মালিকপক্ষের কোনও প্রতিনিধি যোগ না-দেওয়ায় দার্জিলিঙে শতবর্ষের পুরনো জঙ্গপানা চা বাগান খোলা নিয়ে জট কাটল না। সোমবার কার্শিয়াঙে শ্রম দফতরের তরফে এ নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। দার্জিলিঙের সহকারী শ্রম কমিশনার সঞ্জু শিম্মিক বলেন, “আমরা শ্রমিক ও মালিক উভয়পক্ষকে ডেকেছিলাম। কিন্তু মালিকপক্ষ আসেনি। সে জন্য আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। তবে শীঘ্রই আবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হবে।”
তবে মালিকপক্ষের তরফে দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের মুখ্য উপদেষ্টা সন্দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁরা ইউনিয়নকে দু’টি শর্ত দিয়েছেন। ইউনিয়ন লিখিত ভাবে সেই শর্ত মেনে নেওয়ার কথা জানালে তবেই তাঁরা বৈঠকে যাবেন। সন্দীপবাবু বলেন, “আমরা গোড়া থেকেই বলছি, বাগানের কয়েক জন শ্রমিক নেতাকে সরাতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাগান পরিচালনায় ইউনিয়ন কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এটা মেনে নেওয়ার কথা ইউনিয়ন না-বললে আমরা বৈঠকে গিয়েও লাভ হবে না। বরং তিক্ততা বাড়তে পারে।”
কার্শিয়াঙের মহানদী এলাকার উপত্যকায় অবস্থিত জঙ্গপানা বাগানের সুগন্ধি চায়ের সুখ্যাতি দুনিয়া জুড়েই। সেই বাগানে শ্রমিক অসন্তোষ অতীতে তেমন ছিল না। সম্প্রতি বাগান কর্তৃপক্ষ একজন অস্থায়ী অফিস-কর্মীকে স্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ করেন। তাতে আপত্তি করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা অনুমোদিত দার্জিলিং টেরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন লেবার ইউনিয়ন। তারা যুক্তি দেয়, দেড় বছর আগে যোগ দেওয়া অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী করা হলে তার আগে থেকে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরও একই সুবিধা দিতে হবে। ওই দাবিতে রোজই ম্যানেজারকে ঘেরাও-সহ নানা ভাবে চাপ বাড়ায় ইউনিয়ন। তিতিবিরক্ত হয়ে ৩ জুলাই বাগান ছেড়ে চলে যান মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা। এর পর আলোচনায় বসে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেন মোর্চা নের্তৃত্ব। এর পরেই মহকুমা শাকক এই বৈঠক ডাকেন।
এ দিন দার্জিলিং টেরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন লেবার ইউনিয়নের সভাপতি পি টি শেরপার অভিযোগ, “মালিকপক্ষ সাড়া দেননি। কাউকে পাঠাননি। এতেই সন্দেহ হচ্ছে, বাগান পূর্ব পরিকল্পনা মতো বন্ধ করা হয়েছে। আমরা সব সময়েই কথা বলার জন্য প্রস্তুত। মালিকপক্ষ যে-শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তও হচ্ছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে দোষী সাব্যস্ত করা ঠিক হবে না।”
জিটিএ-র তরফে মহানদী-তিনধারিয়া এলাকার মোর্চা সভাসদ প্রভা ছেত্রী জানান, তাঁরাও চান দ্রুত বাগান খোলানোর জন্য মালিকপক্ষ ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy