(বাঁ দিকে) অখিল গিরি। রতন দাস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বন দফতরের মহিলা রেঞ্জ অফিসার মনীষা সাউয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে মন্ত্রিত্ব গিয়েছে রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির। সেই পথে চলেই কি এ বার হাবড়া-২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রতন দাসের বিরুদ্ধেও একই পদক্ষেপ করতে চলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব? এমন প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের অন্দরে। ঘটনায় প্রকাশ, হাবড়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (বিডিয়ো)-কে চূড়ান্ত হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রতনের বিরুদ্ধে। বিডিয়োকে জলের বোতল ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। হাবড়ার বিডিও সীতাংশুশেখর শিটের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের বেশ কিছু দিন ধরে কিছু বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলছে। সম্প্রতি ব্লকের একটি কাজের জন্য টেন্ডার সংক্রান্ত বৈঠক হয়। সেখানেই ঘটে তুলকালাম কাণ্ড। প্রথমে বিডিয়োর সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রতনের কথা কাটাকাটি হয়। তার পরই টেন্ডারকক্ষেই বিডিয়োকে বোতল ছুড়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। যদিও রতনের দাবি, বিডিও তাঁকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু বিডিওর উদ্দেশে বোতল ছুড়ে মারেননি তিনি। গোটা ঘটনা নিয়ে বিডিও অবশ্য সে সময়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে বিডিও দফতর সূত্রে খবর, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন। ঘটনার পরেই জেলাশাসকের কাছে এ সংক্রান্ত অভিযোগও জমা পড়ে।
কারামন্ত্রী অখিলের পদত্যাগের পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে যদি মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়, তা হলে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ নেবে শাসকদল? হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বর্তমানে জেলবন্দি রয়েছেন। তাই ওই এলাকার সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘সোমবার পর্যন্ত আমি বিধানসভার অধিবেশন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। বিধানসভার অধিবেশন শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি বিষয়টি নিয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসব। সেই বৈঠকে দলগত ভাবে যে সিদ্ধান্ত হবে, তা ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ শাসকদলের একাংশ মনে করছে, অখিলকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার চেষ্টা করেছেন, তাতে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রতনের বিরুদ্ধেও কঠিন শাস্তির খাঁড়া নেমে আসতেই পারে। কারণ, বিডিওকে জলের বোতল ছুড়ে মারার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই, পুরনো একটি ঘটনার কথা উঠে আসছে সংবাদমাধ্যমে। কয়েক বছর আগে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম এক শিক্ষিকাকে জলের জগ ছুড়ে মেরেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনাতেও নিন্দা হয়েছিল সর্বত্র। এ বার বিডিয়োকে জলের বোতল ছুড়ে মারার ঘটনায় আরাবুলের কীর্তির পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলেই সমালোচিত হচ্ছে শাসকদল। তাই দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় রতনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেই মনে করছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তবে হাবড়ার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘বিষয়টি একতরফা ভাবে দেখলে হবে না। ওই বিডিয়োর বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ রয়েছে, তাই সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy