অখিলেশ যাদব। —ফাইল চিত্র।
লখনউয়ের রাজনৈতিক অলিন্দে জল্পনা তীব্র করে একা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিংহ যাদব। সমাজবাদী পার্টির অন্দরে চলতে থাকা তুমুল ক্ষমতার লড়াইয়ের মাঝে বুধবার সকালে অখিলেশ হঠাৎ রাজ্যপাল রাম নাইকের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ায় রাজ্য রাজনীতির সমীকরণে নানা রকম রদবদলের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। লখনউয়ের মসদন ঘিরে ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে রাজনৈতিক সমীকরণ।
লখনউ রাজ ভবনে ঢোকার সময় এবং বেরনোর সময় অখিলেশ যাদব এ দিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। তাতেই জল্পনার আগুন আরও বেড়েছে। যাদব পরিবারের অন্দরে কাদা ছোড়াছুড়ি থামার নাম নিচ্ছে না এখনও। দলে অখিলেশ সংখ্যালঘু, এমনটা প্রমাণ করতে এখন উঠে পড়ে লেগেছেন খোদ মুলায়ম সিংহ যাদব। মঙ্গলবার শিবপালকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে সপা সুপ্রিমো বোঝাতে চেয়েছেন, গোটা দল তাঁর পাশে রয়েছে, শুধু অখিলেশ ‘অবাধ্য’। দল পরের বার ক্ষমতায় এলে অখিলেশই মুখ্যমন্ত্রী হবেন, এমন নিশ্চয়তাও যে নেই, মুলায়ম তাও মঙ্গলবার আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কাকা শিবপাল, সৎ মা সাধনা, সৎ ভাই প্রতীক এবং পারিবারিক বন্ধু অমর সিংহকে পাশে নিয়ে বাবা মুলায়ম যে ভাবে অখিলেশকে পরিবারের মধ্যেই কোণঠাসা করার চেষ্টা শুরু করেছেন, তাতে অখিলেশ মুখ্যমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিতে পারেন বলে জল্পনা ছিল। বুধবার সকালে অখিলেশ আচমকা রাজ ভবনে যাওয়ায় ইস্তফার জল্পনা অক্সিজেন পায়।
খুব তাড়াতাড়িই অবশ্য স্পষ্ট হয়ে যায়, অখিলেশ যাদব মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়ছেন না। তা হলে কেন গিয়েছিলেন রাজ্যপাল রাম নাইকের সঙ্গে দেখা করতে? শুরু হয়ে যায় আর এক প্রস্থ জল্পনা। সরকারে নিজের পূর্ণ কর্তৃত্ব ধরে রাখতে পাল্টা ঘুঁটি সাজাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এমনই আলোচনা ছড়াতে থাকে।
আরও পড়ুন: ভাগ বুঝে নেওয়ার যুদ্ধে অখিলেশ-প্রতীক
বুধবার সকালেই উত্তরপ্রদেশ মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য তেজনারায়ণ পাণ্ডে ওরফে পবন পাণ্ডেকে সপা থেকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছেন দলের রাজ্য সভাপতি শিবপাল যাদব। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। তেজনারায়ণ পাণ্ডে কট্টর অখিলেশ-পন্থী হিসেবেই পরিচিত। অখিলেশকে ধাক্কা দিতেই যে শিবপাল তাঁকে দল থেকে বার করে দিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও মহলেই সংশয় নেই। কিন্তু অখিলেশও পাল্টা চালে সমস্যায় ফেলে দিয়েছেন শিবপাল শিবিরকে। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ তেজনারায়ণকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাননি, স্বমহিমায় মন্ত্রিত্বে বহাল রেখে দিয়েছেন। দল যাঁকে বহিষ্কার করে দিয়েছে, তাঁকে অখিলেশ যদি মন্ত্রিসভায় রেখে দেন, তা হলে কোনও আইনি বা সাংবিধানিক জটিলতা তৈরি হতে পারে কি না, সে নিয়ে কিছু সংশয় তৈরি হয়েছে। সেই ব্যাপারেই অখিলেশ রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন বলে অনেকের দাবি। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, রাজ্যপালকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলেন অখিলেশ।
শিবপাল যাদব সহ মোট চার মন্ত্রীকে রবিবার মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেছিলেন অখিলেশ। মুলায়মের নির্দেশ সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ এখনও ওই চার জনকে মন্ত্রিসভায় ফেরাননি। অন্য দিকে সাংসদ রামগোপাল যাদব, বিধায়ক উদয়বীর সিংহ সহ অনেক অখিলেশ পন্থীকেই গত কয়েক দিনে দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন শিবপাল। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন মন্ত্রী তেজনারায়ণ পাণ্ডে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy