প্রবীণ তোগাড়িয়া। ফাইল চিত্র।
বিরোধীরা এত দিন ধরে বলে আসছেন, মোদী জমানায় ‘অঘোষিত’ জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। এ বারে সেই রব উঠল খোদ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক কার্যনির্বাহী সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়ার মুখে।
নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তোগাড়িয়ার সম্পর্কের তিক্ততা নতুন নয়। কিন্তু তাঁর সাম্প্রতিক অভিযোগ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি) বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘হিন্দু হেল্পলাইন’ ও ‘ইন্ডিয়া হেলথ লাইন’-এ কর্মরত কর্মীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গোয়েন্দারা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের নির্দেশককে চিঠি লিখে তার প্রতিলিপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকেও পাঠিয়েছেন তোগাড়িয়া। অভিযোগ করেছেন, এ ঘটনা ‘জরুরি’ অবস্থার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে তাঁকে।
জরুরি অবস্থার সময় যাঁরা জেল খেটেছেন এমন অনেকেই অভিযোগ করেন, ইন্দিরা গাঁধী তাঁদের গতিবিধি জানার জন্য আইবি-কে ব্যবহার করতেন। এমনকী প্রাক্তন আইবি প্রধান মলয়কৃষ্ণ ধর তাঁর বই ‘ওপেন সিক্রেট’-এ লিখেছিলেন, মানেকা গাঁধী ও তাঁর পরিবারের উপরে গোয়েন্দাদের নজরদারির ব্যবস্থা করেছিলেন ইন্দিরা। তোগাড়িয়ার চিঠি নিয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাকিরা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন বলেন, ‘‘এই বিষয়ে প্রবীণ তোগাড়িয়াই যা বলার বলবেন। হিন্দু হেল্প লাইন তিনিই চালান।’’ কিন্তু সঙ্ঘ শিবিরে কান পাতলে শোনা যায়, গোয়েন্দাদের সক্রিয়তার অভিযোগ আরও প্রসারিত।
গুজরাতের এক কংগ্রেস নেতার মতে, ‘‘নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় বিরোধী নেতাদের উপর সারা ক্ষণ গোয়েন্দাদের নজর রাখা হতো। ফলে এখন যদি নিজের ঘরের উপরেই তিনি নজর রাখেন, তা অস্বাভাবিক নয়।’’ তোগাড়িয়া বলেন, ‘‘কাজ না পেয়ে যুবকরা আত্মহত্যা করছেন, দেশে কৃষক আত্মহত্যা করছেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঘটছে, ভারত থেকে আইএস-এ যোগ দিচ্ছে যুবকরা— আইবি বরং সে দিকে নজর দিক।’’ তাঁর মতে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্যাপারে কিছু জানতে হলে গোয়েন্দা কর্তারা অনায়াসে তাঁকেই ফোন করে নিতে পারেন। যা শুনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘আইবি নিজেদের কাজের ধরন জানে। কার উপর কী ভাবে নজর রাখতে হবে, সেই কৌশল তাদের রপ্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy