নয়াদিল্লি স্টেশনে শনিবার রাতে ঠিক কী হয়েছিল? এই নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবির সঙ্গে মিলছে না ভারতীয় রেলের বক্তব্য। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবিকে এক প্রকার খারিজই করে দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। জানিয়েছেন, শনিবার সব ট্রেন সময়েই চলছিল। আগে থেকেই স্টেশনে ভিড় ছিল। ওই ভিড়ে ধাক্কাধাক্কিতে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ যায় পাঁচ শিশু, ১১ মহিলা-সহ ১৮ জনের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, শনিবার রাতে নয়াদিল্লি স্টেশনের ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ার কথা ছিল প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস নামে স্পেশ্যাল ট্রেনটির। আচমকাই ঘোষণা করা হয় যে, সেই ট্রেন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। তার পরেই ফুটব্রিজে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সিঁড়িতে উঠতে গিয়ে অনেকেই পড়ে যান। রেলের তরফে এই দাবি খারিজ করা হয়েছে। উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হিমাংশুশেখর উপাধ্যায় জানান, স্টেশনে এমনিতেই খুব ভিড় ছিল। প্ল্যাটফর্মে লোকজন ছোটাছুটি করছিলেন। সে সময় একটি সিঁড়িতে পা হড়কে পড়ে যান এক যাত্রী। তার জেরে এই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা।
আরও পড়ুন:
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, নয়াদিল্লি স্টেশনের ১৩ এবং ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ভিড় ছিল খুব বেশি। সেখানে দু’টি ট্রেন ধরার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন যাত্রীরা। একটি মগধ এক্সপ্রেস, অন্যটি ছিল জম্মুগামী ট্রেন। জম্মুগামী ট্রেনটি দেরিতে চলছিল। এই পরিস্থিতিতে শনিবার রাত ১০টা ১০মিনিট নাগাদ প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস নামে বিশেষ ট্রেনটি ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ার কথা ছিল। ট্রেন ছাড়ার সময় এগিয়ে আসতে স্টেশনে জড়ো হতে থাকেন বহু যাত্রী। রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মাঝের সেই সময়ে কুম্ভে যাওয়ার জন্য প্রায় হাজার জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়। এর থেকে বোঝা যায়, কতটা ভিড় হয়েছিল। এমনটাই দাবি রেলের একটি সূত্রের। উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হিমাংশুশেখরের কথায়, ‘‘কোনও ট্রেন বাতিল হয়নি। ট্রেন প্রবেশের প্ল্যাটফর্মও বদল করা হয়নি। সব ট্রেন সময়েই চলছিল।’’
নয়াদিল্লি স্টেশনের ঘটনার তদন্তের জন্য দুই সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে রেল। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই কমিটিতে রয়েছেন উত্তর রেলের প্রিন্সিপাল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার নরসিংহ দেও, উত্তর রেলের প্রিন্সিপাল চিফ সিকিয়োরিটি কমিশনার পঙ্কজ গঙ্গাওয়ার। নতুন তৈরি এই কমিটি স্টেশনের সব সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।