Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

‘আমার নাম হামিদ আনসারি...আমি চর নই’

প্রেমের টানে ছ’বছর আগে দেশ ছেড়েছিলেন ২৭ বছরের হামিদ। বন্ধুর ভরসাতেই কাবুল হয়ে লুকিয়ে পাকিস্তানে ঢোকেন। আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। বুধবার সাক্ষাৎকারে সেই কাহিনি শোনালেন হামিদ।

হামিদ। ছবি: টুইটার

হামিদ। ছবি: টুইটার

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

বীর-জারা ছবির সঙ্গে তাঁর জীবনের আশ্চর্য মিল। বুধবার দিল্লিতে পৌঁছে শাহরুখ খানেরই অন্য একটি ছবির কায়দায় সেই হামিদ নেহাল আনসারি বললেন, ‘‘আই অ্যাম হামিদ আনসারি, অ্যান্ড আই অ্যাম নট আ স্পাই।’’

প্রেমের টানে ছ’বছর আগে দেশ ছেড়েছিলেন ২৭ বছরের হামিদ। বন্ধুর ভরসাতেই কাবুল হয়ে লুকিয়ে পাকিস্তানে ঢোকেন। আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। বুধবার সাক্ষাৎকারে সেই কাহিনি শোনালেন হামিদ। ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে হামিদকে কোহাটের এক হোটেলে তুলেছিল পাক বন্ধু। পরের দিন সে-ই পুলিশে খবর দেয়। প্রথম তিন দিন এক অজ্ঞাত জায়গায় হামিদকে বন্দি করে রাখে কোহাট পুলিশ। শেষে প্রেমিকা তাঁদের সম্পর্কের কথা স্বীকার করলে হামিদের হেফাজত নেয় গোয়েন্দা দফতর। অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০১৫ সালে হামিদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় পাকিস্তানের এক সামরিক আদালত। কোহাট থেকে ঠাঁই হয় পেশোয়ারের সেন্ট্রাল জেলে।

মাটির তলায় একটি কুঠুরিতে রাখা হয়েছিল হামিদকে। বললেন, ‘‘দিন-রাতের তফাত বুঝতে পারতাম না। ২৪ ঘণ্টায় এক বার শৌচাগারে যাওয়ার অনুমতি মিলত। তা-ও এক মিনিটের জন্য। প্রাণ রক্ষা করতে যতটুকু খাবার লাগে সেটুকুই পেতাম। কখনও তা-ও জুটত না। এক বার গরমের সময় চল্লিশ দিন স্নান করতে দেয়নি। গায়ে পোকা হয়ে গিয়েছিল। জেরার সময় এমন মেরেছিল যে, বাঁ রেটিনায় ফুটো হয়ে গিয়েছে। মারের চোটে অজ্ঞান হয়ে যেতাম।’’

আরও পড়ুন: সজ্জন মামলায় দীর্ঘ লড়াই আইনজীবী বাবা-মেয়ের

হামিদের কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম, আর কোনও দিনই বুঝি বাড়ি ফিরতে পারব না। মা-বাবার কথা মনে হত খুব। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতাম আর আফশোস হত।’’ তত দিনে জেনেও গিয়েছেন, বাড়ির পছন্দ করা পাত্রের সঙ্গেই প্রেমিকার বিয়ে হয়েছে।

আরও পড়ুন: বুলন্দশহরে ধন্যবাদ প্রাপ্য, দাবি যোগীর

তবে এত তাড়াতাড়ি মুক্তি পেতে চলেছেন মঙ্গলবারের আগে তা টেরও পাননি হামিদ। বললেন, ‘‘সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ খবরটা পাই। প্রচণ্ড আনন্দ হচ্ছিল।’’ ৬ বছরের অন্ধকার দিনগুলো ভুলতে চান হামিদ। ভুলতে চান প্রেমিকাকেও। বললেন, ‘‘ও যেখানেই থাকুক ভাল থাকুক। ঈশ্বর আমাকে দ্বিতীয় সুযোগ দিয়েছেন। নতুন করে শুরু করতে চাই।’’

বুধবার দিল্লিতে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখা করেন হামিদ ও তাঁর পরিবার। হামিদের মা ফৌজিয়া সুষমাকে বলেন, ‘‘আপনার জন্যই ছেলেকে ফিরে পেয়েছি।’’
হামিদ সুষমাকে বলেন, ‘‘আই অ্যাম সরি।’’ সুষমা বলেন, ‘‘সরি বলছ কেন? তুমি তো খুব সাহসী!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Administration Government Spy Crime Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE