Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
লাল ফিতের ফাঁস এড়াতে ত্রিমুখী কৌশল

অধিগ্রহণ করে শিল্পকে জমি দিচ্ছে বিহার

রাজ্য জুড়ে উর্বর জমি। তার মধ্যেও শিল্পের জন্য জমি জোগাড় করতে তাদের যে অধিগ্রহণে আপত্তি নেই, তা স্পষ্ট করে দিল প্রতিবেশী রাজ্য বিহার। বিহারের শিল্প সচিব নবীন বর্মা সোমবার এক অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলকাতায় জানান, কোনও শিল্প সংস্থা নির্দিষ্ট ভাবে জমির চাহিদা জানালেই তাঁরা তা অধিগ্রহণে উদ্যোগী হবেন। এবং নয়া জমি নীতি অনুযায়ী, সরকার জমিদাতাদের কাছ থেকে বাজার দরের চেয়ে চারগুণ বেশি দামে ওই জমি কিনে নেবে।

নবীন বর্মা। সোমবার।

নবীন বর্মা। সোমবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০২:১৬
Share: Save:

রাজ্য জুড়ে উর্বর জমি। তার মধ্যেও শিল্পের জন্য জমি জোগাড় করতে তাদের যে অধিগ্রহণে আপত্তি নেই, তা স্পষ্ট করে দিল প্রতিবেশী রাজ্য বিহার।

বিহারের শিল্প সচিব নবীন বর্মা সোমবার এক অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলকাতায় জানান, কোনও শিল্প সংস্থা নির্দিষ্ট ভাবে জমির চাহিদা জানালেই তাঁরা তা অধিগ্রহণে উদ্যোগী হবেন। এবং নয়া জমি নীতি অনুযায়ী, সরকার জমিদাতাদের কাছ থেকে বাজার দরের চেয়ে চারগুণ বেশি দামে ওই জমি কিনে নেবে। তারপর সেই জমি শিল্পের উপযোগী করতে যা খরচ ও অন্যান্য পরিষেবা-খরচ চাপিয়ে সংস্থাকে বিক্রি করা হবে। পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের খরা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ না-করার নীতিতে অনড়। আর, ঠিক তখনই বিহারের এই নীতি সে রাজ্যে লগ্নির অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বর্মার দাবি, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁরা মাসে গড়ে ১০০ কোটি টাকার লগ্নি-প্রস্তাব পাচ্ছেন।

বস্তুত লাল ফিতের ফাঁস এড়িয়ে রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে জমি জোগানোর ত্রিমুখী কৌশল নিয়েছে বিহার:

• প্রথমত, জমি অধিগ্রহণ করে তা শিল্পের হাতে দেওয়া।

• দ্বিতীয়ত, ইচ্ছুক জমিদাতার সঙ্গে সরাসরি জমি কিনতে আগ্রহী লগ্নিকারীর যোগসূত্র গড়ে দেওয়া।

• তৃতীয়ত, ইচ্ছুক জমিদাতারা পুণের মগরপট্টার ধাঁচে নিজস্ব শিল্প তালুক গড়ে সেখানে সংস্থাকে লিজে জমি দিতে চাইলে তার ব্যবস্থা করা।

কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে লগ্নি টানতে সিআইআই আয়োজিত সম্ভাব্য লগ্নিকারীদের এক আলোচনাচক্রে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন নবীন বর্মা। সেই অনুষ্ঠানের ফাঁকে তিনি জমি জোগাড়ের এই ত্রিমুখী কৌশলের কথা জানান।

লগ্নিকারীদের সরাসরি জমি কিনতেও বলছেন তাঁরা। তবে সরকার অধিগৃহীত জমি কিনলে তার বিশ্বাসযোগ্যতা বেশি হওয়ায় লগ্নিকারীর ঋণ পেতে সুবিধা হয় বলে মত বর্মার।

ইচ্ছুক জমিদাতারা শিল্পের জন্য জমি দিতে চাইলে তাঁরা তা সরকারের কাছেও জানাতে পারেন। এ জন্য ওয়েবসাইটও রয়েছে। ইচ্ছুক জমিদাতার জমির সত্যতা যাচাই করে সেই তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। আগ্রহী শিল্প সংস্থা সরাসরি জমি কিনতে চাইলে সেই জমির হদিস দেয় সরকার। তবে সে ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা শুধু ইচ্ছুক জমিদাতার সঙ্গে আগ্রহী লগ্নিকারীর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার মধ্যেই সীমিত। বাকিটা দু’পক্ষ নিজেরাই ঠিক করে জমি কেনাবেচা করে।

পাশাপাশি, পুণের মগরপট্টায় যে-ভাবে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা একটি সংস্থা গঠন করে নিজস্ব জমি দিয়ে উপনগরী গড়ে তুলেছিলেন, সেই পদ্ধতিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে বিহার। বর্মা জানান, ইচ্ছুক জমিদাতারা একই ভাবে সংস্থা গঠন করে নিজেদের জমি একত্রিত করে একটি শিল্প তালুক গড়তে পারেন। তারপর সেখানে আগ্রহী শিল্প সংস্থাগুলিকে লিজে জমি দিতে পারেন।

লগ্নিকারীর পাশে থেকে শিল্প স্থাপনে সাহায্য করতে অন্যান্য সুবিধাও (যেমন স্ট্যাম্প ডিউটেতে ছাড়) দিচ্ছে বিহার সরকার। বস্তুত, শিল্প স্থাপনে লগ্নিকারী যাতে প্রশাসনিক বাধার মুখে না-পড়েন, সেটা নিশ্চিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য।

অন্য বিষয়গুলি:

bihar land policy for industry nabin verma
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE