অমিত শাহ
সকাল সাড়ে দশটা। শবরীমালার রায় এল। আরও এক ঘণ্টা পর ভীমা কোরেগাঁওয়ের।
শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণা হতেই দু’হাত তুলে স্বাগত জানাল কংগ্রেস। কিন্তু চুপ বিজেপি। তারা ওত পেতে ছিল ভীমা কোরেগাঁওয়ের রায়ের জন্য। সমাজকর্মীদের গ্রেফতারের নেপথ্যে বিদ্বেষ নেই বলে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ ঘোষণা করতেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন অমিত শাহ। তার পর একে একে দলের অন্যরা।
পাঁচ সমাজকর্মীর গ্রেফতারির পরে রাহুল গাঁধী টুইট করেছিলেন, ‘‘ভারতে একটিই ‘এনজিও’-র জায়গা আছে। তার নাম আরএসএস। বাকি সব বন্ধ করে জেলে পুরে দিন। নতুন ভারতে স্বাগত।’’ অমিত শাহ সেই টুইট ধরেই পাল্টা হামলা করলেন, ‘ভারতে মূর্খামির একটিই জায়গা আছে। তার নাম কংগ্রেস। ভারতের ‘টুকরো টুকরো গোষ্ঠী’, মাওবাদী, ভুয়ো সমাজকর্মী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত শক্তিকে সমর্থন করে সৎদের অপমান করুন। রাহুল গাঁধীর কংগ্রেসে স্বাগত।’’
ভীমা কোরেগাঁও নিয়ে আলাদা রায় লিখেছেন বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্পষ্ট। বস্তুত, এটিই কংগ্রেসের মনের কথা। বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের সুরেই রাহুল অতীতে বলেছেন যে, বিরুদ্ধ মতই গণতন্ত্রের প্রতীক। আধার মামলাতেও আলাদা রায় লিখেছিলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। কংগ্রেস সে দিন খোলাখুলি বলেছিল, বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মতের সঙ্গেই আছে তারা। আজ অবশ্য এ রকম কিছু বলেনি রাহুলের দল।
তবে অমিত যে ভাবে রাহুলকে ‘মাওবাদী’, ‘টুকরো টুকরো গোষ্ঠী’র সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তার জবাব দিয়েছে কংগ্রেস। রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘এই অমিত শাহই তো আইএসআই-এর প্রশস্তি করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে আইএসআই-এর।’’ কংগ্রেসের প্রশ্ন, শবরীমালা নিয়ে চুপ কেন বিজেপি? শুধু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মেনকা গাঁধী নামমাত্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। কিন্তু বিজেপি চুপ! কংগ্রেসের প্রশ্ন, ধর্মবিশ্বাসে আঘাত এল বলে কি লিঙ্গবৈষম্যের অবসান নিয়েও বলতে এত দ্বিধা বিজেপির?
বিজেপি দফতরে মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বললেন, ‘‘আজ রাহুল গাঁধীর পরাজয়। শুধু বিরুদ্ধ মত বা বদলার ভাবনায় গ্রেফতার হয়নি, সাফ বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রাথমিক ভাবে মাওবাদী যোগেরও প্রমাণ আছে। আর অভিযুক্তরা পছন্দমতো তদন্তকারী সংস্থা বাছতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।’’ প্রশ্ন উঠল, ভীমা কোরেগাঁও-এর আগেই তো শবরীমালার রায় এসেছে। তা নিয়ে দলের কী অভিমত?
সম্বিত বললেন, ‘‘এখনও আমরা রায় পড়িনি।’’ তা হলে পরের রায় এত দ্রুত পড়ে নিয়ে এত আক্রমণ? এ বার ঢোক গিললেন বিজেপি নেতাটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy