কান। কিন্তু কী ভাবে খুন করবেন, খুনের জন্য প্রেমিক সাহিলকে কী ভাবে রাজি করাবেন, তার কৌশল খুঁজতে থাকেন তিনি। অবশেষে পেয়েও যান। পুলিশ সূত্রে খবর, মুস্কান তাঁর প্রেমিককে এটাই বিশ্বাস করাতে চাইছিলেন যে, সৌরভের মৃত্যু দরকার। শুধু তা-ই নয়, সেই ধারণা তাঁর মধ্যে গেঁথে দেওয়ার জন্য সমাজমাধ্যমের সাহায্যও নেন।

স্ন্যাপচ্যাটে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলেন মুস্কান। সেখান থেকে প্রেমিক সাহিলকে মেসেজ করতে থাকেন। সৌরভকে খুন করা প্রয়োজন। সৌরভের মৃত্যু নিশ্চিত করতে হবে। এ রকম নানা ধরনের মেসেজ করতে থাকেন মুস্কান। শুধু তা-ই নয়, এই ধারণাকে বিশ্বাসে বদলে দিতে সাহিলের মৃত মায়ের দোহাই দেওয়াও শুরু করেন। বছরখানেক আগেই সাহিলের মায়ের মৃত্যু হয়েছিল। মায়ের মৃত্যুতে মনমরা হয়ে থাকতেন সাহিল। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগান মুস্কান। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সাহিলকে মুস্কান বলেন, ‘‘তোমার মায়ের আত্মা চাইছেন সৌরভের মৃত্যু হওয়া উচিত। সে বার বার সেই সঙ্কেতই দিতে চাইছেন তোমাকে।’’ এই ধরনের কথোপকথনের মাধ্যমে সৌরভকে খুনের জন্য সাহিলের ভরসা অর্জন করেন মুস্কান। সৌরভ মার্চেন্ট নেভি অফিসার নন, লন্ডনে একটি বেকারিতে কাজ করেন, এ কথাও সাহিলকে বলেছিলেন তিনি। সৌরভকে সরাতে পারলে তাঁদের জীবনে আর কোনও বাধা থাকবে না বলেও সাহিলকে প্ররোচিত করেন বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন।

সাহিলের ভরসা অর্জনের পরই শুরু হয় সৌরভকে খুন করার পরিকল্পনা। বাজার থেকে মাংস কাটার ছুরি নিয়ে আসেন দু’জনে মিলে। নিষিদ্ধ ঘুমের ওষুধ জোগাড় করেন। ২২০ লিটারের একটি জলের ড্রাম, ৫০ কেজি সিমেন্টও কিনে নিয়ে আসেন। ৪ মার্চ সৌরভ মুস্কানের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া সারেন। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সৌরভের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন মুস্কান। এর আগেও যখন বাড়িতে এসেছিলেন নভেম্বরে, তখনও সৌরভের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিলেন মুস্কান। কিন্তু গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলেও অচৈতন্য হয়ে না পড়ায় খুনের পরিকল্পনা তখন ভেস্তে গিয়েছিল। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে নেমেছিলেন বলে ধারণা তদন্তকারীদের। এ বার ওষুধের ডোজ় বাড়িয়ে খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেন। সেই খাবার খেয়ে সৌরভ অচৈতন্য হয়ে পড়েন। অচৈতন্য হতেই সৌরভের বুকে একের পর এক ছুরির কোপ বসিয়ে দিয়েছিলেন মুস্কান। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে হাজির হন সাহিল। বাজার থেকে কিনে আনা মাংস কাটার ছুরি দিয়ে সৌরভের মাথা ধড় থেকে আলাদা করে দেন সাহিল। রাতেই সৌরভের দেহ টুকরো করেন দু’জনে মিলে। তার পর নীল ড্রামের মধ্যে সিমেন্ট ঢালেন। তার পর আবার সিমেন্ট গুলে ড্রামের মুখ আটকে দেন, যাতে দেহাংশের কোনও চিহ্নই কেউ খুঁজে না পান। সেই ড্রামটিকে ফেলে আসার পরিকল্পনা ছিল দু’জনের। সন্দেহ যাতে না হয়, তাই দু’জনে মিলে আগে হিমাচল প্রদেশে ঘুরতে চলে যান। সেখান থেকে সোমবার বাড়িতে ফিরে ওই ড্রাম ফেলে আসার পরিকল্পনা ছিল মুস্কান এবং সাহিলের। কিন্তু তার আগেই ধরা পড়ে যান তাঁরা।

Navy Officer Meerut

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}