Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

টিভিতে আল্ট্রা-হাই ডেফিনিশন প্রযুক্তি ডিটিএইচের হাত ধরে

মোবাইল ফোনে থ্রিজি-র পরে ফোর-জি। ডিজিট্যাল টিভিতে হাই ডেফিনিশনের (এইচডি) পরে আল্ট্রা-হাই ডেফিনিশিন (আল্ট্রা-এইচডি)। মোবাইলে থ্রিজি পরিষেবা জনপ্রিয় হওয়ার আগেই বাজার এসে গিয়েছিল আরও উন্নত ফোর-জি প্রযুক্তি। ডিজিট্যাল টিভি-র ক্ষেত্রেও হাই ডেফিনিশন প্রযুক্তির বাজার এখনও সম্পৃক্ত হয়ে পড়েনি।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৪ ০০:২৮
Share: Save:

মোবাইল ফোনে থ্রিজি-র পরে ফোর-জি। ডিজিট্যাল টিভিতে হাই ডেফিনিশনের (এইচডি) পরে আল্ট্রা-হাই ডেফিনিশিন (আল্ট্রা-এইচডি)।

মোবাইলে থ্রিজি পরিষেবা জনপ্রিয় হওয়ার আগেই বাজার এসে গিয়েছিল আরও উন্নত ফোর-জি প্রযুক্তি। ডিজিট্যাল টিভি-র ক্ষেত্রেও হাই ডেফিনিশন প্রযুক্তির বাজার এখনও সম্পৃক্ত হয়ে পড়েনি। তার মধ্যেই পরের পর্যায়ের প্রযুক্তি ‘ফোর কে’ বা আল্ট্রা-এইচডি প্রযুক্তির পরিষেবা চালুর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে টাটা স্কাই, ভিডিওকনের মতো ‘ডিরেক্ট টু হোম’ (ডিটিএইচ) সংস্থাগুলি।

কেব্ল কিংবা ডিটিএইচ, দু’ধরনের ডিজিট্যাল টিভি পরিষেবার ক্ষেত্রেই সম্প্রচারের প্রথম ধাপের প্রযুক্তি হল ‘স্টান্ডার্ড ডেফিনিশন’ বা এসডি। এখনও অধিকাংশ চ্যানেল এই প্রযুক্তিতেই সম্প্রচারিত হয়। এর চেয়ে উন্নত প্রযুক্তি হল এইচডি। তবে তার জন্য আলাদা ও দামি সেট টপ বক্স নিতে হয় গ্রাহককে।

দু’ধরনের পরিষেবায় মূল তফাত ছবির গুণগত মানে। এসডি-র চেয়ে এইচডি বক্সের মাধ্যমে পর্দার ছবি বেশি ভাল হয়। আল্ট্রা-এইচডি পরিষেবায় তা আরও উন্নত হবে বলেই দাবি করে টাটা স্কাই-এর সিওও বিক্রম মেহরা জানান, “এইচডি প্রযুক্তিতে পর্দায় ছবি ফুটিয়ে তোলে ২০ লক্ষ পিক্সেল বা বিন্দু। আল্ট্রা-এইচডি প্রযুক্তিতে সেই ছবি ফুটিয়ে তুলবে প্রায় ৮৩ লক্ষ পিক্সেল। ফলে একই ছবি আরও নিখুঁত ও স্পষ্ট হবে।”

কিন্তু ভারত কি এখনই এই প্রযুক্তির স্বাদ নিতে প্রস্তুত? যেখানে টাটা স্কাই-এরই হিসেবে, এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৬টি এইচডি চ্যানেল সম্প্রচারিত হয়, সেখানে আল্ট্রা এইচডি প্রযুক্তি কতটা সাড়া ফেলবে? উপরন্তু, এই প্রযুক্তির পরিষেবা দেখার উপযুক্ত টিভি-র দামই লক্ষাধিক টাকা। সেট টপ বক্সেরও বাড়তি খরচ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে খরচের প্রশ্নে ভারতের স্পর্শকাতর বাজারে কতটা সাড়া ফেলবে এই প্রযুক্তি?

বস্তুত, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকেই পাখির চোখ করছে শিল্পমহল। কারণ সমীক্ষা বলছে, বছর দুয়েক আগেও এ দেশে ডিটিএইচ ব্যবসার বাজার ছিল ১৫০ কোটি ডলারের। ২০১৭-তে তা ৩৯০ কোটি ডলারে ও ২০২০-তে প্রায় ৫৩০ কোটি ডলারে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বাজার ধরতে আগাম প্রস্তুতির বিষয়টি স্পষ্ট মেহরার কথাতেও। তাঁর দাবি, ২০১০-এর ফুটবল বিশ্বকাপের সূত্রেই তাঁরা যখন এইচডি পরিষেবা চালু করেছিলেন তখনও একই প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই বাজার তৈরি হয়েছে। তাঁর যুক্তি, পরিষেবা আগে না বাজার আগে, এই জালে আটকে থাকলে চলবে না। কাউকে উদ্যোগী হতেই হবে। পরিষেবা চালু হলে বাজারও তার হাত ধরেই তৈরি হবে। কারণ এ দেশে উন্নত মানের টিভি পরিষেবার চাহিদা বাড়ছে। মেহরা জানিয়েছেন, আগামী বছরের গোড়ার দিকেই ওই পরিষেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। আল্ট্রা এইচডি পরিষেবার উপযুক্ত সেট টপ বক্স বাজারে আনার কাজও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। এ জন্য একটি ফরাসি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে সংস্থাটি।

তবে শুধু টিভি বা সেট টপ বক্স থাকলেই ওই ছবি দেখা যাবে না। ছবি তোলার মানও সেই প্রযুক্তির উপযোগী হওয়া জরুরি। অর্থাৎ, আল্ট্রা এইচডি পরিষেবায় একই ছবি প্রদর্শন বা সম্প্রচার করতে হলে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে হবে। তারই মহড়া দিতে সাম্প্রতিক ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের জার্মানি-ফ্রান্সের খেলাটি বেছে নিয়েছিল টাটা স্কাই ও সোনি সিক্স। ওই দিন মুম্বইয়ের নামী হোটেলে শুধুমাত্র নির্বাচিত সংবাদ মাধ্যমের সামনে একই সঙ্গে তিন প্রযুক্তি এসডি, এইচডি ও আল্ট্রা এইচডি পরিষেবায় খেলাটি দেখানো হয়। আল্ট্রা এইচডি পরিষেবা সম্প্রচারের জন্য সোনি সিক্স চ্যানেলটি খেলার ছবি আলাদা ভাবে ক্যামেরাবন্দি করেছিল। টাটা স্কাই-এর দাবি, ছবির গুণগত মানের পাশাপাশি আরও একটি ফারাক থাকবে আল্ট্রা এইচডি পরিষেবায়। খেলার প্রতিটি মুহূর্তের ছবি এসডি এবং এইচডি পরিষেবা দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে যে-সময় লাগে, আল্ট্রাএইচডি-তে তার চেয়ে অনেক কম সময় লাগে। অর্থাৎ ঘটনা ঘটার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তা দেখার সুযোগ পাবেন দর্শক।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE