Advertisement
E-Paper

‘ড্রামের ভিতরে বাবাকে রেখে দিয়েছে ওরা’! কাঁদতে কাঁদতে পড়শিদের বলে মার্চেন্ট নেভি অফিসারের ছ’বছরের কন্যা

গত ৪ মার্চ রাতে সৌরভের খাবারের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে দেন স্ত্রী মুস্কান। সেই খাবার খেয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েন সৌরভ। প্রেমিক সাহিলকে বাড়িতে ডেকে দু’জনে মিলে সৌরভকে খুন করেন বলে অভিযোগ।

মার্চেন্ট নেভি অফিসারের খুনের পরতে পরতে রহস্য। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

মার্চেন্ট নেভি অফিসারের খুনের পরতে পরতে রহস্য। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫ ১৩:৩২
Share
Save

ঘর থেকে যখন নীলরঙা একটি জলের ড্রাম বার করছিলেন বাড়ির মালিক। সেই ড্রাম দেখেই চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতের ছ‘বছরের কন্যা। ওই বাড়িতেই কন্যা পিহুকে নিয়ে থাকতেন সৌরভের স্ত্রী মুস্কান। নীল ড্রামটি দেখেই সৌরভের কন্যা কেঁদে কেঁদে বাড়ির মালিক এবং পড়শিদের বলতে থাকে, ‘‘এই ড্রামেই বাবা রয়েছে। ওরা বাবাকে ড্রামে ভরে রেখেছে। ওখান থেকে বাবাকে বার করো তোমরা।’’

যে বাড়িতে মুস্কান থাকতেন, সেটি ভাড়াবাড়ি। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির মালিক মুস্কানকে বলেছিলেন ঘর খালি করতে হবে। তিনি মেরামতির কাজ করবেন। তখনও কেউ জানতেন না যে এই বাড়িতেই একটা খুন হয়ে গিয়েছে। ঘর থেকে এক এক সব জিনিস বার করার সময় কোনায় পড়ে থাকা নীলরঙা একটি ড্রাম চোখে পড়েছিল। এমনই দাবি বাড়িমালিকের। সেই ড্রামটি সরানোর জন্য বলতেই আপত্তি জানিয়েছিলেন মুস্কান। তাঁকে বাড়ির মালিক জিজ্ঞাসা করেন, কী এমন আছে যে ওই ড্রাম সরানো যাবে না। তার পর এক প্রকার জোর করেই ড্রামটিকে সরানোর চেষ্টা করা হয়।

বাড়ির মালিকের দাবি, ড্রামটি এত ভারী ছিল যে ভিতরে কী রয়েছে তা দেখার জন্য ঢাকনা খুলতেই একটা কটু গন্ধ নাকে ভেসে আসে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ড্রামে কোনও জিনিস রাখা ছিল না। পুরো ড্রাম সিমেন্ট দিয়ে ভরে রাখা হয়েছিল। ড্রামে ভেঙে জমে থাকা সেই সিমেন্টের চাঙড় ভাঙতেই চমকে ওঠেন বাড়ির মালিক এবং পড়শিরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। তত ক্ষণে ভাড়াবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বাপের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন মুস্কান। ধরা পড়ে গিয়েছেন বুঝে স্বামী সৌরভকে কী ভাবে খুন করা হয়েছে, কোথায় খুন করে দেহ লুকিয়ে রেখেছেন, মায়ের কাছে খুলে বলেন মুস্কান। এমনই জানিয়েছে পুলিশ। আর তার পরই সৌরভ খুনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি লন্ডন থেকে উত্তরপ্রদেশের মেরঠে নিজের বাড়িতে ফেরেন মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ। ২৫ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী মুস্কানের জন্মদিন পালন করেন সৌরভ। ২৮ ফেব্রুয়ারি কন্যার জন্মদিনও পালন করেন তিন জনে মিলে। ৪ মার্চ রাতে সৌরভের খাবারের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে দেন মুস্কান। সেই খাবার খাওয়ার পরই অচৈতন্য হয়ে পড়েন সৌরভ। তার পর প্রেমিক সাহিল শুক্লকে বাড়িতে ডেকে আনেন মুস্কান। তার পর সৌরভকে দু’জন মিলে খুন করেন বলে অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, দেহ কী ভাবে লোপাট করা হবে ওই ঘরে বসেই তার পরিকল্পনা করেন। রাতেই সৌরভের দেহ ১৫ টুকরো করেন। আগে থেকে কিনে আনা ড্রামে সেই টুকরোগুলি ভরে সিমেন্ট দিয়ে পুরো ড্রাম আটকে দেন, যাতে কারও সন্দেহ না হয়। তার পর দিনই সাহিলের সঙ্গে শিমলায় বেড়াতে চলে গিয়েছিলেন মুস্কান। সঙ্গি নিয়ে গিয়েছিলেন সৌরভের ফোন। পুলিশের সন্দেহ, সৌরভকে যখন খুন করা হয়, সেই দৃশ্য দেখেছিল তাঁর মেয়ে। নীলরঙা ড্রাম দেখার পরই তাই প্রতিবেশীদের কাছে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘‘ওই ড্রামে রয়েছে বাবা।’’

Murder Meerut

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}