নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
এ-ও এক বদলার রাজনীতি। ইফতারের পাল্টা ইফতার। যে শাসক দল শুধু সরকারি স্তরেই নয়, রাজনৈতিক ভাবেও ইফতারকে কার্যত নিষিদ্ধ করেছে, সেই বিজেপিও এ বার রাহুল গাঁধীর ইফতারের দিনেই পাল্টা ইফতারের রাজনীতিতে নেমে পড়তে বাধ্য হল।
ইফতারের জন্য অবশ্য বিজেপির সদর দফতর ৬, দীনদয়াল উপধ্যায় মার্গ নয়, বেছে নেওয়া হয়, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির সরকারি বাসভবন ৭, সফদরজঙ্গ রোড। দলের নির্দেশে যাঁকে তড়িঘড়ি এক দিনের মধ্যে ইফতারের আয়োজন করতে হয়েছে।
রাহুল তাঁর ইফতারের ঘোষণা করেছিলেন অন্তত দিন সাতেক আগে। সেই ভাবে আমন্ত্রণ যায় বিভিন্ন শরিক দলের কাছে। সূত্রের খবর, রাহুলের মোকাবিলা করার জন্য গত কাল নড়েচড়ে বসে বিজেপি। দল ঠিক করে বিজেপিও একই দিন একই সময়ে ইফতার করবে। ইফতারের আয়োজন করা নিয়ে সঙ্ঘ পরিবারের আপত্তি থাকায় ঠিক হয় বিজেপির দফতরে নয়, সংখ্যালঘু মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ইফতার দেবেন মন্ত্রী নকভি। এর পরে তড়িঘড়ি সংখ্যালঘু মন্ত্রকের তরফে আমন্ত্রণ যায় নেতা-মন্ত্রী, আমলা ও সাংবাদিকদের কাছে।
ইউপিএ আমলে রমজান মাসে প্রতিদিনই কোনও না কোনও রাজনীতিকের বাড়িতে ইফতার লেগে থাকত। মোদী জমানার চার বছরে তাতে ভাটার টান দেখা যাচ্ছিল। ইফতারের রাজনীতি আসলে মুসলিম তোষণ— বিজেপির এই প্রচারে রামবিলাস-নীতীশের মতো তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ নেতারা ও কংগ্রেসের নেতারাও ইফতারের রাজনীতি থেকে পিছিয়ে আসেন। রামনাথ কোবিন্দের আমলে রাষ্ট্রপতি ভবনেও এ বছর থেকে নিষিদ্ধ
হয়েছে ইফতার। যা নিয়ে বিতর্ক চলছে পুরো দমে।
নীতিগত ভাবে রাহুলও ইফতার রাজনীতির বিপক্ষে। ঠিক যে ভাবে ওবিসি সম্মেলন করেছেন, সেই পথে হেঁটে সংখ্যালঘুদের নিয়ে সম্মেলন করার পক্ষে ছিলেন তিনি। কিন্তু দলের একাংশ তাঁকে বোঝায়, লোকসভা নির্বাচন এসে গিয়েছে। সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে কৈরানা-ফুলপুর বা নূরপুরের মতো এলাকায় বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী জোটের পাশে দাঁড়িয়েছেন সংখ্যালঘু সমাজ। তাই এমন একটি সময়ে সমমনোভাবাপন্ন দলগুলিকে নিয়ে ইফতার করলে সংখ্যালঘুদের কাছে ইতিবাচক বার্তা যাবে। রাহুল শেষ পর্যন্ত রাজি হন। এতেই অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপিও তড়িঘড়ি পাল্টা ইফতারের রাজনীতিতে নামতে বাধ্য হল।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী হাসপাতালে। তাতে অবশ্য ইফতারের আয়োজনে ভাটা পড়েনি। সন্ধ্যা সওয়া সাতটায় রোজা ভাঙার সময়ে ছিল কাজু-কিশমিসের পাশাপাশি কাবাব-বিরিয়ানির ঢালাও আয়োজন। এসেছিলেন মোদী সরকারের তালাক আইনের পক্ষে সরব একাধিক মহিলা সংগঠনের সদস্যরা। দলের নির্দেশে সংখ্যালঘু সমাজকে বার্তা দিতে একে একে পৌঁছন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন, রবিশঙ্কর প্রসাদ, স্মৃতি ইরানি, প্রকাশ জাভড়েকররা। আসেন শরিক দলের নেতারাও। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ যাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy