বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে খুনের হুমকি দিয়েছেন। এমনটাই অভিযোগ করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরে প্রথমার্ধের অধিবেশন শেষ হওয়ার পরেই লবিতে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। সেই ঘটনার পর বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন ‘‘আমি বিধানসভায় আক্রান্ত হয়েছি। কোনও বিজেপি বিধায়ক আক্রান্ত হলে, তার দায় স্পিকারের। তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের হাতে আমি আক্রান্ত হয়েছি।’’
এই ঘটনার পরেই বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক শঙ্কর ঘোষ স্পিকারকে চিঠি লিখে ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার দাবি জানান। এর পরেই তৃণমূল বিধায়ক তপনও স্পিকারের কাছে যান। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, স্পিকারের কাছে তিনিও একটি প্রতিবাদপত্র জমা দেন। সেই চিঠিতে পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক লেখেন, ‘‘আমি ভদ্রভাবে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আপনি লোকসভা নির্বাচনে সময় আমার বাড়ির দিকে মাইক লাগিয়ে যৎপরনাস্তি অপমানসূচক কথা বলেছিলেন। আমার নাকি কলকাতায় অসদুপায়ে দুটি ফ্ল্যাট আছে, এবং আমার মেয়ে তৃতীয় ডিভিশনে পাশ করে চাকরি করছে। আমি ও আমার মেয়ে ভীষণ ভাবে মর্মাহত। এই কথাগুলো বলতেই করতেই বলছে বেশ করেছি, তোকে এর পরে কথা বললে প্রাণে মেরে দেব।’’
আরও পড়ুন:
নিট নিয়ে নিন্দাপ্রস্তাবের আলোচনায় বিজেপি শঙ্কর বিষয়টি নিয়ে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্পিকার তাঁকে জানিয়ে দেন, পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়কও তাঁর কাছে অভিযোগ করেছেন। বিজেপি বিধায়কদের দাবি, ২০২১ সালের মে মাসে স্পিকার কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষীদের বিধানসভার অন্দরে প্রবেশ না করার নির্দেশিকা জারি করেছিলেন। সেই কারণেই এখন তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যদিও স্পিকারকে লেখা চিঠি প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল বিধায়ক তপন।
বুধবারের অধিবেশন শেষ হলে স্পিকারের সঙ্গে শুভেন্দুর শারীরিক হেনস্থার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে যান বিজেপি বিধায়কেরা। তপনের খুনের অভিযোগ প্রসঙ্গে দক্ষিণ কাঁথির বিজেপি বিধায়ক অরূপ দাস বলেন, ‘‘সারা দুনিয়া দেখেছে তপন চট্টোপাধ্যায় বিরোধী দলনেতার সঙ্গে কী করেছেন। এখন মুখ বাঁচাতে তৃণমূল নেতারা যেমন মিথ্যে কথা বলেন, তেমনই মিথ্যে বলে বাঁচতে চাইছেন তিনি। তপনবাবু এমন কোনও বড় বা গুরুত্বপূর্ণ নেতা নন, যাঁকে শুভেন্দুবাবুকে হুমকি দিতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপি বিধায়কেরা শুভেন্দুবাবুর উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে স্পিকারের কাছে আবেদন করেছেন। তিনি আমাদের আশ্বাসও দিয়েছেন। তবে খুনে অভিযোগ করলেই তপনবাবুর অপরাধ কমে যাবে না।’’