Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

উনিশের ভোটারই ‘পরীক্ষা’ মোদীর

সিবিএসই প্রশ্ন ফাঁসের প্রভাব পড়বে গোটা দেশেই। ২০১৮ সালে ‘শতাব্দীর প্রথম ভোটার’দের বিজেপিতে সামিল করতে আগেই নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু পরের বছরের ভোটারও তো এ বার হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০৪:৩০
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদীকে খোঁচা দিয়ে দুপুর-দুপুর পরামর্শটি এল রাহুল গাঁধীর কাছ থেকে। কংগ্রেস সভাপতি টুইট করলেন, ‘এগ্জ্যাম ওয়ারিয়রস’-এর দ্বিতীয় পর্বটি লিখে ফেলুন প্রধানমন্ত্রী! প্রশ্ন ফাঁসের পর ছাত্রছাত্রী আর তাঁদের বাবা-মায়েরা কীভাবে চাপমুক্ত হবেন!

আসলে কঠিন পরীক্ষার মুখে খোদ প্রধানমন্ত্রী। ঘরোয়া আলোচনায় সে কথা বলছেন বিজেপি নেতারাই। কারণ, গত কয়েক মাস ধরে ছাত্রছাত্রী আর তাঁদের বাবা-মায়েদের মন জয় করতে উঠেপড়ে লেগেছেন মোদী। পরীক্ষার চাপ কমাতে বই লিখেছেন—‘এগ্‌জ্যাম ওয়ারিয়রস’। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে দু’ঘণ্টার বেশি কথাবার্তা বলেছেন ‘পরীক্ষা পে চর্চা’-য়! বিজেপিই বলছে, এসবের নেপথ্যে প্রধানমন্ত্রীর নজরই ছিল ভবিষ্যতের ভোটারদের দিকে। আর এখন প্রশ্ন ফাঁসের এক ধাক্কায় সেই ‘সাজানো বাগান’ উজাড় হওয়ার অবস্থা।

বিজেপির হিসেব, শুধু সিবিএসই-তেই দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থী প্রায় ১২ লক্ষ। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরের বোর্ডের পরীক্ষা মিলিয়ে সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি। এঁরা সকলেই কম-বেশি ২০১৯ সালের সম্ভাব্য ভোটার। আর তাঁদের পরিবারকে ধরলে ভোটার সংখ্যা এক কোটির উপরে। এ ছাড়া, সিবিএসই প্রশ্ন ফাঁসের প্রভাব পড়বে গোটা দেশেই। ২০১৮ সালে ‘শতাব্দীর প্রথম ভোটার’দের বিজেপিতে সামিল করতে আগেই নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু পরের বছরের ভোটারও তো এ বার হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম।

বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘প্রশ্ন ফাঁসের পর আজ মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক জানাল, কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী দ্বাদশ শ্রেণির অর্থনীতির পরীক্ষা ফের হবে। এরপর সেই পরিবারের মানসিক অবস্থা কোন পর্যায়ে যেতে পারে? প্রশ্ন ফাঁসে দায়ী যে-ই হোক, রাজনৈতিকভাবে তার খেসারত দিতে হবে মোদীকেই।’’

কংগ্রেস বলছে, প্রধানমন্ত্রী যে বিপাকে পড়েছেন, তা প্রথম থেকেই বোঝা গিয়েছে। কারণ, তড়িঘড়ি সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়, মোদী ক্ষুব্ধ। এছাড়া, মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরকে যে তিনি ফোন করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ‘বাঁচাতেই’ তা জানিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, তিনি কখন কোন মন্ত্রীকে ফোন করেন, সাধারণত তা জানা যায় না।

কংগ্রেসের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী এই কেলেঙ্কারির জন্য নিজে ক্ষমা চাইবেন না কেন? সরকার তো পরীক্ষা-মাফিয়াকে বাঁচাতে ব্যস্ত! তবে আজ দিল্লিতে ভিডিয়ো কনফারেন্সে এক লক্ষ ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বের সূচনায় জাভড়েকর বিষয়টি তুললেও মোদী এ প্রসঙ্গে নীরব ছিলেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE