বুধবার খামেনেই। ছবি: এএফপি।
ক্ষোভের আগুন জ্বলবে, প্রত্যাশিত ছিল। ২০১৫ সালের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে আমেরিকা বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করায় ক্ষোভের মাত্রা এতটাই যে, বুধবার পার্লামেন্টেও তার আঁচ টের পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে ছিল স্লোগান, ‘আমেরিকা নিপাত যাক।’
ইরানের কট্টর এমপি-রা ছাড়া সেখানে ছিলেন শিয়া ধর্মগুরুও। পার্লামেন্টে জ্বলন্ত পতাকা তুলে ধরে স্লোগান দেন তাঁরা। চুক্তির নকল এক টুকরো কাগজ পুড়িয়ে তার ছাই মাড়িয়েও বিক্ষোভ দেখান। বুধবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই-ও। বলেছেন, ‘‘আমেরিকা সরে যাওয়া সত্ত্বেও ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক অটুট থাকবে— বাকি দেশগুলো যদি এই নিশ্চয়তা না দেয়, তা হলে ২০১৫ সালের ওই চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে যাবে তেহরানও।’’ আমেরিকা ছাড়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে যে পাঁচ শক্তিধর দেশ রয়েছে— অর্থাৎ ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিনের প্রতি খামেনেইয়ের বার্তা, ‘‘শুনলাম, ইউরোপের তিন দেশ বলেছে এই চুক্তি আগের মতোই কার্যকর থাকবে। এই তিন দেশের উপরে (ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি) আমার ভরসা নেই। ভরসা না পেলে আমরাও বেরিয়ে যাব।’’
মঙ্গলবার রাতেই ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি জানান, চিন, ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন এবং রাশিয়ার কাছে ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফকে পাঠাবেন। ইরানের আশা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্ভাব্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে ইউরোপীয় সংস্থাগুলিকে রক্ষা করতে আইন পাশ করবে। ইইউ অফিসাররাও ইঙ্গিত দিয়েছেন, চুক্তি বাঁচাতে যতটা করা যায়, করবেন।
আমেরিকা বেরিয়ে গেলেও ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চিন এবং রাশিয়া প্রাথমিক ভাবে এই পদক্ষেপের বিরোধিতাই করেছে। কিন্তু বিদেশি নেতাদের বিশ্বাস করতেই চান না খামেনেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওদের কথার কোনও দাম নেই। আজ এক রকম বলে, কাল আর এক।’’ ইউরোপ জুড়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি উঠলেও সৌদি আরব এবং ইজ়রায়েল একে স্বাগত জানিয়েছে।
বারাক ওবামার আমলে এই নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি হয়েছিল। ওবামা আজ বলেছেন, এই পদক্ষেপ ‘বড় ভুল’। আমেরিকার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার হয়তো সেই দিনটা আসবে, যখন আমাদের সামনে দু’টো পথ খোলা থাকবে। ভয়েবেঁচে থাকা অথবা ভয় রুখতে যুদ্ধে যাওয়া!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy