বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ছবি- সংগৃহীত।
বাবা যা বলেছিলেন, ছেলে তা মানলেন না। ভারতীয় আইনের ‘পুরুষতান্ত্রিক’ ঝোঁকের বিরোধিতা করতে গিয়ে বিচারপতি বাবার উল্টো পথে হাঁটলেন সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্যতম বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ৩৩ বছর পর।
সাংবিধানিক বেঞ্চের পাঁচ প্রবীণ বিচারপতির মধ্যে আলাদা ভাবে তাঁর মতামত জানাতে গিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি চন্দ্রচূড় লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ নম্বর ধারার মূল ভিতেই রয়েছে লিঙ্গবৈষম্যের ছাপ। সেখানে চালু ধারণাকে মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে। যেন মেনে নেওয়া হচ্ছে, বিয়ের পর স্বামী সব কিছুতেই তাঁর স্ত্রীর প্রভু।’’ তাঁর প্রশ্ন, বিয়ের পর স্ত্রী অন্য কাউকে তাঁর যৌনসঙ্গী করতে চাইলে, সে ব্যাপারে কেন তাঁকে স্বামীর সম্মতি নিতে হবে? বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের কথায়, ‘‘এটা তো পুরুষতান্ত্রিক ঝোঁক। এই আইন চলতে পারে না।’’
আজ থেকে ৩৩ বছর আগে, ১৯৮৫ সালে বিচারপতি ওয়াই ডি চন্দ্রচূড়ের বাবা বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় পরকীয়াকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছিলেন।
ভারত সরকারের সঙ্গে জনৈক সৌমিত্রি বিষ্ণুর ওই মামলায় বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, ‘‘সমাজের স্বার্থের কথা ভেবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরকীয়া সম্পর্ককে শাস্তিযোগ্য রাখাই শ্রেয়।’’ কিন্তু ছেলে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় কিন্তু তা মেনে নিলেন না।
আরও পড়ুন- পরকীয়া অপরাধ নয়, স্বামী প্রভু হতে পারেন না স্ত্রীর, রায় সুপ্রিম কোর্টের
আরও পড়ুন- বাতাসের বিষ থেকেই বিকল্প জ্বালানি! উপায় বাতলে ভাটনগর পেলেন দুই বাঙালি
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় অবশ্য এর আগেও বাবার রায়ের বিরোধিতা করেছেন। বিতর্কিত এডিএম জব্বলপুর মামলায় ১৯৭৬ সালে বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় দেশে জরুরি অবস্থা জারির ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির আদেশকে সমর্থন করেছিলেন। অস্বীকার করেছিলেন ভারতীয় নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে। ওই সময় অবশ্য পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে সাংবিধানিক আদালতের আরও তিন প্রবীণ বিচারপতিকে পাশে পেয়েছিলেন বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়। কিন্তু পরে তাঁর ছেলে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় রায় দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ভুল ছিল সেই রায়ে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy