(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ক্ষমতায় এলে কী কী কাজ করে দেখাবেন, ইতিমধ্যেই তার ফিরিস্তি শুনিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিস। মঙ্গলবার আমেরিকার জনগণ স্থির করবেন, আগামী চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউসে কে প্রবেশাধিকার পাবেন। সে দিক থেকে দেখতে গেলে ট্রাম্প কিংবা কমলা যিনিই ক্ষমতায় ফিরুন, তাঁকে ‘কথা’ রাখতে হবে। অর্থাৎ, ভোটপ্রচারে তাঁরা যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেগুলি রক্ষা করতে হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি
ট্রাম্প তাঁর প্রচারের সুর বেঁধেছিলেন ‘আমেরিকা প্রথম’ এবং ‘আমেরিকাকে ফের শ্রেষ্ঠ করে তোলো’— এই দুই স্লোগানের উপর ভর করে। ইদানীং ভারতের বিভিন্ন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে উঠে এসেছে ‘অনুপ্রবেশ’। ২০১৬ সালের ভোটপ্রচারের মতো এ বারেও ট্রাম্প শক্ত হাতে আমেরিকার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করার পক্ষে বার বার সওয়াল করেন। ফারাক বলতে এটাই যে, এ বার আরও একটু চড়া সুরে। বহু প্রচারসভায় ট্রাম্পকে বলতে শোনা গিয়েছে যে, ক্ষমতায় এলে বেআইনি অভিবাসীদের দেশ থেকে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে বার করে দেওয়া হবে। ২০১৬ সালে যে কৌশল অবলম্বন করে বিজয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প, এ বারও সেটাই আঁকড়ে ধরেছেন তিনি। শক্তপোক্ত অর্থনীতি, জোরদার জাতীয়তাবাদ ও কড়া অভিবাসন আইনের প্রতিশ্রুতি তাঁকে ফের মসনদে বসাবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত দেশের প্রাক্তন এই প্রেসিডেন্ট।
এ বারের আমেরিকার ভোটের বিতর্কে আধিপত্য বজায় রেখেছে অর্থনীতি। মূল্যবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এ বার ভোটারদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সেটাই তাঁর প্রচারে তুরুপের তাস করেছেন ট্রাম্প। কোভিড অতিমারির পরে আমেরিকার ধ্বস্ত অর্থনীতির দায় তিনি সম্পূর্ণ চাপিয়ে দিয়েছেন জো বাইডেন সরকারের উপরে। চিন, অভিবাসন ও বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন তিনি। আশ্বাস দিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানেও সচেষ্ট হবেন। সরে আসবেন বাইডেন প্রশাসনের ইজ়রায়েল নীতি থেকে। জ্বালানির দাম কমানোর জন্য তৈল উত্তোলনের ক্ষেত্রে সরকারি নীতি আরও শিথিল করারও আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনে বাজারদর সাধারণের নাগালের মধ্যে রাখা। মনে করা হচ্ছে, মধ্যবিত্ত মন জয়ের জন্যই ট্রাম্প এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
কমলা হ্যারিসের প্রতিশ্রুতি
ডেমোক্র্যাট নেত্রী কমলার প্রচারে প্রথম থেকেই গুরুত্ব পেয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং শিক্ষার বিষয়টি। জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে ইতিবাচক পদক্ষেপ করার উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি। তা ছাড়া, বেকারত্ব কমাতে এবং বিভিন্ন পরিকাঠামোয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জো বাইডেন সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, নিজের প্রচারে বার বার তা তুলে ধরেছেন কমলা। অন্য দিকে, গর্ভপাতের অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলা ভোটার ও তরুণ প্রজন্মকে পাশে পেতে চেয়েছেন হ্যারিস। ডেমোক্র্যাট এই নেত্রী জানিয়েছেন, ক্ষমতায় ফিরলে প্রথম দিনেই তাঁর কাজ হবে জীবনযাপনের খরচ কমিয়ে আনা।
তা ছাড়াও প্রথম বার যাঁরা আমেরিকায় বাড়ি কিনবেন, তাঁদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা। তাঁর প্রতিশ্রুতির তালিকায় রয়েছে গাজ়া প্রসঙ্গও। গাজ়ায় যুদ্ধ বন্ধের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। শ্রমিকদের ন্যূনতম শ্রমিক বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রতি দিয়ে দেশের নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের মন জয়ের চেষ্টায় মরিয়া কমলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy