তিনি সঙ্গীতশিল্পী। পাশাপাশি ব্যবসাও সামলান তিনি। সারা বছর দোকান নিয়ে ব্যস্ততায় থাকেন লোপামুদ্রা মিত্র। দোকানে নিজের মতো করে মাঝেমধ্যে পুজোর আয়োজন করেন ঠিকই, তবে অক্ষয়তৃতীয়ার আচার নিয়ে সেই ভাবে কোনও দিন ভাবেননি। তাই দোকানে এ দিন আলাদা করে পুজো হয় না।
আনন্দবাজার ডট কমকে লোপামুদ্রা বলেন, “আমি আসলে আচারে বিশ্বাস করি না। আমার দোকানেও পুজো হয়। তবে নিয়মিত পুজো হয় না। দোকান নিয়ম করেই খোলে। কিন্তু পয়লা বৈশাখ বা অক্ষয় তৃতীয়ায় আলাদা করে পুজো হয় না। যখন আমাদের মনে হয়, তখন আমরা দোকানে সত্যনারায়ণ পুজো করি ও যজ্ঞ করি।”
মানুষের মনেই ঈশ্বরের বাস, এমনই মানেন লোপামুদ্রা। তাই অক্ষয়তৃতীয়ায় আলাদা করে নিরামিষ খাওয়ারও কোনও চল নেই তাঁর পরিবারে। আর পাঁচটা দিনের মতোই খাওয়াদাওয়া করেন তাঁরা। লোপামুদ্রা বলেন, “আমি ঈশ্বরবাদী। ভীষণ ভাবে ঈশ্বরে বিশ্বাস রয়েছে আমার। কিন্তু আমি কোনও আচারে বিশ্বাস করি না।”
তবে কোনও এক অক্ষয়তৃতীয়ায় কেদার-বদ্রী ভ্রমণের স্মৃতি আজও মনে রয়ে গিয়েছে লোপামুদ্রার। তিনি বলেন, “অক্ষয়তৃতীয়ার সময় কেদারনাথ, বদ্রীনাথের মন্দিরগুলো খোলে। আমার এই মন্দির দর্শন করতে ভাল লাগে। তাই প্রতি বছরই মনে হয়, একবার যেতে পারলে খুব ভাল হত। কাজের চাপে আর হয়ে ওঠে না! একবার এই সময়ে গিয়েছিলাম কেদারনাথ-বদ্রীনাথ ভ্রমণে। অক্ষয়তৃতীয়ার দিন আমরা হাঁটা শুরু করেছিলাম।”
সেই অনুভূতি আজও জীবন্ত গায়িকার কাছে। তাঁর কথায়, “সে এক অসাধারণ অনুভূতি। এত ভাল লেগেছিল। দেবভূমি বলা হয়। ঠিকই বলা হয়। ওখানে গেলে মনে হয়, সত্যিই ঈশ্বরের কাছে পৌঁছে গিয়েছি। মনে হয়েছিল, সত্যিই ঈশ্বর এখানেই রয়েছেন।”
অক্ষয়তৃতীয়া বা পয়লা বৈশাখ নিয়ে শৈশবেরও বেশ কিছু সুখস্মৃতি রয়েছে লোপামুদ্রার। তাঁর কথায়, “ছোটবেলায় এই দিনগুলোয় বড়দের সঙ্গে নানা দোকানে যেতাম। গয়নার দোকানে গিয়ে খাওয়াদাওয়া হত। এখন তো বড়রা তেমন কেউই নেই। সেই সব স্মৃতি মনে পড়ে আজও।”
- পুরাণ মতে, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেই কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস মহাভারতের কাহিনি বর্ণন করতে শুরু করেছিলেন গণেশকে। এ দিন থেকেই শ্রুতিলিখনের কাজ শুরু করেন গণেশ। বৈশাখ মাসের শুক্ল তৃতীয়া তিথিতেই শ্রীক্ষেত্র পুরীতে শুরু হয় জগন্নাথের রথ নির্মাণ।
- বৈশাখ মাসের শুক্ল তৃতীয়া তিথিটিকে অক্ষয় তৃতীয়া হিসাবে বিবেচনা করা হয়। হিন্দুদের পাশাপাশি জৈন ধর্মাবলম্বীরাও এই দিনটিকে পবিত্র মনে করেন। সৌভাগ্য অক্ষয় হয় এই তিথিতে— এমনই বিশ্বাস। বাঙালি ব্যবসায়ীর কাছে পয়লা বৈশাখের পর এই তিথিতেই হয় বিশেষ উদ্যাপন। দোকানে দোকানে পূজিত হন আরাধ্য দেবতা। মনে করা হয়, এই তিথি যে কোনও দেবতার পুজোর জন্যই প্রশস্ত।
-
রণিতা কি লাখ টাকার সোনা কিনে অক্ষয়তৃতীয়া পালন করলেন?
-
তখন অবাঙালিদের ধনতেরাস আমাদের অক্ষয়তৃতীয়া! সোনা কেনা, ছবি মহরতের দিন: ইন্দ্রাণী দত্ত
-
কৈশোরে সাদা কাগজের গ্লাসে কমলা রসনা, ওই পানীয় ছাড়া অক্ষয়তৃতীয়াই ফিকে: জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
-
‘কালো রঙের গাড়ি জীবনে কিনিনি’, অক্ষয়তৃতীয়ার শুভ-অশুভ নিয়ে কী জানালেন তৃণা সাহা?
-
প্রয়োজনে শাঁখা খুলতে হলেও সিঁদুর পরলে স্বামী দীর্ঘায়ু হন, বিশ্বাস করি: শ্রীময়ী চট্টরাজ