ল্লির রেস কোর্স রোডের বাড়িতে গিয়ে ছেলে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে এলেন মা হীরাবেন। রবিবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর টুইটারে কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, হুইলচেয়ারে হীরাবেন। তাঁকে বাড়ি-বাগান দেখাচ্ছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর টুইট, ‘‘মা গুজরাত ফিরে গিয়েছেন। তার আগে তাঁর সঙ্গে কাটানো কিছু ভাল মুহূর্ত। আরসিআর-এ এই তাঁর প্রথম আসা।’’ ছবি: পিটিআই।
‘অচ্ছে দিন’ এসে গিয়েছে— এমন দাবি আর করতে পারছেন না নরেন্দ্র মোদী।
এ মাসের ২৬ তারিখে তাঁর সরকারের দু’বছর পূর্ণ হতে চলেছে। কী ভাবে সরকারের সাফল্যকে তুলে ধরা যায়, তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতা। কিন্তু ইউপিএ সরকার বদলের পরে ‘অচ্ছে দিন’ এসে গিয়েছে বলে যে স্লোগান তুলেছিলেন মোদী, দু’বছরের মাথায় সেই কথাটা আর উচ্চারণ করছেন না তিনি। ২৬ তারিখকে নিয়ে যে প্রস্তুতি, তার মূল থিম বরং ‘ভারতের পরিবর্তন’। দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে বলিউডের খান-বচ্চনের মতো তারকাদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানেরও পরিকল্পনা হচ্ছে। তার নাম ভাবা হচ্ছে, ‘জারা মুসকুরা দো’। মানে হল, সরকার এত কাজ করছে, এ বার তো একটু হাসুন!
বিরোধীরা অবশ্য লাগাতার বলে আসছেন, লোকসভা ভোটে মোদী যে ভূরি ভূরি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। সাধারণ মানুষ সেই তিমিরেই রয়েছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শুধু বড় বড় কথার মায়াজাল তৈরি করছেন। আসলে ‘অচ্ছে দিন’ আসেনি। প্রশাসনের শীর্ষব্যক্তিরাও এখন কবুল করছেন, ‘অচ্ছে দিন’ যে এসে গিয়েছে, সে কথা এখনই বলার সময় আসেনি। গত বছর সরকারের বর্ষপূর্তিতে মোদী গিয়েছিলেন দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মভিটে উত্তরপ্রদেশের নাঙ্গলা চন্দ্রভান গ্রামে। সেখানে তিনি ‘অচ্ছে দিন’ এসে গিয়েছে না-বলে নতুন স্লোগান হাজির করেছিলেন— ‘দুর্দিন ঘুচেছে’। এ বার সরকারের যাবতীয় কর্মকাণ্ড ঘোরাফেরা করছে ‘ভারতের পরিবর্তন’ বা ‘একটু হাসুন’-এর স্লোগানে।
এনডিএ সরকারের দু’বছর পূর্তি উপলক্ষে বেঙ্কাইয়া নায়ডু, নিতিন গডকড়ী, পীযূষ গয়াল, রাজ্যবর্ধন রাঠৌরদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি মন্ত্রীকে নিজেদের মন্ত্রকের সাফল্যসূচি তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সাফল্যের কথাকে তুলে ধরতে #TransformingIndia চালু করা হয়েছে। মোদীর নির্দেশ, দেশের ২০০টি এলাকা বেছে নিতে হবে, যেখানে সরকারের মন্ত্রীরা সশরীর উপস্থিত থেকে দলিত, মহিলা, কৃষক, যুবক ও প্রান্তিক এলাকার মানুষজনের জন্য সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, তার খতিয়ান পৌঁছে দেবেন।
ইন্ডিয়া গেটে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক যে অনুষ্ঠান করতে চাইছে, তাতে বলিউডের তিন খান ও অমিতাভ বচ্চনকে আনা যায় কি না, তার ভাবনাচিন্তা চলছে। সূত্রের খবর, আট ঘণ্টার অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রীকে বসিয়ে চলবে প্রশ্নোত্তর পর্ব। মোদীর এক মন্ত্রীর কথায়, ‘‘কত জনের জনধন অ্যাকাউন্ট খোলা হল, কত গরিব পরিবারে রান্নার গ্যাস এল, সেই পরিসংখ্যানে আটকে থাকতে চাইছেন না প্রধানমন্ত্রী। তিনি চান, গ্রাম-গঞ্জে সরকারি প্রকল্পে যাঁরা লাভবান হয়েছেন, তাঁদের কাহিনিকে সামনে নিয়ে আসতে। যাতে বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য হয়, বিরোধীদের মুখও বন্ধ করা যায়।’’
‘অচ্ছে দিন’ এসে গিয়েছে কথাটা সরাসরি কেন বলা যাচ্ছে না, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন অমিত শাহ। গুজরাতের একটি সভায় তাঁর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেস সরকারের ভাঁড়ার এতটাই শূন্য করে গিয়েছে যে গরিবের উন্নয়ন করতে এখন কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীকে।’’ বিজেপির শীর্ষ নেতারা আশা করছেন, সরকার ক্ষমতায় এসেছে পাঁচ বছরের জন্য। পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হতে ‘অচ্ছে দিন’ও চলে আসবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy