Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
ভোট ভেবে ভাবনা ন্যূনতম অঙ্ক বৃদ্ধির

ক্ষত সারাতে খোঁজ পেনশন মলমের

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে বহু হাজার কোটি হাতিয়ে চম্পট দিয়েছেন নীরব মোদী। এই অবস্থায় আমজনতার ক্ষতে কিছুটা অন্তত প্রলেপ দিতে কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) ন্যূনতম পেনশনের অঙ্ক বাড়ানোর কথা ভাবছে কেন্দ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৯
Share: Save:

দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে লোকসভা ভোট। অথচ দিন দিন ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। নোটবন্দি আর চটজলদি জিএসটি চালুর জোড়া ধাক্কা তো ছিলই। সেই সঙ্গে স্বল্প সঞ্চয়, আমানতেও সুদ বাড়ন্ত। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে বহু হাজার কোটি হাতিয়ে চম্পট দিয়েছেন নীরব মোদী। এই অবস্থায় আমজনতার ক্ষতে কিছুটা অন্তত প্রলেপ দিতে কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) ন্যূনতম পেনশনের অঙ্ক বাড়ানোর কথা ভাবছে কেন্দ্র।

পিএফ দফতর সূত্রে খবর, ওই অঙ্ক এখনকার ১,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,৫০০-২,০০০ টাকা করা হতে পারে। এমনকী এই প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর দফতর গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে বলে ওই সূত্রে খবর।

পিএফের ন্যূনতম পেনশন বাড়লে প্রায় ১৪ লক্ষ পেনশনভোগী উপকৃত হবেন। এখন ইপিএফে মোট পেনশনভোগী ৫০ লক্ষ। তার মধ্যে ১৪ লক্ষ জন ন্যূনতম পেনশন (মাসে ১,০০০ টাকা) পান। নিয়ম বদলালে কিছুটা সুবিধা হবে এঁদের।

কর্মী সংগঠনগুলির অবশ্য দাবি, জিনিসপত্তরের যা দাম, তাতে এই বৃদ্ধির পরিমাণ নস্যি। যেমন পিএফের অছি পরিষদের সদস্য তথা এআইইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সাহা বলেন, ‘‘ন্যূনতম পেনশন বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীর প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দফতর বিবেচনা করছে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে।’’ সামনেই ভোট। তাই পিএফের প্রায় ৫ কোটি সদস্যের মন পেতে ওই প্রস্তাব কার্যকর হতে পারে বলেই তাঁদের ধারণা।’’

উল্লেখ্য, এ বার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পরে শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ার ন্যূনতম পেনশন বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করে প্রস্তাব পাঠান অর্থমন্ত্রীর কাছে। দু’টি প্রস্তাব দেওয়া হয়। একটিতে বলা হয়েছে, ন্যূনতম পেনশন ১,৫০০ টাকা করতে। অন্যটিতে ২,০০০ টাকা। কোন ক্ষেত্রে কতটা আর্থিক দায় চাপবে, তা-ও হিসেব কষে দেখানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, বর্ধিত হারে ন্যূনতম পেনশন দিতে পিএফ দফতরের যা বাড়তি খরচ হয়, তা কেন্দ্র ভর্তুকি হিসেবে তাদের দেয়। ফলে ন্যূনতম পেনশন আরও বাড়লে ভর্তুকির পরিমাণও বাড়বে।

প্রাপ্তিযোগ

• এখন কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডে পেনশনভোগীর সংখ্যা প্রায় ৫০ লক্ষ

• এর মধ্যে ন্যূনতম পেনশন (মাসে ১,০০০ টাকা) পান ১৪ লক্ষ জন

• প্রস্তাব এই ন্যূনতম পেনশনের অঙ্ক বাড়িয়ে ১,৫০০-২,০০০ টাকা করার

• অর্থ মন্ত্রকের কাছে ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পেশ করেছে শ্রম মন্ত্রক

• গুরুত্ব দিয়ে তা বিবেচনা করছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরও

দাবিদাওয়া

• কর্মী সংগঠনগুলির দাবি, চিঁড়ে ভিজবে না দু’হাজারেও

• জিনিসপত্তরের দাম যা চড়া, তাতে বাড়াতে হবে আরও বেশি

• পেনশনের অঙ্ক ঠিক হোক মূল্যবৃদ্ধির হারের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে

তবে শঙ্করবাবুর দাবি, পিএফে ও অন্যান্য স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদ কমানোর পরে পেনশন বাড়িয়ে ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু যে হারে দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তাতে ৫০০-১,০০০ টাকা বাড়তি দিয়ে পিএফের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের সুরাহা দেওয়া সম্ভব নয়।

অছি পরিষদে প্রায় সমস্ত শ্রমিক সংগঠনই মনে করে, ন্যূনতম পেনশন বাড়ালেই সমস্যার সমাধান হবে না। বাজারে মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় সাধারণ ভাবেই পেনশনের পরিমাণ খুবই কম। অবসরের পরে পিএফ সদস্যদের হাতে কিছু বেশি টাকা তুলে দেওয়ার সদিচ্ছা যদি সত্যিই সরকারের থাকে, তাহলে পেনশন হিসেবের নিয়ম পাল্টাতে হবে। শঙ্করবাবু জানান, ‘‘পিএফের পেনশনকে মূল্যবৃদ্ধি সূচকের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছি।’’ যাতে তার ভিত্তিতে আগামী দিনে পেনশনের অঙ্ক ঠিক করা যায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE