৬ মার্চ
মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভের বোন চিঙ্কির হোয়াট্সঅ্যাপে মেসেজ এল— হোলিতে থাকছিস?
দাদার ফোন থেকে এই বার্তা পেয়েই চিঙ্কি উত্তর দেন, ‘‘হ্যাঁ, থাকছি।’’ তার পর আবার মেসেজ— ‘‘আমি আসতে পারব না রে! হেলির পরেই ভাবছি তোদের সঙ্গে দেখা করব।’’
চিঙ্কির প্রশ্ন, ‘‘কেন রে? কোথাও যাচ্ছিস?’’ সে দিন আর কোনও উত্তর আসেনি।
৮ মার্চ
চিঙ্কি: কবে আসছিস সৌরভ?
সৌরভের হোয়াট্সঅ্যাপ থেকে উত্তর: কবে যাব বলে দেব।
চিঙ্কি: মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিস না?
সৌরভের হোয়াট্সঅ্যাপ থেকে উত্তর: না রে, ওখানে মাইনাস ১০ ডিগ্রি টেম্পারেচার। মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়বে।
তার পরই হোয়াট্সঅ্যাপে হোলির শুভেচ্ছা বিনিময় হয় দু’জনের।
১৫ মার্চ
হোলির পরেও সৌরভ মেরঠে না ফেরায় চিঙ্কি আবার তাঁকে হোয়াট্সঅ্যাপ করেন। ‘‘কী রে কবে আসছিস, আমি তো এ বার চলে যাব?’’ তার পরেই সৌরভের ফোন থেকে উত্তর আসে, ‘‘আমার পার্টি রয়েছে। কবে মেরঠে ফিরব জানি না।’’ আবার প্রশ্ন, ‘‘বাড়িতে হোলি কেমন কাটালি?’’
১৬ মার্চ
সৌরভকে হোয়াট্সঅ্যাপ কল করেন চিঙ্কি। কিন্তু কোনও উত্তর পাননি। তার পরের দিনও আবার ফোন করেন তিনি। কিন্তু এ বারও ফোন ধরেননি সৌরভ। তখনই সন্দেহ হয় চিঙ্কির। বাড়িতে তখন ফোন করে বিষয়টি জানান। তার পর পুলিশের দ্বারস্থ হয় সৌরভের পরিবার। এনডিটিভি-র প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে সেই হোয়াট্সঅ্যাপ বার্তা।
সৌরভকে খুনে অভিযুক্ত তাঁর স্ত্রী মুস্কান এবং প্রেমিক সাহিলকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সৌরভকে খুনের পর তাঁরা দু’জনে হিমাচলের কসোলে ঘুরতে চলে যান। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন সৌরভের ফোন। সেখান থেকে বরফের ছবি এবং ভিডিয়ো পোস্ট করছিলেন মুস্কান। সৌরভের পরিবারের কেউ যাতে ঘুণাক্ষরে টের না পান, তার জন্য সৌরভের ফোন থেকেই সেই সব ভিডিয়ো এবং ছবি সমাজমাধ্যমে ছাড়ছিলেন মুস্কান। কিন্তু সৌরভের ছবি দেখতে না পেয়ে সন্দেহ হয় তাঁর পরিবারের সদস্যদের। তাঁকে নিজের ছবি দিতে বলা হয়। কিন্তু সৌরভের ছবি দিতে বলাতেই আর কোনও উত্তর আসেনি। সমাজমাধ্যমে সৌরভের ছবিও পোস্ট হয়নি। তখন সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় সৌরভের পরিবারের। ১৭ মার্চ হিমাচল প্রদেশ থেকে ফিরে আসেন মুস্কান। ওই দিনই তাঁর ভাড়াবাড়ি থেকে নীল ড্রাম উদ্ধার হয়। সেখান থেকে সোজা বাপেরবাড়িতে যান মুস্কান। তাঁর মা কবিতা রস্তোগী বলেন, ‘‘মুস্কান আমাদের এসে বলে, মা আমরা সৌরভকে খুন করেছি।’’ তার পরই মুস্কানকে পুলিশের কাছে নিয়ে যান কবিতা।
গত ৪ মার্চ সৌরভকে খুনের পর দেহ ১৫ টুকরো করার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্ত্রী মুস্কান এবং প্রেমিক সাহিলের বিরুদ্ধে। দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।