থিম্ফু থেকে গুয়াহাটি হয়ে সিঙ্গাপুরের সরাসরি উড়ান চালু করবে ভুটানের সরকারি বিমানসংস্থা।
ভারত-ভুটান দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে, কলকাতার পরে, গুয়াহাটিতেও খুলল ভুটান কনসুলেট। উদ্বোধন করলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সেরিং টোবগে, বিদেশমন্ত্রী দামচো দর্জি ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। সেই সঙ্গে ভুটানের বিদেশমন্ত্রী ঘোষণা করলেন— থিম্ফু থেকে গুয়াহাটি হয়ে সিঙ্গাপুরের সরাসরি উড়ান চালু করবে ভুটানের সরকারি বিমানসংস্থা।
গত বছর নমামি ব্রহ্মপুত্র উৎসবে এসেছিলেন টোবগে। ডোকলাম উত্তর পর্বে এটিই তাঁর প্রথম ভারত সফর। অপ্রিয় প্রসঙ্গ এড়াতে এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্ন হাসিমুখে এড়িয়ে গেলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। বিদেশমন্ত্রী দামচো বিভিন্ন প্রসঙ্গে আনন্দবাজারের প্রশ্নের জবাব দিলেও, ডোকলাম নিয়ে প্রশ্ন করায় বলেন— "আজ খুশির দিন, উদযাপনের আবহ। খামোকা সেখানে বিতর্কিত প্রসঙ্গ টেনে আনা ঠিক হবে না।" ডামচোর কথায়, "ভারত-ভুটান কূটনৈতিক সম্পর্ক মাত্র ৫০ বছর হলেও, অসম-ভুটানের সম্পর্ক ৮০০ বছরের পুরোন। ভুটানের মানুষ বহু কাল থেকে অসমের উপরে নির্ভরশীল। ওখানকার ব্যবসায়ী, ছাত্রদের গুয়াহাটি প্রায়ই আসতে হয়। ভুটানের সঙ্গে অসমের ২৬৭ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এই কনসুলেটের মাধ্যমে ভুটান-অসমের সামাজিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করাই আমাদের লক্ষ্য।"
প্রায় এক দশক আগে ভারত-ভুটান রেল সংযোগের কথা হলেও এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি কেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে দামচো বলেন, "আলোচনা এখনও চলছে। নেহরু-ওয়াংচুক রেলওয়ে নিয়ে সমস্যা হল— পশ্চিমবঙ্গে অনেকটা লাইন ব্যক্তিগত জমির উপর দিয়ে যাবে। তাঁরা রেলকে জমি দিচ্ছেন না বলে শুনেছি। ভুটান সফরের সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসিমারা থেকে ফুন্টসলিং পর্যন্ত লাইন পাতার ক্ষেত্রে জমি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেই অপেক্ষায় আছি।"
গুয়াহাটিতে খুলল ভুটান কনসুলেট। উদ্বোধনে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সেরিং টোবগে, বিদেশমন্ত্রী দামচো দর্জি ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।
অসম থেকে তাওয়াং যেতে সড়কপথে অন্তত ২০ ঘণ্টা লাগে। কিন্তু ভুটানের তাসিগং থেকে তাওয়াংয়ের লুম লা পর্যন্ত মাত্র ১৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হলেই গুয়াহাটি-তাওয়াংয়ের দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে। এ নিয়ে অরুণাচলের তরফে বেশ কয়েকবার ভুটানকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু ভুটানের তরফে সাড়া মেলেনি। অভিযোগ, চিনের ভয়েই 'বিতর্কিত অরুণাচল' পর্যন্ত নতুন ও সহজতর রাস্তা তৈরির অনুমতি দিচ্ছে না ভুটান। ভুটানের বিদেশমন্ত্রী ওই সড়ক প্রস্তাব বিষয়টি নিয়ে সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেন, "বিষয়টি বিবেচনাধীন। আলাদা ভাবে অরুণাচলকে না দেখে ভারতের সঙ্গে ভুটানের সড়ক যোগাযোগ মাথার রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ফুন্টসলিং সীমান্ত, বঙাইগাঁও, সামদ্রুপ জংখার সীমান্ত, গেলেফু-সহ পশ্চিমবঙ্গ, অসমের বিভিন্ন স্থান দিয়ে ভুটানে সহজেই যাওয়া যায়। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সঙ্গে বৈঠকে আমি ও প্রধানমন্ত্রী অসম-ভুটান বেশ কিছু সীমান্ত সড়ক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনাও চালিয়েছি। অরুণাচল সীমান্তের সিংহভাগ এলাকাই অরণ্যভূমি। তাই পরিবেশমন্ত্রকের ছাড়পত্র মিলতে সমস্যা হবে।"
আরও পড়ুন:
চন্দ্রবাবু ‘যুদ্ধ ঘোষণা’র পথে, দক্ষিণে সঙ্কট বাড়ছে বিজেপির
গালভরা প্রতিশ্রুতি ও প্রস্তাবিত বরাদ্দের বিস্তর ফারাক
বক্তৃতায় ভারত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করলেও ভুটান তাদের প্রথম ন্যানো স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে জাপান থেকে। কেন ভারতে এত সস্তা ও উন্নত পরিকাঠামোর সাহায্য নিচ্ছে না তারা? দামচো বলেন, "ওই স্যাটেলাইট প্রযুক্তির নকশা তৈরি, উপগ্রহ নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণ-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ দিনের গাঁটছড়া ছিল। উপগ্রহ সেখানেই তৈরি হয়েছে। ভারতও উপগ্রহ বিষয়ে আমাদের সাহায্য দিচ্ছে। এশিয়ান স্যাটেলাইটের স্টেশনও হয়েছে থিম্ফুতে। ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই একসঙ্গে কাজ হবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy