বি এস ইয়েদুরাপ্পা। ফাইল চিত্র।
ফোনের ও-পারে কংগ্রেসের এক বিধায়ক। এ-পার থেকে বলা হচ্ছে, ‘‘১১ জন ইতিমধ্যেই এসে এসেছে। আপনি হবেন ১২তম। চলে আসুন।’’ কর্নাটকের কংগ্রেস বিধায়কদের ভাঙানোর জন্য ঠিক এমনই টোপ দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ‘ভাঁওতা’ ধরা পড়ল, যখন একাধিক কংগ্রেস বিধায়ক নিজেদের মধ্যে কথা বললেন। দেখা গেল, তাঁদের সবাইকে বলা হয়েছে, ‘‘আপনি ১২তম। ১১ জন ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে!’’
আর এই কৌশল ধরা পড়তেই বিজেপির চাণক্য নীতি ফ্লপ করল কর্নাটকে। মুখ থুবড়ে পড়ার অবস্থায় ‘অপারেশন পদ্ম’-র দ্বিতীয় অধ্যায়। কংগ্রেস নেতারা বলেছেন, অমিত শাহ এত দিন নিজেকে চাণক্য ভাবতেন। তবে কর্নাটকে ডি কে শিবকুমারের মতো চাণক্য কিন্তু তৈরিই আছে।
লোকসভা ভোটের আগে কর্নাটকে সরকার উল্টে দিতে ঘুঁটি সাজানোর অবশ্য সব আয়োজনই হয়েছিল। দিল্লির পাশেই হরিয়ানার গুরুগ্রামে সাততারা হোটেলে তিন দিন ধরে ঘাঁটি গেড়েছিলেন বিজেপির ১০৪ জন বিধায়ক। ৫০টির মতো ঘর নেওয়া হয়েছিল তাঁদের জন্য। এক-একটির দৈনিক ভাড়া ৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়া, খাওয়াদাওয়া, হল বুকিং— কোটি কোটি টাকা গচ্চা। কংগ্রেস ভাঙার খেলা যখন চলছে, বিজেপি নেতারা ভেবেছিলেন, নিজেদের দলে যেন আঁচড় না লাগে। তাই এমন ব্যবস্থা। তবে অন্যের ঘর ভাঙতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার হতাশ হয়ে সাততারা হোটেল ছাড়তে হল বিজেপির বিধায়কদের।
সঙ্গে অবশ্য জুটল কটাক্ষ। কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি দীনেশ গুন্ডু রাও আজ বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশে টুইট করেছেন, ‘‘বিলাসবহুল আস্তানায় ছুটি কাটিয়ে রাজ্যে ফিরছেন বিজেপির বিধায়কেরা। তাঁদের স্বাগত জানাচ্ছি। ওঁরা এখন চাঙ্গা। আশাকরি নিজেদের এলাকার কাজে মন দেবেন। অনেক দিন হল ওঁরা নিজেদের এলাকার মানুষদের অবহেলা করছেন।’’ তবে বেঙ্গালুরু ফিরে যাওয়ার আগে বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা দাবি করেছেন, লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি নিতেই নাকি কর্নাটকের বিধায়কদের হোটেলে রাখা হয়েছিল।
আসলে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের টানাপড়েনকে সামনে রেখেই সরকার উল্টে দেওয়ার খেলায় নেমেছিল বিজেপি। দীর্ঘ দিন থেকেই বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিলেন কুমারস্বামী। কিন্তু রাহুল গাঁধী তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার টোপ দিতেই পরিস্থিতি ঘুরে যায়। লোকসভার আসন রফা নিয়ে অবশ্য দু’দলের নতুন করে টানাপড়েন চলছে। কুমারস্বামীকে নিয়ে কংগ্রেসের উত্তর কর্নাটকের কিছু নেতার ক্ষোভও রয়েছে। একে পুঁজি করেই নেমেছিল অমিত শাহের দল। কিন্তু গোটা রণনীতিই আপাতত মুখ থুবড়ে পড়ল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy