ঝোড়ো হাওয়ায় উত্তাল সমুদ্র। চেন্নাইয়ে। ছবি: পিটিআই।
ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সোমবার দুপুরে চেন্নাইয়ের বুকে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ‘ভরদা’। রবিবার বিকেল থেকেই তামিলনাড়ুর উপকূলীয় অঞ্চল এবং চেন্নাইয়ে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। সেই সঙ্গে সমান তালে চলছিল ঝোড়ো হাওয়া। এ দিন সকাল থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকে। ঘূর্ণিঝড় যত তামিলনাড়ুর দিকে এগিয়েছে হাওয়ার গতিবেগ তত বেড়েছে। চেন্নাইয়ের পাশাপাশি এর প্রভাব পড়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুদুচেরিতেও। ঝড়ের গতিবিধি ও শক্তির দিকে খেয়াল রেখে রাজ্য প্রশাসন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। অন্ধ্র ও তামিলনাড়ু উপকূলে নৌসেনার দু’টি জাহাজ নোতায়েন রাখা হয়। ব্যবস্থা করা হয় চিকিত্সক, ওষুধ, কম্বল, খাবারের। এ দিনের ঝড়ে চেন্নাইয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর।
বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাওয়ার তেজও বেড়েছে। চেন্নাইয়ের বহু জায়গায় উপড়ে পড়ে গাছ। বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় গোটা চেন্নাইয়ে। তামিলনাড়ু সরকার সমস্ত জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, চেন্নাইবাসীদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় সরকারের তরফে।
ভিডিও সৌজন্য: বীর্যেন্দু গুপ্ত।
খুব প্রয়োজন না হলে বাইরে না বেরোনোই ভাল বলে ঘোষণা করা হয়। চেন্নাই, কাঞ্চিপুরম এবং উপকূলীয় জেলা ভিল্লুপুরমের সব স্কুল ও কলেজ এ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আন্না বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দিন পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে রেজিস্ট্রার এস গণেশন জানান।
কোন পথে এল ‘ভরদা’।
পরিস্থিতির মোকাবিলায় তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৮টি দল এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ৬টি দল মোতায়েন করা হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার নেল্লোর ও প্রকাশম জেলায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তামিলনাড়ুতে বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে বেশ কয়েকটি উড়ানও। চেন্নাইয়ের বিমানবন্দর বিকেল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও খবর: ক্যাশলেস তোপ মমতার, ফের পথে নামছে তৃণমূল
‘ভরদা’ কী?
এই নামটি পাকিস্তানের দেওয়া। যার মানে ‘লাল গোলাপ’। সাধারণত ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলির নামকরণ করে থাকে ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, তাইল্যান্ড, মায়ানমার, মলদ্বীপ এবং ওমান।
তাইল্যান্ডের দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের উপর তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ভারতে প্রবেশ করার আগে তাইল্যান্ডে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় ভরদা। বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু হয় সেখানে। এর প্রভাব পড়ে আন্দামান ও নিকোবরে। গত কয়েক দিন ধরে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টিতে নাজেহাল হতে হয়। ঘুরতে গিয়ে সেখানে আটকে পড়েন বহু পর্যটক। যদিও নৌসেনার সহযোগিতায় তাঁদের সকলকেই নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy