এই মুহূর্তে বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দর কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন। কিন্তু সেখানে সমস্যায় পড়ছে বহু বিমানই। কারণ, যাত্রী বা পণ্য নিয়ে নামার পরে বিমান যেখানে দাঁড়ায়, ওই বিমানবন্দরে সেই ‘পার্কিং বে’ যে মাত্র ন’টি!
ভূকম্পজনিত বিপর্যয়ের পরে বিভিন্ন দেশ থেকে পরপর বিমান আসছে কাঠমান্ডুতে। অধিকাংশই আসছে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে। আর সেই সব বিমানেই আসছে উদ্ধারকারী দল। কিন্তু পর্যাপ্ত পার্কিং বে-র অভাবে ত্রিভুবন বিমানবন্দরের মাথায় পৌঁছেও নামতে পারছে না অনেক বিমান। চলে যাচ্ছে অন্যত্র। যারা নামছে, তাদের গড়ে দু’ঘণ্টা চক্কর কাটতে হচ্ছে। কখন পার্কিং বে খালি হবে, থাকতে হচ্ছে তার অপেক্ষায়।
সোমবার বেলা ১১টায় ১২২ জন যাত্রী এবং সাড়ে তিন টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে কলকাতা থেকে ত্রিভুবন উড়ে যাওয়ার কথা ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এয়ারবাস-৩১৯ বিমানের। কিন্তু কাঠমান্ডু থেকে জানানো হয়, ‘অপেক্ষা করো। এখন এলে পার্কিং বে খালি পাবে না।’ বিপর্যয় মোকাবিলায় ত্রাণসামগ্রী ও প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে ১১৮ জনের একটি দল ছিল ওই বিমানে। বেলা দেড়টায় বার্তা আসে ত্রিভুবন থেকে, ‘এ বার এসো।’ সবুজ সঙ্কেত পেয়ে উড়ে যায় বিমান। কিন্তু আড়াইটে নাগাদ কাঠমান্ডুর আকাশে পৌঁছনোর পরে জানা যায়, পার্কিং বে খালি নেই। শুরু হয় চক্কর। এয়ার ইন্ডিয়ার এক অফিসারের কথায়, ‘‘আমরা আগে থেকে আন্দাজ করেছিলাম বলে পর্যাপ্ত জ্বালানি নিয়ে গিয়েছিলাম।’’ কিন্তু টানা আড়াই ঘণ্টা চক্কর কাটার পরেও কাঠমান্ডুতে নামার অনুমতি মেলেনি। আন্তর্জাতিক নিয়ম, বিমানবন্দরের পার্কিং বে খালি না-থাকলে বিমান নামতে পারবে না।
জ্বালানি ফুরিয়ে আসায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি বিকেল ৫টা নাগাদ প্রায় আধ ঘণ্টা দূরে পটনায় গিয়ে নামে। সেখানে জ্বালানি ভরে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করা হয়। কিন্তু কাঠমান্ডু বিমানবন্দর থেকে কোনও অনুকূল বার্তা না-পেয়ে সেটি সন্ধ্যায় ফিরে আসে কলকাতায়। ওই বিমানের বিপর্যয় মোকাবিলা দলের এক সদস্য রাতে জানান, মঙ্গলবার সকালে তাঁরা আবার কাঠমান্ডু উড়ে যাবেন। আবার নামার চেষ্টা চালানো হবে।
সোমবার বেলা ১টা ৫০ মিনিটে কলকাতা-কাঠমান্ডু রুটে এয়ার ইন্ডিয়ার দ্বিতীয় উড়ানটি ছাড়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটি ছাড়ে বেলা সাড়ে ৩টের পরে। ওই উড়ান সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রাণসামগ্রী এবং ৫১ জন যাত্রী নিয়ে দ্বিতীয় বিমানটি সাড়ে ৪টে নাগাদ কাঠমান্ডুর আকাশে পৌঁছনোর পরে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা চক্কর কাটে। শেষে রাত সওয়া ৮টা নাগাদ সেটি ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার সুযোগ পায়। রাতে সেটি যাত্রী নিয়ে ফিরে এসেছে কলকাতায়।
স্পাইসজেট এ দিন দিল্লি থেকে কাঠমান্ডুতে মোট তিনটি উড়ান চালিয়েছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার ভোর সাড়ে ৪টেয় দিল্লি থেকে তাদের প্রথম বিমান কাঠমান্ডু উড়ে যায়। তিনটি বিমানে গড়ে তিন টন করে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। স্পাইসটেজের রাতের উড়ানে ইউরোপ থেকে আসা ৫৫ জন উদ্ধারকারী কাঠমান্ডু পৌঁছেছেন।
ত্রিভুবন বিমানবন্দরে কয়েকশো ভারতীয় আটকে আছেন। ভারত থেকে কোনও বিমান পৌঁছলেই তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়ছেন ফেরার জন্য। কিন্তু এক-একটি বিমানে গড়ে মাত্র ১২০ জন যাত্রী ফিরতে পারছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy