দিনের শেষে অবশ্য পতনের জের কিছুটা কাটিয়ে ওঠে সূচক।
অন্তর্বর্তী বাজেট হলেও শুক্রবার সকাল থেকে বড় ঘোষণার প্রত্যাশায় শেয়ার বাজারে ভিড় জমিয়েছিলেন লগ্নিকারীরা। ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বাজেট বক্তৃতা শুরু করতেই দ্রুত সূচক উঠতে শুরু করে। এক সময়ে সেনসেক্স উঠে যায় ৫০০ পয়েন্টেরও বেশি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাঁটাছেড়া শুরু হতেই নামতে থাকে বাজার। সংশয় তৈরি হয়, ঘোষণা হলেও বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য টাকা আসবে কোথা থেকে। রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা বদলেও প্রশ্ন দানা বাঁধে। দিনের শেষে অবশ্য পতনের জের কিছুটা কাটিয়ে ওঠে সূচক। সেনসেক্স ২১২.৭৪ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় ৩৬,৪৬৯.৪৩ অঙ্কে। আর নিফ্টি থামে ১০,৮৯৩.৬৫ অঙ্কে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে বাজেটের ঘোষণায় বাজার খুশি। কিন্তু আখেরে মানুষ কতটা উপকৃত হবেন, রাজকোষ ঘাটতি কোথায় পৌঁছবে, খরচের টাকা আসবে কোথা থেকে— তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বহু লগ্নিকারীর মনে। সে কারণেই এ দিন লেনদেনে দ্রুত ওঠানামা করেছে সূচক।
তবে সাধারণ ভাবে বাজার খুশি এটা দেখেই যে, বাজেটে এমন কোনও প্রস্তাব নেই যা তাদের পক্ষে ক্ষতিকর। গবেষণা সংস্থা ভ্যালু রিসার্চের সিইও ধীরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘বাজেটে বাজারকে সরাসরি চাঙ্গা করার প্রস্তাব না থাকলেও, মূলধনী বাজারের স্বার্থ হানি হয় এমন পদক্ষেপ করা হয়নি। ভোটের আগে বাজেটে কী প্রস্তাব রাখা হয়, তা নিয়ে লগ্নিকারীদের মনে উদ্বেগ ছিল। ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বক্তৃতা শেষ করার পরে সকলেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।’’
বাজেটে শেয়ার বাজারে প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ার মতো প্রস্তাব ছিল না ঠিকই। কিন্তু অনেকের মতে, কৃষকদের আর্থিক সুবিধা ও করছাড়-সহ যে সব ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে মানুষের হাতে টাকা বাঁচবে। ফলে বাড়বে কেনাকাটা ও সঞ্চয়। বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, ‘‘ধারণা, সঞ্চয়ের একটা অংশ মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে শেয়ার বাজারে ঢুকবে।’’
তবে অন্তবর্তী বাজেটে কেন্দ্র ঢালাও ঘোষণা করলেও ওই সব সুবিধা কার্যকর করার জন্য অর্থের ব্যবস্থা কী ভাবে হবে, তার দিশা পরিষ্কার নয়। ভারত চেম্বারের সভাপতি সীতারাম শর্মা বলেন, ‘‘সাধারণত বাজেটে দেওয়ার পাশাপাশি নেওয়ার কথাও থাকে। কিন্তু ভোটের বাজারে মানুষকে খুশি করতে গয়াল একতরফা ভাবে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিই শুনিয়েছেন।’’
এর ফলে ওই সব প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য সরকারের ঘাড়ে ঋণের বোঝা চাপতে পারে বলে আশঙ্কা ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিকের। তিনি বলেন, ‘‘প্রস্তাবগুলি রূপায়ণের জন্য যে টাকা লাগবে, তার জোগান কোথা থেকে হবে, তা নিয়ে সকলকেই অন্ধকারে রেখেছেন অর্থমন্ত্রী। এর বিরূপ প্রভাব বাজারে পড়তে পারে।’’
যে সব আর্থিক সুবিধার কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে বাস্তবে কত জন উপকৃত হবেন, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে লগ্নিকারীদের। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তার সুবিধা সিংহ ভাগ কৃষকই পাবেন না। কারণ, তা ভূমিহীন কৃষকদের জন্য নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy