খাজা মহম্মদ আসিফ। পাক বিদেশমন্ত্রী।
পঞ্জাব প্রদেশের সিয়ালকোটে দলীয় কর্মীদের সভায় ভাষণ দেওয়ার সময় পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফের মুখে কালি ছিটিয়ে দিলেন এক ব্যক্তি।
সভা মঞ্চের খুব কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন লম্বা দাড়িওয়ালা মধ্যবয়স্ক ওই ব্যক্তি। আসিফ মঞ্চে ভাষণ দেওয়া শুরু করতেই তাঁকে লক্ষ্য কালি ছুড়ে মারেন তিনি। দলীয় কর্মীরা ওই ব্যক্তিকে সঙ্গে ধরে ফেলেন। মারধর করার পর অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা।
এমন অতর্কিত এবং অনভিপ্রেত ঘটনায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান পাক বিদেশমন্ত্রী। এই ঘটনার পরই নিরপত্তারক্ষীরা তাঁকে সভা থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। যদিও কিছু ক্ষণ পরে আবার ফিরে এসে ভাষণ শেষ করেন আসিফ।
আরও পড়ুন: তিন পণবন্দি হত, আত্মঘাতী হামলাকারীও
বিরোধীরাই ওই ব্যক্তিকে টাকা দিয়ে এমন কাণ্ড করিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, “ওই লোকটাকে আমি চিনি না। মনে হচ্ছে, বিরোধীরা কিছু টাকাপয়সা দিয়ে লোকটাকে কালি ছেটাতে বলেছে। তবে লোকটাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। পুলিশকে বলব ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিতে।”
অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে পেরেছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম ফৈজ রসুল। সে কোনও রাজনৈতিক দলের নয়।
আরও পড়ুন: পাগড়ি পরায় ব্রিটেনে বার থেকে তাড়ানো হল শিখ ছাত্রকে
১৯৭৪ সালে পাকিস্তানে দ্বিতীয় সংবিধান সংশোধন হয়। এর ফলে পাকিস্তানে তাঁরাই মুসলিম হিসেবে স্বীকৃত, যাঁরা হজরত মুহম্মদকেই শেষ নবি বলে স্বীকার করেন এবং নবি মহম্মদের কথাই শেষ কথা বলে মানেন। এই আইনের ফলে মুসলিম সমাজের আহমাদি ধারাটিকে আর মুসলিম বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না সে দেশে। উনবিংশ শতকের শেষ দিকে এই সমাজ বা ধর্মীয় আন্দোলনের ধারাটির জন্ম। এঁরা মনে করেন মহম্মদের পরেও নতুন নবির জন্ম হতে পারে, যদিও তাঁরা কেউই মহম্মদকে ছাপিয়ে যাবেন না।
পাক নির্বাচনী বিধি অনুযায়ীও, যে কোনও মুসলিম প্রার্থীকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় মহম্মদকে শেষ নবি মেনে সই করতেই হয়। অমুসলিম প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অবশ্য প্রযোজ্য নয়। সম্প্রতি পাক নির্বাচন বিধি সংশোধন প্রক্রিয়ার মধ্যেই অভিযোগ ওঠে, নওয়াজ শরিফ ও তাঁর ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ‘শেষ নবি’ সংক্রান্ত বিধিটি বদলাতে চাইছে। এই অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তানের বেশ কিছু ধর্মীয় দল। যার মধ্যে রয়েছে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান। পিএমএল-এন অবশ্য এই পরিবর্তনের অভিযোগ সম্পূর্ণ নস্যাত্ করছে।
পুলিশের দাবি, জেরায় রসুল তাদের জানিয়েছে, পিএমএল-এর এই প্রচেষ্টা শুধু তাঁর নয়, লক্ষ লক্ষ পাকিস্তানির ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছে। এই প্রতিবাদেই বিদেশমন্ত্রীর মুখে কালি ছিটিয়েছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, যে হেতু বিদেশমন্ত্রী রসুলের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করতে চাননি, তাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy