বুধবার অক্ষয়তৃতীয়া। যার কোনও ক্ষয় নেই, তা-ই হল অক্ষয়। তাই মনে করা হয়, এই শুভ দিনে কোনও কাজ শুরু করলে বা কিছু কিনলে সেটি সারা জীবন আমাদের সঙ্গে থাকবে, চিরস্থায়ী হবে। সেই কাজের ভাল ফলও আমরা দীর্ঘকাল ধরে ভোগ করতে পারব বলে মনে করা হয়। অক্ষয়তৃতীয়া তিথিতে ধনদেবতা কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে দেবাদিদেব মহাদেব অতুল ধনসম্পত্তি দান করেন। বিশ্বাস করা হয়, এই অক্ষয়তৃতীয়া তিথিতেই মহাভারত রচনা শুরু হয়েছিল। অক্ষয়তৃতীয়া তিথি গণেশের জন্মতিথি হিসাবে মানা হয়। এই দিনে গণেশের পুজো করা হলে বিশেষ শুভ ফল পাওয়া যায়। এই তিথিতে গণেশের পুজো করে যে কোনও শুভ কাজ শুরু করলে শুভ ফল প্রাপ্ত হয়। এ ছাড়াও এই দিন কয়েকটি জিনিস কেনা শুভ বলে মনে করা হয়। অক্ষয়তৃতীয়ার দিন কেনা জিনিসের ক্ষয় হয় না বলে কথিত রয়েছে। তৃতীয়া যত ক্ষণ থাকে, তার মধ্যে যে কোনও সময় জিনিসগুলি কেনা যায়। জেনে নিন কোন পাঁচটি জিনিস অক্ষয়তৃতীয়ার দিন কেনা শুভ।
আরও পড়ুন:
অক্ষয়তৃতীয়ায় কী কী কিনবেন?
সোনা: অক্ষয়তৃতীয়ার দিন অনেকেই সোনা কেনেন। এই শুভ দিনে সোনা কেনা অত্যন্ত শুভ। অক্ষয়তৃতীয়ায় কেনা সোনা আপনার কাছে সারা জীবন রয়ে যাবে বলে মনে করা হয়। কিন্তু সেই সোনা পরার আগে মা লক্ষ্মীর পায়ে রেখে পুজো করে নেওয়া উচিত। এতে আরও ভাল ফল পাওয়া যায়। সোনার কয়েনও কেনা যেতে পারে।
রুপো: আজকালকার দিনে অনেকের পক্ষে সোনা কেনা সম্ভব না-ই হতে পারে, তবে এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সাধ্যমতো রুপোর গয়না বা কয়েন কিনলেও ভাল ফল পাওয়া যায়। এই দিন সম্ভব হলে দোকান থেকে রুপোর কয়েন কিনে এনে প্রথমে সেটিকে মা লক্ষ্মীর পায়ের কাছে রেখে পুজো দিন। তৃতীয়া ছেড়ে গেলে কয়েনটিকে টাকা রাখার জায়গায় রেখে দিন, জীবনে আর কখনও আর্থিক সমস্যা আসবে না।
আরও পড়ুন:
বাড়ি: বাড়ি বা জমি কেনার জন্য অক্ষয়তৃতীয়ার দিনটি খুবই শুভ। এই দিন বাড়ি কিনলে সেটি সারা জীবন আপনাকে ছাওয়া দিয়ে চলবে বলে মনে করা হয়। সেই বাড়িতে অশুভ শক্তি কখনও প্রবেশ করতে পারবে না বলেও মনে করা হয়।
গাড়ি: বহু দিন ধরে গাড়ি কিনবেন ভাবছেন? তা হলে অক্ষয়তৃতীয়ার দিন সেই শুভ কাজটি করে ফেলতে পারেন। গাড়িটি সারা জীবন আপনার সঙ্গ দেবে।
আরও পড়ুন:
মাটির পাত্র: উপরে উল্লিখিত জিনিসগুলির মধ্যে একটাও আপনার পক্ষে কেনা সম্ভব না হলেও ক্ষতি নেই, বাজার থেকে একটি মাটির ঘট কিনে আনুন। মাটির ঘটকে সৌভাগ্য ও সম্পত্তির প্রতীক হিসাবে মনে করা হয়। পাত্রটি কিনে এনে মা লক্ষ্মীর পায়ের কাছে রেখে পুজো করুন। তার পর তাতে চাল আর গোটা হলুদ দিয়ে রেখে দিন। পরের বছর অক্ষয়তৃতীয়া পর্যন্ত সেটি রেখে দিতে হবে। এটি করতে পারলে জীবনে নানা শুভ পরিবর্তন আসবে।
- পুরাণ মতে, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেই কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস মহাভারতের কাহিনি বর্ণন করতে শুরু করেছিলেন গণেশকে। এ দিন থেকেই শ্রুতিলিখনের কাজ শুরু করেন গণেশ। বৈশাখ মাসের শুক্ল তৃতীয়া তিথিতেই শ্রীক্ষেত্র পুরীতে শুরু হয় জগন্নাথের রথ নির্মাণ।
- বৈশাখ মাসের শুক্ল তৃতীয়া তিথিটিকে অক্ষয় তৃতীয়া হিসাবে বিবেচনা করা হয়। হিন্দুদের পাশাপাশি জৈন ধর্মাবলম্বীরাও এই দিনটিকে পবিত্র মনে করেন। সৌভাগ্য অক্ষয় হয় এই তিথিতে— এমনই বিশ্বাস। বাঙালি ব্যবসায়ীর কাছে পয়লা বৈশাখের পর এই তিথিতেই হয় বিশেষ উদ্যাপন। দোকানে দোকানে পূজিত হন আরাধ্য দেবতা। মনে করা হয়, এই তিথি যে কোনও দেবতার পুজোর জন্যই প্রশস্ত।
-
রণিতা কি লাখ টাকার সোনা কিনে অক্ষয়তৃতীয়া পালন করলেন?
-
‘আমি ঈশ্বরে বিশ্বাসী, তবে আচার মানি না’, অক্ষয়তৃতীয়ায় কি বিশেষ পুজো করেন লোপামুদ্রা?
-
তখন অবাঙালিদের ধনতেরাস আমাদের অক্ষয়তৃতীয়া! সোনা কেনা, ছবি মহরতের দিন: ইন্দ্রাণী দত্ত
-
কৈশোরে সাদা কাগজের গ্লাসে কমলা রসনা, ওই পানীয় ছাড়া অক্ষয়তৃতীয়াই ফিকে: জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
-
‘কালো রঙের গাড়ি জীবনে কিনিনি’, অক্ষয়তৃতীয়ার শুভ-অশুভ নিয়ে কী জানালেন তৃণা সাহা?