অপেক্ষা: চেনা এই ছবি বদলাবে কি নতুন ব্যবস্থা? ফাইল চিত্র।
অবশেষে জিএসটি জমানায় বৈদ্যুতিন ওয়ে-বিল (ই ওয়ে-বিল) চালু করার সময় এগিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
শনিবার জিএসটি পরিষদের ২৪তম বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পণ্য লেনদেনে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ই ওয়ে-বিল। আগে তা ছিল ১ এপ্রিল। রাজ্যের মধ্যে পণ্য চলাচলে তা চালু করতে হবে ১ জুনের মধ্যে।
কর ফাঁকি ঠেকানোই নতুন ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য বলে দাবি সরকারি সূত্রের। সে জন্য তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো কতটা তৈরি, ওই সময়ের মধ্যেই তা খতিয়ে দেখা হবে বলে ভিডিও কনফারেন্সিং মারফত অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির পৌরোহিত্যে আয়োজিত বৈঠকের পরে এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এখনও ই ওয়ে-বিল চালু না-হওয়ার কারণেই কর ফাঁকির জেরে জিএসটি খাতে সরকারের রাজস্ব কমছে বলে অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলে। উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বরে রাজস্ব ছিল ৯৫,১৩১ কোটি টাকা। অক্টোবরে তা কমে হয় ৮৩,৩৪৬ কোটি টাকা।
পরিষদের চেয়ারম্যান বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী পরে বেঙ্গালুরু থেকে জানান, নতুন ব্যবস্থার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সংক্রান্ত কাঠামো তৈরি হয়ে যাবে ১৬ জানুয়ারির মধ্যে। বাধ্যতামূলক ভাবে তা চালু করার বিজ্ঞপ্তি জারি হবে ১ ফেব্রুয়ারি। তিনি বলেন, জিএসটি নেটওয়ার্কের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিকাঠামো তৈরি করছে ন্যাশনাল ইনফর্ম্যাটিক্স সেন্টার (এনআইসি)।
পথ পেরোতে
ই-ওয়ে বিল কী?
• ৫০ হাজার টাকার বেশি মূল্যের পণ্য ১০ কিমি-র বেশি দূরত্বে পরিবহণে লাগবে এই বিল
• এর জন্য আগাম নথিভুক্তি নিতে হবে জিএসটি নেটওয়ার্কে
এগোল সময়সীমা
• বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পণ্য লেনদেনে ই-ওয়ে বিল বাধ্যতামূলক ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই। আগে ছিল ১ এপ্রিল
• একটি রাজ্যের মধ্যে লেনদেনে তা চালু করতে হবে আগামী ১ জুনের মধ্যে
• পরীক্ষামূলক ভাবে নতুন ব্যবস্থা চালুর পরিকাঠামো তৈরি করা হবে ১৬ জানুয়ারির মধ্যে
নতুন ব্যবস্থায় ৫০ হাজার টাকার বেশি মূল্যের পণ্য ১০ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি দূরত্বে জোগানের জন্য পরিবহণের আগে তা অনলাইন ব্যবস্থায় নথিভুক্ত করতে হবে। তার ভিত্তিতেই তৈরি হবে বৈদ্যুতিন বা ই-ওয়ে বিল।
এর আগে যুক্তমূল্য কর বা ভ্যাটের আওতায়ও চালু ছিল ওয়ে বিল। পণ্য লেনদেনের তথ্য উল্লেখ করা থাকত কাগুজে বিলে। তার জায়গা নেবে বৈদ্যুতিন ওয়ে-বিল, যা মিলবে জিএসটি পোর্টালে। বিল তৈরি হলেই মিলবে নিজস্ব ই ওয়ে-বিল নম্বর বা ইবিএন। সরবরাহকারী, বিক্রেতা ও পরিবহণকারী— সবাই এটি পাবেন।
গত ১ জুলাই জিএসটি চালু হলেও ই-ওয়ে বিল ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। তবে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, বিহার, ওডিশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যে ই ওয়ে-বিল ব্যবস্থা যথেষ্ট ভাল বলে তাদের আপাতত নিজেদের নিয়মই বহাল রাখতে বলেছে পরিষদ।
তবে অনেক বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা, ই ওয়ে-বিলের নিয়ম-কানুন কতটা সরল করা হবে, তার উপরই নির্ভর করবে কর ফাঁকি ঠেকানোর লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে কি না। আন্তঃ-রাজ্য চেক পোস্ট উঠে গেলেও ই ওয়ে-বিল নিয়ে কড়াকড়ির জেরে ব্যবসায়ী ও পরবহণকারীদের হেনস্থার মুখে পড়তে হতে পারে বলেও তাঁদের আশঙ্কা।
বেশ কিছু কর বিশেষজ্ঞ ও উপদেষ্টা এ প্রসঙ্গে অভিযোগ এনেছেন যে, ১ জুলাই একটু তাড়াহুড়ো করেই জিএসটি রূপায়ণ করে কেন্দ্র। তাঁদের পরামর্শ এ ক্ষেত্রে উপেক্ষা করা হয়। ফলে তার কাঠামোয় কিছুটা খামতি থেকে গিয়েছে। ই ওয়ে-বিল চালু হলে তা মেটানো অনেকটাই সম্ভব হবে বলে অবশ্য তাঁদের ধারণা। ব্যবসায়ীদের সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স সময়সীমা এগোনোর ব্যাপারে আপত্তি তুলে তা ১ এপ্রিল থেকেই করার পক্ষে মত দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy