ঘুম মানুষের ন্যূনতম চাহিদাগুলির মধ্যে একটি। তাই কোনও মানুষের ঘুমোনোর অধিকার লঙ্ঘন করা যায় না। একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ বম্বে হাই কোর্টের। এই মামলায় ৬৪ বছরের এক বৃদ্ধ আদালতে অভিযোগ করেন যে, সারা দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর মধ্যরাতে তাঁর বয়ান নথিবদ্ধ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। ওই বৃদ্ধের কৌঁসুলিদের বক্তব্য শোনার পর বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি রেবতী মোহিতে দেরে এবং মঞ্জুষা দেশপাণ্ডের নির্দেশ, “অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) সংক্রান্ত মামলায় বয়ান নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে চলতে হবে ইডির তদন্তকারীদের।
দুই বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “ঘুমোনোর অধিকার কিংবা চোখের পলক ফেলার অধিকার মানুষের ন্যূনতম চাহিদাগুলির একটি। তাই এই বিষয়টি সুনিশ্চিত করা না গেলে এক জন মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়।”
মহারাষ্ট্রের গান্ধীধাম এলাকার বাসিন্দা, ৬৪ বছর বয়সি রাম কোতুমল ইসরানিকে অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইনে গ্রেফতার করার আগে গত ৭ অগস্ট একটানা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দিল্লিতে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। অভিযোগ, তাঁর ফোন বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হয়। এমনকি শৌচাগারে গেলেও ওই বৃদ্ধকে অনুসরণ করতে থাকেন তদন্তকারীরা। ওই বৃদ্ধের গ্রেফতারিকে বেআইনি বলে দাবি করে সোমবার হাই কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল, আয়ুষ জিন্দল এবং যশ ওয়ার্ধন। অভিযোগ, সারা দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর রাত সাড়ে ১০টা থেকে পরের দিন ভোর ৩টে পর্যন্ত ওই বৃদ্ধের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়। ভোর সাড়ে ৫টায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন:
বৃদ্ধের আইনজীবীদের বক্তব্য, তাঁদের মক্কেল তদন্তে অসহযোগিতা করেননি। কিন্তু শারীরিক কারণে তাঁর রাতে ঘুমের প্রয়োজন ছিল। কেন এত দ্রুততার সঙ্গে মধ্যরাতে বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল, সেই প্রশ্ন ওঠে আদালতে। যদিও ইডির হয়ে আদালতে সওয়াল করা আইনজীবী হিতেন বেনেগাঁওকর এবং আয়ুষ কেদিয়ার বক্তব্য, মধ্যরাতে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে কোনও আপত্তি জানাননি ওই বৃদ্ধ। কিন্তু ইডির যুক্তিতে সন্তুষ্ট হননি বম্বে হাই কোর্টের দুই বিচারপতি।