ছবি রয়টার্স।
প্রায় পুরনো চেহারায় শহর। পূর্ব বার্লিনের রাস্তায় কোনও ‘মুখোশধারীর’ দেখা নেই। জার্মান সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ঘরে বা বাইরে, কোথাওই আর মাস্ক পরার দরকার নেই। ব্রিটেনেও কড়াকড়ি অনেক কম। রাস্তাঘাটে প্রয়োজন অনুযায়ী মাস্ক পরছে লোকে, বাধ্যতামূলক নয়। ফ্রান্সে আউটডোর ডাইনিংয়ে আর বাধা নেই। রাতের কার্ফু তুলে দেওয়া হয়েছে। গ্রিস ও স্পেনে বিদেশি পর্যটকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। এখানেই আপত্তি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র। তাদের ইউরোপ শাখার প্রধান হান্স ক্লুগ বললেন, ‘‘ইউরোপের বোঝা উচিত, বিপদ এখনও কাটেনি।’’
ইউরোপের প্রায় সব দেশেই করোনা-সংক্রমণ একেবারে কমে গিয়েছে। টিকাকরণও চলছে জোর গতিতে। ধনী দেশগুলোতে জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের কাছাকাছি টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। সেই জোরেই করোনাবিধি লঘু করে দেওয়া হয়েছে। লোকজন মাস্ক ছাড়াই রাস্তাঘাটে বেরোচ্ছেন। এক জায়গায় জড়ো হচ্ছেন। অনুষ্ঠান হচ্ছে। হান্স বলেন, ‘‘সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু— এ সব কমেছে ঠিকই, কিন্তু যে ভাবে জমায়েত বাড়ছে, লোকজন এক দেশ থেকে অন্য দেশ, এক শহর থেকে অন্য শহরে যাচ্ছেন, যে ভাবে উৎসব হচ্ছে, স্পোর্টস টুর্নামেন্ট হচ্ছে, তাতে বিপদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।’’
যেমন, প্যারিসে এখন ফরাসি ওপেন চলছে। এর পর শনিবার থেকে ইউরোপিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবে। তাতে মহাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খেলা দেখতে আসবেন দর্শক। বিভিন্ন দেশের দলও আসবে। সামনের মাসে ব্রিটেনে উইম্বলডন শুরু হবে। হান্সের কথায়, ‘‘গত ছ’মাসে ৪০ কোটির বেশি ডোজ় টিকাকরণ হয়েছে এই মহাদেশে। কিন্তু গরমে আরও গতি বাড়িয়ে টিকাকরণ সারতে হবে।’’ তাঁর মতে, অন্তত ৮০ শতাংশ বাসিন্দার টিকা নেওয়া হয়ে গেলে নিশ্চিন্ত। তার আগে অবধি মোটেও সুরক্ষিত নন কেউ। ধনী দেশগুলোর টিকাকরণ এগিয়ে গেলেও তুলনায় পিছিয়ে পড়া রাষ্ট্রের পরিস্থিতি যোগ করে ইউরোপের গড় টিকাকরণ সম্পূর্ণ হওয়ার হার ১৭ শতাংশের কাছাকাছি। একটি ডোজ় পেয়েছেন ৩০ শতাংশ।
‘মুখোশ’ খুলতে পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। সরকার থেকে জানানো হয়েছে, যাঁদের দু’টো ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁদের মাস্ক না-পরলেও চলবে। যার জেরে মেমোরিয়াল ডে-তে মাস্কহীন লোকের ঢল নেমেছিল রাস্তায়। কিন্তু এর মধ্যে অনেকে ছিলেন, যাঁদের একটি ডোজ়ও নেওয়া হয়নি। আমেরিকান সার্জন জেনারেল বিবেক মূর্তি-র অনুরোধ, যাঁরা এখনও ভ্যাকসিন নেননি, দয়া করে মাস্ক খুলবেন না। তিনি বলেন ‘‘যাঁরা এখনও টিকা পাননি, তাঁদের কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা আগের থেকে বেশি। প্রতিষেধকহীনদের শরীরে আরও বেশি করে জাঁকিয়ে বসবে ভাইরাস। মিউটেশন ঘটিয়ে নতুন ভ্যারিয়্যান্ট তৈরি করবে।’’ আমেরিকার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচি-ও বলেন, ‘‘আলফা স্ট্রেন (ব্রিটেন বা কেন্ট স্ট্রেন) থেকে বেঁচে ফেরার পরে এখন ব্রিটেনে ডেল্টা স্ট্রেনে যে ভাবে সংক্রমণ ঘটছে, তা আমরা এ দেশে চাই না।’’ বিশেষজ্ঞদের মতে, সাবধান না হলে, আরও নতুন স্ট্রেন তৈরি হবে। এ অবস্থায় পথ— দ্রুত টিকাকরণ ও নিয়ম মেনে চলা। দেশের টিকাকরণের গতি নিয়ে অবশ্য সন্তুষ্ট ফাউচি। তবে এখনই ‘জিতে গিয়েছেন’ বলতে চান না তিনি। কারণ দেশবাসীর একটা বড় অংশ এখনও প্রতিষেধক পায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy