এভাবেই পায়ে ধরে ক্ষমা চাইলেন অধ্যাপক। এএনআই-এর টুইটারের ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি
ক্লাসের বাইরে ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান। ক্লাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে বলতেই কলেজের অধ্যাপককে ‘দেশদ্রোহী’ বলে দেগে দিলেন বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি সমর্থকরা। দাবি তুললেন ওই অধ্যাপককে ক্ষমা চাইতে হবে। আর তার পর যে গাঁধীগিরির ‘শিক্ষা’ দিলেন অধ্যাপক, তাতে লজ্জায় মুখ লুকনোর জায়গা পেলেন না ছাত্রনেতারা। ঘটনা মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরের রাজীব গাঁধী পিজি কলেজের।
কী করলেন তিনি?
ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলতেই ছাত্রদের পায়ে পড়তে শুরু করলেন ১০-১২ বইয়ের লেখক বর্ষীয়ান অধ্যাপক দীনেশচন্দ্র গুপ্ত। ঘটনায় হতচকিত ছাত্ররা পালাতে শুরু করলেন। কিন্তু অধ্যাপক নাছোড়। দৌড়ে তাঁদের পিছু ধাওয়া করেই পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবেন। বুধবারের এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ভাইরাল। এবিভিপি-র সমালোচনায় সরব নেটিজেনরা। ছাত্রদের আচরণের সমালোচনা করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ। ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে এবিভিপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব।
কী হয়েছিল বুধবার। জানা গিয়েছে, বুধবার ক্লাস নিচ্ছিলেন অধ্যাপক দীনেশবাবু। সেই সময় এবিভিপি সমর্থকরা একটি স্মারকলিপি জমা দিতে আসেন। ক্লাসের বাইরে স্লোগান তুলতে থাকেন, ‘ভারত মাতা কি জয়’। দীনেশবাবু ক্লাস থেকে বেরিয়ে তাঁদের স্লোগান বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। কয়েকজন ছাত্র অধ্যাপককে ‘দেশবিরোধী’ বলেন। তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেন। তখনই ঘটে এই কাণ্ড।
#WATCH: A professor of Rajiv Gandhi PG College in Mandsaur tried to touch the feet of students belonging to ABVP, allegedly after they called him anti-national & asked him to apologise for asking them to stop raising slogans outside the classroom. #MadhyaPradesh (26.09.2018) pic.twitter.com/RivV1lzzrY
— ANI (@ANI) September 28, 2018
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, অধ্যাপক আচমকাই নীচু হয়ে ছাত্রদের পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাইতে শুরু করলেন। ছাত্ররাও যে যার মতো পিঠটান দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অন্য অধ্যাপকরা দীনেশবাবুকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি তাঁদের এড়িয়েই এবিভিপি সমর্থকদের পা ছোঁয়ার চেষ্টা করছেন।
ঘটনার পর থেকেই তিন দিনের ছুটিতে রয়েছেন ওই অধ্যাপক। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, ওই ঘটনায় তিনি মর্মাহত।
আরও পড়ুন: গামলায় বসে নদী পেরিয়ে স্কুলে, প্রতিদিন ‘পরীক্ষা’ দিচ্ছে খুদে পড়ুয়ারা
ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়ে এবিভিপি-র সমালোচনা করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ রবীন্দ্রকুমার সোহনি। তিনি বলেন, ‘‘দীনেশবাবু বর্ষীয়ান অধ্যাপক। দশ-বারোটি বই লিখেছেন। হৃদযন্ত্র এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাঁর। এ হেন শ্রদ্ধেয় ও অসুস্থ অধ্যাপকের সঙ্গে এই ব্যবহার করা উচিত হয়নি। এবিভিপি নেতৃত্বের আত্মসমীক্ষা করা উচিত।’’
আরও পড়ুন: পুরুষের সম্পত্তি নয় নারী, অপরাধের তালিকা থেকে বাদ পড়ল পরকীয়া
এবিভিপি-র মন্দসৌর জেলা আহ্বায়ক পবন শর্মা ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলেছেন, আমি যখন কলেজে যাই, তখন আমাদের সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে অধ্যাপকদের আলোচনা চলছিল। ওই অধ্যাপকের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমরা শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy