ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধনকুবের সঞ্জয় শাহ। — ফাইল চিত্র।
ইউরোপের ইতিহাসে বৃহত্তম কর ফাঁকির মামলায় নাম জড়াল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধনকুবের সঞ্জয় শাহের নাম। আর্থিক লেনদেন বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘দিস ইজ মানি’ জানাচ্ছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কয়েক হাজার অভিযুক্তের নাম উঠেছে ব্যাঙ্কের কর ফাঁকি সংক্রান্ত এই মামলায়। ‘কাম এক্স’ নামে পরিচিত এই জালিয়াতিকাণ্ডে শুধুমাত্র লন্ডনেই অভিযুক্তের সংখ্যা প্রায় দু’হাজার!
ব্রিটিশ নাগরিক সঞ্জয় এবং তাঁর সহযোগীরা ব্যবসার লভ্যাংশ লুকিয়ে কর ফেরত নিয়ে জালিয়াতি করে ব্রিটেন, বেলজিয়াম, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ডেনমার্কের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে কয়েক কোটি পাউন্ড হাতিয়ে নিয়েছেন বলে বছর দু’য়েক আগেই অভিযোগ উঠেছিল। এর পরে অভিযুক্ত ওই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী সাজা এড়াতে দুবাইতে আশ্রয় নেন বলে অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যাঙ্ক কর ফাঁকির মোট অঙ্ক প্রকাশিত হয়নি। তবে শুধু জার্মানিতেই কর ফাঁকির অঙ্ক আনুমানিক হাজার কোটি পাউন্ড (প্রায় ১০ লক্ষ ২ হাজার কোটি টাকা) বলে একটি রিপোর্টে অভিযোগ তুলে হয়েছে।
সঞ্জয়ের জন্ম ১৯৭০ সালে লন্ডনে। লন্ডনের কিংস কলেজে তিনি মেডিক্যাল কোর্সে ভর্তি হন। কিন্তু মাঝপথে তিনি সে পাঠ ছেড়ে দেন। পরে তিনি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হয়েছিলেন। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সফল ব্যাঙ্কার হিসেবে কাজ করার পরে ২০০৮ সালে আর্থিক মন্দা পরিস্থিতিতে তিনি কর্মহীন হয়ে পড়েন। তার পরেই গুজরাতি বংশোদ্ভূত সঞ্জয় নিজের বিনিয়োগ সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন। আর বিশ্বজুড়ে ব্যবসা প্রসারিত করার পাশপাশি তিনি জড়িয়ে পড়তে থাকেন বিতর্কের জালে।
ইউরোপের পাশাপাশি এশিয়া এবং আমেরিকা মহাদেশেও সঞ্জয়ের বাহিনী কর জালিয়াতি করেছে বলে অভিযোগ। এই দুর্নীতিতে ব্রিটেনের বার্কলেস, ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা মেরিল লিঞ্চ এবং মরগান স্ট্যানলি, ফ্রান্সের বিএনপি এবং জাপানের নোমুরা ব্যাঙ্কের নাম উঠে এসেছে। একাধিক ক্ষেত্রেই অভিযোগ, ‘কাম এক্স’ কেলেঙ্কারির মূলে রয়েছে সঞ্জয়ের সংস্থা ‘সোলো ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলপি’।
আমেরিকার সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টের দাবি, এই কর ফাঁকি কেলেঙ্কারি মূলত একটি ‘ডবল-টিপিং’ কৌশল ছিল। যার সাহায্যে বেআইনি ভাবে ট্যাক্স কোডের ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে দুর্নীতিচক্রের একাধিক ব্যক্তি একটি শেয়ারের মালিকানা দেখিয়েই লভ্যাংশ কর ফেরতের আবেদন জানিয়েছেন এবং ফেরত পেয়েছেন। যদিও সঞ্জয় এর আগে দুবাইয়ে বসে সব অভিযোগ খারিজ করেন। তাঁর দাবি, তাঁর সংস্থা শুধুমাত্র বিনিয়োগকারীদের দ্রুত শেয়ার বিক্রি করতে সাহায্য করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy