হাসপাতাল চলে আসে বাড়িতে! তাও ক্যানসারের চিকিৎসা! শুরুর দিকে কথাটা কেউ বিশ্বাস করতেও পারেননি। এখন করেন বরাকবাসী। রোগীর যন্ত্রণা বেড়ে গেলেই বাড়ির মানুষ কাছাড় ক্যানসার হাসপাতালে ফোন করেন। হাসপাতালের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, গত বছর ৩৩৪ জনের বাড়ি গিয়ে ওষুধপত্র দিয়েছেন চিকিৎসকরা। শুধু কি কাছাড় জেলায়! রাস্তাঘাটের এই বেহাল অবস্থাতেও হাসপাতালের টিম গিয়েছে করিমগঞ্জ থেকে হাইলাকান্দি।
কাছাড় ক্যানসার হাসপাতাল ঘিরে অবিশ্বাস্য ঘটনার সূচনা অবশ্য জন্মতেই। মাত্র ৩ হাজার ১৮০ টাকা হাতে নিয়ে হাসপাতাল গড়তে নেমে ছিলেন শিলচরের কয়েকজন আবেগপ্রবণ সমাজকর্মী। তবে পাশে দাঁড়ানোর লোকের অভাব হয়নি। এক রিকশাচালক হাট বারে তাঁর উপার্জিত ‘৩৪ টাকা’র পুরোটাই দান করেছিলেন হাসপাতাল তহবিলে। সোনাপুরের রবীন্দ্র চন্দ ৪০ হাজার টাকায় নিজের দোকানঘর বিক্রি করেছিলেন। সেই টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকাই তুলে দিয়েছিলেন ওই উদ্যোগীদের হাতে।
সাধারণ মানুষ থেকে নামী-দামী রাজনীতিক, নানা মানুষের ভরসাতেই ১৯৯২ সালের ১২ এপ্রিল জন্ম নিয়েছিল ‘কাছাড় ক্যানসার হসপিটাল সোসাইটি’। মেহেরপুরে ৭ বিঘা সরকারি জমিতে মাথা তুলে দাঁড়ায় কাছাড় ক্যানসার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার। ভারতের আর কোথাও শুধু জনসমর্থনে ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে ওঠার এমন নজির আছে কিনা জানা নেই, এমনই দাবি সোসাইটির সচিব মিহির কর পুরকায়স্থের।
আরও পড়ুন: নিজে জয়ী, আত্মরক্ষার পাঠ দিচ্ছেন অন্যদের
সন্তোষমোহন দেব, গৌতম রায়, ভূমিধর বর্মন, তরুণ গগৈ, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। গৌতম রায় তো গত ১০ বছর ধরে প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছেন এই হাসপাতালের তহবিলে। মন্ত্রিত্ব খোয়ানোর পর গত ৮ মাস ধরে সেই সহায়তা বন্ধ। তবে গৌতমবাবু জানান, ফের সাহায্য করবেন। বরাক রাজনীতির নতুন প্রজন্মও এই উদ্যোগে সামিল। হাসপাতালের এ বারের রৌপ্যজয়ন্তী বর্ষে, লক্ষ্মীপুরের বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা তাঁর ‘বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল’ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্যানসার হাসপাতালকে বরাদ্দ করছেন। একই ভাবে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপ পাল, তিন বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, আমিনুল হক লস্কর ও কিশোর নাথও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy