মরাঠি সাহিত্য সম্মেলনে প্রবীণ সাহিত্যিক নয়নতারা সেহগলের আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে উদ্যোক্তারা লেখকদের আত্মসম্মানে আঘাত করেছেন এবং তাঁদের বাক্স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা করেছেন বলে মঙ্গলবার অভিযোগ তুলল শিবসেনা।
এ দিন তাদের দলের প্রচারপত্রে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে দাবি করা হয়, সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় নয়নতারা গো-রক্ষা বাহিনীর তাণ্ডব, গণপিটুনি, একের পর এক সাংবাদিক ও যুক্তিবাদী লেখক হত্যা, রাষ্ট্রের দমননীতির প্রসঙ্গ তুলবেন বলে জানিয়েছিলেন। তাতেই ‘সরকারি আনুকূল্য’ হারানোর ভয়ে উদ্যোক্তারা পিছিয়ে এসেছেন।
শিবসেনা এমনিতে এনডিএ-র শরিক হলেও সম্প্রতি বিজেপির সঙ্গে তাদের দূরত্ব বেড়েছে। ঘটনা হল, নয়নতারার আমন্ত্রণ বাতিল হওয়ার পিছনে দৃশ্যত নাম জড়িয়েছে বিজেপি নয়, এমএনএস-এর। আগামী ১১ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের যবতমল জেলায় ৯২তম সর্বভারতীয় মরাঠি সাহিত্য সম্মেলন উদ্বোধন করার কথা ছিল নয়নতারার। রবিবার এমএনএস-এর এক কর্মী নয়নতারাকে ডাকা হলে অনুষ্ঠান পণ্ড করা হবে বলে হুমকি দেন। তার পরেই নয়নতারার আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করেন উৎসব কর্তৃপক্ষ।
যদিও এর পরে সোমবার এমএনএস নেতা রাজ ঠাকরে এই ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে নিয়ে দাবি করেন, নয়নতারাকে ডাকার ব্যাপারে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। মহারাষ্ট্র সরকারও আপাত ভাবে এ নিয়ে কোনও আপত্তি জানায়নি। তবে এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে নয়নতারা নিজেই আসতে চান না বলে জানান।
ইতিমধ্যে নয়নতারাকে আসতে না দেওয়ার পিছনে বিজেপিরই কলকাঠি রয়েছে বলে আগে অভিযোগ করেছিল কংগ্রেস। লক্ষণীয় হল, এ দিন শিবসেনা এমএনএস-কে আক্রমণ করে তাদের অন্যের হাতের পুতুল বলে দাবি করেছে। এই ‘অন্য’ পক্ষটি বিজেপি বলেই রাজনৈতিক শিবিরের অনুমান। শিবসেনা-বিজেপির দূরত্বের আবহে বিজেপির সঙ্গে এমএনএস-এর ‘ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে শিবসেনার এই তোপ রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। শিবসেনা এও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, গাঁধী-নেহরু পরিবারে সদস্য নয়নতারা এক সময় ইন্দিরা গাঁধীর জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে মুখ খুলে জেলে গিয়েছিলেন।
নরেন্দ্র মোদী জমানাতেও দেশে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলে ২০১৫ সালেই অভিযোগ তুলেছিলেন নয়নতারা। প্রতিবাদে সরকারি পুরস্কার ফিরিয়ে দেন তিনি। এর পরে পুরস্কার ফিরিয়ে দেন আরও অনেক বিশিষ্ট জন। অনেকের মত, তার পরেই বিজেপির বিষ নজরে পড়েন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy