সমকামিতা নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অতিরিক্ত সময় দিতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। সমকামিতা অপরাধ— নিজেদের পুরনো রায়কেই এ বার নতুন করে খতিয়ে দেখবে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। আগামিকাল থেকেই শুরু হচ্ছে সেই মামলার শুনানি। এখানেই সমকামিতার আইনি দিকটি নিয়ে নিজেদের অবস্থানের কথা জানাতে হবে কেন্দ্রকে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ নম্বর ধারাটিতে সমকামিতাকে কার্যত অপরাধ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনও পুরুষ, মহিলা কিংবা পশুর সঙ্গে প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ যৌন সঙ্গম করাটা অপরাধ। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানা। স্বাভাবিক ভাবেই সমকামী পুরুষ, সমকামী মহিলা, উভকামী, রূপান্তকামীরা এই আইনের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই সরব। ২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে দেখতে রাজি হয়নি। ৩৭৭ ধারার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের
রায় সমকামী মানুষকে আশা দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৩-য় সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, সমকামিতা অপরাধই। প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষ সমলিঙ্গের প্রাপ্তবয়স্ক কারও সঙ্গে স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক করলেও তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবেই ধরা হবে।
দিল্লি হাইকোর্টের রায় খারিজ হওয়ার পরে শীর্ষ আদালতের রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য বেশ কিছু আবেদন জমা পড়ে। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ আগামিকাল থেকে এই মামলা শুনবে। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র।
এ দিন শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চের সামনে ধারা ৩৭৭ নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে আরও সময় চেয়েছিল কেন্দ্র। আদালত জানায়, অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে না। দেরি করার জন্য কেন্দ্রকে সতর্কও করেছে কোর্ট। ‘‘আদালতে নির্ধারিত সময়েই শুনানি চলবে, পিছনো হবে না। শুনানির সময়েই কেন্দ্রকে নিজেদের কথা জানাতে হবে’’— জানিয়েছেন বিচারপতিরা।
আরও পড়ুন: আলোচনা কম বলেই দুর্নীতি স্বাস্থ্যে: অমর্ত্য
৩৭৭ ধারা বিলোপের জন্য গত এপ্রিল- মে মাস নাগাদ এলজিবিটি সম্প্রদায়ের একটি সংগঠনের আবেদন ছাড়াও আরও বেশ কিছু আর্জি জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টের সামনে। এই মামলা নতুন করে শুনতেও রাজি হয় শীর্ষ আদালত। গত ২৩ এপ্রিল কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চায় কোর্ট।
ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে সুপ্রিম কোর্ট মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ায়, ধারা ৩৭৭ নিয়ে মামলাটিও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy