শেষরক্ষা হল না। প্রবল চাপের মুখে কংগ্রেসের মুখপাত্রের পদ থেকে সরে যেতে হল শশী তারুরকে।
নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে একাধিক বার মন্তব্য করেছিলেন। যা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছিল তারুরের নিজের রাজ্য কেরলের প্রদেশ কংগ্রেস। শুরুতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী এই চাপের মুখেও তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদের পাশ থেকে সরে যেতে চাননি। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে তারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুস্করের মৃত্যুরহস্য নিয়ে যে ভাবে আবার নতুন করে জট তৈরি হচ্ছে, তার পরে আগেভাগেই শশীকে দলের মুুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দিলেন সনিয়া। কংগ্রেস যদিও দাবি করেছে তারুরকে নিয়ে সিদ্ধান্তে সুনন্দা প্রসঙ্গের কোনও যোগসূত্র নেই, তবে ২৪ আকবর রোডে কংগ্রেস সদর দফতর ঘিরে জল্পনা এমনটাই।
এআইসিসির বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তারুরের বিরুদ্ধে কেরল প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির অভিযোগ দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে রাখা হয়েছিল। কমিটি শশীকে দলীয় মুখপাত্রের পদ থেকে সরানোর সুপারিশ করেছে। সনিয়া গাঁধী তা গ্রহণ করেছেন। তবে মতিলাল ভোরার নেতৃত্বাধীন কমিটির সুপারিশে মেনে এই সিদ্ধান্ত শশীর জন্য কতটা ‘শাস্তি’ তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেক সময়েই যে ভাবে তারুর মোদীর প্রশংসা করেছেন, তাতে সনিয়ার সায় ছিল বলেই কংগ্রেস শিবিরের খবর। কেননা, বিভিন্ন বিষয়ে দল যখন মোদী সরকারের বিরোধিতায় নামছে, তার মধ্যেই সরকারের সঙ্গে পর্দার পিছনে আলোচনার একটা সুযোগ ও সম্ভাবনা এতে তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ কর্মসূচির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হতে যে ভাবে রাজি হয়েছেন শশী, তাতে কেরল কংগ্রেসের নেতারা দশ জনপথের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করেন। তার সঙ্গে যোগ দেন কংগ্রেসে তারুর-বিরোধী বেশ কয়েক জন শীর্ষস্থানীয় নেতা। তবুও টলেননি সনিয়া। শশীকে দলের তরফে শাস্তি না দিতেই মনস্থির করেছিলেন তিনি।
যদিও সুনন্দার মৃত্যুর ন’মাস পরে গত কয়েক দিনে যে ভাবে তাঁর মৃত্যুরহস্য নিয়ে ফের টানাপড়েন শুরু হয়েছে, তা সব অঙ্ক বদলে দিয়েছে। তদন্তকারী এইমসের চিকিৎসকরা জানান, সুনন্দার মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়। আবার রিপোর্টকে অসম্পূর্ণ বলে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ। মামলার তদন্ত ফের শুরু হবে বলে জানিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে সুনন্দার মৃত্যু নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে বলে কংগ্রেস অভিযোগ জানায়। তবে তারুরকে নিয়ে সনিয়ার আজকের সিদ্ধান্ত এই সব বিতর্ক থেকে দলকে দূরে রাখার চেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে।
যদিও এই শাস্তি কতটা ‘কঠোর’ তা নিয়ে দলের ভিতরেও প্রশ্ন রয়েছে। দলের মুখপাত্র শোভা ওঝা জানিয়েছেন, কংগ্রেসের সাংসদ হিসেবে বিদেশ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান শশী তারুরই থাকছেন। দলের একজন অনুগত সৈনিকের মতোই তিনি এআইসিসির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন তারুর। তবে ক্ষোভও জানিয়েছেন যে ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পে তাঁর অবস্থান নিয়ে দলের সামনে তিনি ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ পাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy