নাট্যসাহিত্য ইংরেজি বিএ-এমএ কোর্সে গুরুত্বের সঙ্গে পড়ানো হয়। কিন্তু নাটকের সঙ্গে পরিচয় হয় ক’জনের! তাই এ বার সাতদিনের থিয়েটার কর্মশালার আয়োজন করল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ।
প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাট্যকার সেলিম আরিফ ও স্থানীয় নাট্যব্যক্তিত্ব শান্তনু পাল। বিভাগীয় প্রধান দীপেন্দু দাসও তাঁর নাটকের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার অভিজ্ঞতাও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। তাঁর আশা, ‘‘এই কর্মশালার দরুন আসাম বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, সামগ্রিকভাবে বরাক উপত্যকাও উপকৃত হবে।’’
১০ এপ্রিল কর্মশালার উদ্বোধন করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য রঞ্জুরানি ধামালা। চলে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। নাটকের উপর উপত্যকায় এর আগে বহু কর্মশালা হলেও আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম, জানিয়েছেন উপাচার্য ধামালা। তাঁর কথায়, ‘‘নাটক হল যোগাযোগ বা গণমাধ্যমের অন্যতম উপায়।’’ বিশিষ্ট পরিচালক সেলিম আরিফ বলেন, ‘‘ভারতীয় থিয়েটার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ভুগছে। সে জায়গায় আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ উত্সাহজনক।’’ তিনি অসমের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং নাট্য-সমৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করেন।
বিভিন্ন দিনে কর্মশালায় আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনুপকুমার দাস, সৌগতকুমার নাথ ও শিবশঙ্কর মজুমদার। তাঁরা নাটক বিষয়ে তাত্ত্বিক আলোচনা করেন। শান্তনু শেখান অভিনয়ের অ-আ-ক-খ। মঞ্চসজ্জা বা নির্দেশনার পাঠ যেমন ছিল কর্মশালার বিষয়, তেমনি থিয়েটারের ইতিহাস, তার বিবর্তনেরও নানাদিক নিয়ে চর্চা হয়।
কর্মশালার ফাঁকে ফাঁকে হয় বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান। ইংরেজি বিভাগ ও বাংলা বিভাগ মিলে একদিন গান-বাজনার আসর বসায়। মঞ্চস্থ হয় বাদল সরকারের ‘হট্টমালার ওপারে’। রবিবার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা শান্তনু পালের তত্ত্বাবধানে পরিবেশন করে চারটি ছোট নাটক। পরে সকলের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন রেজিস্ট্রার সঞ্জীব ভট্টাচার্য। আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, হাফলং সরকারি কলেজ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-গবেষক-শিক্ষকরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালা শেষে শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘এই ধরনের উদ্যোগ খুব জরুরি। একে তো বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে নাট্যসাহিত্য পড়তে গিয়ে প্রায়োগিক জ্ঞান খুব কাজে দেয়। অন্য দিকে, এমন কর্মশালা নাট্য-প্রতিভা খুঁজে বের করতেও যথেষ্ট সহায়ক হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই কর্মশালায় বেশ কিছু ভাল অভিনেতাকে পাওয়া গিয়েছে। নির্দেশনায়ও অনেকে দক্ষতার ছাপ রেখেছেন। মঞ্চসজ্জা বা কারিগরি জ্ঞানে কয়েকজন চমক দেখিয়েছেন।
স্থানীয় নাটকপ্রিয় মানুষ আশাবাদী, নাটক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবনাচিন্তা বরাক উপত্যকাকে সমৃদ্ধ করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy