Advertisement
E-Paper

‘নগদকাণ্ড’: সিবিআইয়ের ২০১৮-র জালিয়াতি মামলায় ছিল বিচারপতি বর্মার নাম! পরে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট

ইলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই ঋণখেলাপের ঘটনায় নতুন করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। ২০২৪ সালের মার্চে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। ইলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়।

বিচারপতি যশবন্ত বর্মা।

বিচারপতি যশবন্ত বর্মা। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ১৩:১৯
Share
Save

২০১৮ সালে এক চিনিকলের ব্যাঙ্ক প্রতারণা মামলায় একটি এফআইআর দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই এফআইআরে নাম ছিল নগদকাণ্ডে নাম জড়ানো দিল্লি হাই কোর্টের সেই বিচারপতি যশবন্ত বর্মার। যে সংস্থার বিরুদ্ধে ঋণখেলাপ করার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, সেই সংস্থার অন্যতম কর্তা (নন এগ্‌‌জ়িকিউটিভ) ছিলেন বিচারপতি বর্মা। ইলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২৪ সালে নতুন করে সেই তদন্ত শুরু করে সিবিআই। ওই বছরই উচ্চ আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

সিমভাওলি চিনিকল, তার কর্তাদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। সে সময় ওই সংস্থার কর্তা (নন এগ্‌‌জ়িকিউটিভ) ছিলেন বিচারপতি বর্মা। ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স (ওবিসি) একটি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিল। তার ভিত্তিতে সিবিআই ওই মামলা দায়ের করেছিল। ব্যাঙ্কের অভিযোগে জানানো হয়েছিল, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ওবিসির হাপুর শাখা ৫,৭৬২ জন কৃষককে ১৪৯.৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল। সার এবং বীজ কেনার জন্য সেই ঋণ দেওয়া হয়েছিল। ঋণের চুক্তি মেনে কৃষকদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে দেওয়ার আগে ওই ঋণের টাকা তৃতীয় পার্টির অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছিল। সিম্ভাওলি চিনিকল জানিয়েছিল, কৃষকদের হয়ে তারাই ঋণ পরিশোধ করবে।

ব্যাঙ্কের অভিযোগ, সিম্ভাওলি চিনিকল তাদের কাছে ভুয়ো কেওয়াইসি (গ্রাহকের বিষয়ে তথ্য) নথি জমা করেছিল। ২০১৫ সালের মার্চে ওবিসি ঘোষণা করে যে, ওই ঋণ ‘ভুয়ো’ ছিল। তারা ৯৭.৮৫ কোটি টাকা খুইয়েছে বলে অভিযোগ। তাদের বকেয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ১০৯.০৮ কোটি টাকা।

সিবিআইয়ের অভিযোগে নাম ছিল গুরপাল সিংহেরও। তিনি ওই চিনিকল সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর ছিলেন। গুরপাল পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংহের জামাই। সিবিআইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মামলার তদন্ত করেছিল ইডিও।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট চিনিকলের ‘ঋণ প্রতারণা’-র ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সাতটি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত করার নির্দেশ দেয় সিবিআইকে। উচ্চ আদালতের তরফে জানানো হয়, এই ঘটনা বিচারব্যবস্থার ‘বিবেককে ধাক্কা দিয়েছে’। তদন্তের পরে হাই কোর্ট জানতে পেরেছিল যে, ওই সিম্ভাওলি চিনিকলের সঙ্গে ‘অশুভ আঁতাঁত’ তৈরি করেছিলেন বেশ কয়েক জন ব্যাঙ্ক আধিকারিক। ওই সংস্থাকে ৯০০ কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে ওবিসি একমাত্র সংস্থা থেকে ঋণের টাকা আদায় করতে না পেরে ইডির দ্বারস্থ হয়েছিল। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল যে, ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা আরবিআইয়ের নীতি না মেনে ওই চিনিকলকে ঋণ পাইয়ে দিয়েছেন। যাঁরা এই ঋণ পাইয়ে দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।

ইলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই ঋণখেলাপের ঘটনায় নতুন করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ঋণখেলাপের পরেও কেন ওই চিনিকল সংস্থাকে বার বার ঋণ দিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলি, তার অনুসন্ধান শুরু করে সিবিআই। ২০২৪ সালের মার্চে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। ইলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়।

গত ১৪ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি বর্মার সরকারি বাসভবনের স্টোররুমে আগুন লাগে। অভিযোগ, দমকলকর্মীরা সেখানে পৌঁছে দেখেছিলেন পোড়া চটের থলেতে নগদ পড়ে রয়েছে। বিচারপতির বাড়ির এক কর্মী দাবি করেন, আদালতের নথি-সহ কিছু কাগজপত্র পোড়ানো হয়েছে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি বলে কোনও এফআইআর দায়ের হয়নি। দিল্লি পুলিশ নগদ মেলার ভিডিয়ো তুলে সরকার এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির হাতে তুলে দিয়েছে। এর পরেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার মধ্যে শোনা যায়, দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি বর্মাকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে বদলি করা হচ্ছে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বিচারপতি বর্মাকে বদলি এখনও করা হয়নি। তাঁকে বদলির প্রস্তাবের সঙ্গে তদন্তের কোনও যোগ নেই।

Cash CBI Bank Fraud Case Supreme Court

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}