মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ জনকে খুন করেছিলেন কেরলের এক তরুণ। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তাঁর প্রেমিকাও। ওই ঘটনার তদন্তেই এ বার উঠে এল নয়া তথ্য। জানা গেল, প্রেমিকা তাঁকে ছেড়ে থাকতে পারবেন না ভেবেই তাঁকে খুন করেছিলেন তরুণ! তার পর বিষ খেয়েছিলেন নিজেও।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের ভেঞ্জারামুদু থানায় গিয়ে বছর তেইশের এক তরুণ জানান, তিনটি পৃথক জায়গায় ছয় জনকে খুন করেছেন তিনি। খবর শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান পুলিশকর্মীরা। পরে তরুণের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, সত্যিই পাঁচটি খুন করেছেন আফান নামে ওই তরুণ। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন আফানের ১৩ বছর বয়সি ভাই, ঠাকুরমা, কাকা, কাকিমা এবং প্রেমিকা। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন তাঁর মা।
আরও পড়ুন:
এর পরেই শুরু হয় তদন্ত। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, আফানের বাবা কর্মসূত্রে সৌদি আরবে থাকেন। বেশ কিছু দিন ধরেই আফানদের পরিবারে আর্থিক সমস্যা চলছিল। অন্তত ১৪ জনের কাছ থেকে মোট ৬৫ লক্ষ টাকা ধার করেছিলেন আফান। কিন্তু অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও ঋণ শোধ করতে না-পারায় পাওনাদারেরা তাঁদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করেন। তাই মা এবং ভাইকে নিয়ে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন ওই যুবক। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেন মা। তখনই মা এবং ভাইকে খুনের পরিকল্পনা করেন ওই যুবক। ভাইকে খুনের পর মাকেও আক্রমণ করেন তিনি। তার পর এক পর্যায়ে মা মারা গিয়েছেন ভেবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান আফান। এর পর ঠাকুমা, কাকা, কাকিমা এবং সবশেষে প্রেমিকার বাড়ি গিয়ে তাঁকেও খুন করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
অভিযুক্ত জেরায় জানিয়েছেন, তিনি জানতেন প্রেমিকা তাঁকে ছাড়া থাকতে পারবেন না। তাই বিষ খাওয়ার আগে তাঁকে খুন করেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গিয়েছে, ঠাকুরমাকে খুনের পর তাঁর সোনার চেনটিও চুরি করে নিয়েছিলেন আফান। সেটি বিক্রি করে এক জনের থেকে ধার নেওয়া ৭৪ হাজার টাকার মধ্যে ৪০ হাজার মেটান। শেষমেশ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তবে ঋণ ছাড়াও পাঁচ খুনের নেপথ্যে আর কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তা এখনও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।