নয়াদিল্লি স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম বদল সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা হয়নি বলে দাবি রেলের। সব ট্রেন সময়েই চলছিল বলে দাবি উত্তর রেলের। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর দিল্লি পুলিশ দেখতে পাচ্ছে গোলযোগ তৈরি হয় রেলের ঘোষণা থেকেই!
শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনে যাত্রীদের ভিড়ের মধ্যে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ধাক্কাধাক্কি, হুড়োহুড়ির মধ্যে মৃত্যু হয় ১৮ জন যাত্রীর। দিল্লি পুলিশ জানাচ্ছে, রেলের ঘোষণাকে কেন্দ্র করেই যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। ওই বিভ্রান্তির জেরেই প্ল্যাটফর্মে পদপিষ্টে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। প্রয়াগরাজ যাওয়ার দু’টি ট্রেনের নাম প্রায় একই! একটির নাম ‘প্রয়াগরাজ স্পেশাল’ এবং অন্যটি ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস’। এর জেরেই গোলযোগের সূত্রপাত বলে মনে করছে পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ জানাচ্ছে, নামের শুরুতে ‘প্রয়াগরাজ’ থাকা দুই ট্রেনের ঘোষণা ঘিরেই বিভ্রান্তি ছড়ায়। নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস’। এরই মধ্যে রেল ঘোষণা করে, ‘প্রয়াগরাজ স্পেশাল’ ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে। ফলে যে যাত্রীরা ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে উঠতে পারেননি, তাঁরা মনে করেন ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে। এর ফলে শেষ মুহূর্তে মালপত্র নিয়ে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার জন্য যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেই কারণেই পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে মোট চারটি ট্রেন ছিল প্রয়াগরাজে যাওয়ার। রেলের দাবি, সব ট্রেন সময়েই চলছিল। যদিও প্রাথমিক অনুসন্ধানের পরে পুলিশের দাবি, প্রয়াগরাজমুখী চারটি ট্রেনের মধ্যে তিনটি ট্রেনই দেরিতে চলছিল। এর ফলে স্টেশনে যাত্রীদের অপ্রত্যাশিত ভিড় হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
এর আগে উত্তর রেলের তরফে দাবি করা হয়, কোনও প্ল্যাটফর্ম বদল হয়নি। এক যাত্রী ১৪ এবং ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে ফুট ওভারব্রিজে পড়ে যান। তার জেরে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। রেলের এই বয়ানের পরেই দিল্লি পুলিশের বিবৃতি আসে। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ অনুসারে, প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস রাত ১০টা ১০ মিনিটে নয়াদিল্লি থেকে ছাড়ার কথা ছিল। বাকি তিনটি ট্রেনই দেরিতে চলছিল। ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে মগধ এক্সপ্রেস কিছুটা দেরিতে আসে। ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসার কথা ছিল ‘স্বতন্ত্রতা সেনানী’ এক্সপ্রেসের। সেটিও দেরিতে চলছিল। ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেসও দেরিতে ছিল। দেরিতে থাকা এই তিনটি ট্রেনেরই যাত্রাপথ কুম্ভের উপর দিয়ে।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, দুর্ঘটনার পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানেও উঠে এসেছে ঘোষণা ঘিরে বিভ্রান্তির কথা। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে ছাড়ার জন্য ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসার কথা ছিল প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস নামে স্পেশ্যাল ট্রেনটির। আচমকাই ঘোষণা করা হয় যে, সেই ট্রেন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে রেল!