প্রবীণ তোগাড়িয়া। ফাইল চিত্র।
তাঁর মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। এনকাউন্টারের ভয় দেখানো হচ্ছে। মঙ্গলবার এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-এর আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়া। তবে কারা তাঁর মুখ বন্ধ করতে চাইছেন? সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাননি তোগাড়িয়া। কেবল বলেছেন, ‘‘সঠিক সময়ে এ বিষয়ে সব জানাব। কারা আমার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে তার প্রমাণ তুলে দেব।’’
এ দিন ভিএইচপি-র আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতি ভুয়ো সংঘর্ষের অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘রাম মন্দির, গো হত্যা, কৃষকদের জন্য বিভিন্ন সামজিক প্রকল্প নিয়ে কথা বলছিলাম। আর সে জন্যই আমার মুখ বন্ধ করার চক্রান্ত হচ্ছে।’’ পাশাপাশি, রাজস্থানের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের পুলিশের বিরুদ্ধেও চক্রান্তের আঙুল তুলেছেন তোগাড়িয়া। এ দিন অমদাবাদের চন্দ্রামনি হাসপাতালে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন তিনি।
তোগাড়িয়ার আরও অভিযোগ, ‘‘একটি পুরনো মামলায় আমাকে নিশানা করা হচ্ছে। গত কাল এক কর্মকর্তা জানান আমাকে এনকাউন্টারে খুন করার পরিকল্পনার কথা। এর পরই ওই কর্মকর্তা ফিরে যান। এবং আমি নিরাপত্তা রক্ষীকে আড়াইটে নাগাদ আসতে বলি। তখনই রাজস্থান পুলিশের তরফে আমার কাছে একটি ফোন আসে। জানানো হয় আমাকে গ্রেফতার করা কথা।’’
বিষয়টি জানার পরই তা নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন তোগাড়িয়া। তাঁর কথায়, ‘‘তখন দুপুর প্রায় ৩টে বাজে। অটোরিকশা করে জয়পুর যাওয়ার জন্য বিমান ধরতে রওনা হই। তার পরই আমি অচৈতন্য হয়ে পড়ি।’’
আরও পড়ুন: খোঁজ মিলল অচৈতন্য তোগাড়িয়ার
বিতর্কেরও সূত্রপাত সেখান থেকেই।
কারণ, সারা দিন নিখোঁজ থাকার পর ভিএইচপি-র আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতির খোঁজ মেলে সন্ধ্যায়। অমদাবাদের শাহিবাগ এলাকায় অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে। তার পরই ভিএইচপি নেতাকে ভর্তি করা হয় অমদাবাদের চন্দ্রামনি হাসপাতালে। ডাক্তাররা জানান, রক্তে শর্করার পরিমাণ খুবই কম। জ্ঞান ফিরলেও যা শারীরিক অবস্থা, তাতে কোনও বিবৃতি দেওয়ার অবস্থায় তিনি নেই। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দফতর থেকে অটোতে চেপেছিলেন জেড প্লাস স্তরের নিরাপত্তা পাওয়া তোগাড়িয়া। তার পরেই তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: মোদীকে বিপ্লবী নেতা বললেন নেতানিয়াহু
তার আগেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দাবি করেছিল, সকাল ১০টা থেকে তোগাড়িয়ার খোঁজ মিলছে না। রাজস্থান পুলিশ অনেক পুরনো একটি মামলায় তাঁকে আটক করে রেখেছে বলেও দাবি করেন ভিএইচপি মুখপাত্র জয় শাহ। সরকেজ-গাঁধীনগর হাইওয়ে অবরোধ করেন ভিএইচপি-র কর্মী-সমর্থকেরা। পরে তোগাড়িয়াকে খুঁজে বের করতে রাজস্থান, গুজরাত ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানায় ভিএইচপি।
কিন্তু, তোগাড়িয়াকে আটক করার অভিযোগ অস্বীকার করে রাজস্থান পুলিশ। তাদের দাবি ছিল, ভিএইচপি নেতাকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিল তাদের একটি দল। কিন্তু তিনি বাসভবনে ছিলেন না।
সোমবারই তোগাড়িয়ার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের একটি মামলায় পরোয়ানা জারি হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তোগাড়িয়ার সম্পর্কের তিক্ততা নতুন নয়। মাস কয়েক আগেই তিনি আভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি) বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘হিন্দু হেল্পলাইন’ ও ‘ইন্ডিয়া হেলথ লাইন’-এ কর্মরত কর্মীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হচ্ছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠিও দিয়েছিলেন তিনি। মন্তব্য করেছিলেন, এ ঘটনা ‘জরুরি’ অবস্থার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। তার পর এ দিন ফের আইবি’র বিরুদ্ধে সরব হলেন তোগাড়িয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy